স্প্যানিশ ডিফেন্ডার জেসুস নাভাস
স্প্যানিশ ডিফেন্ডার জেসুস নাভাস

ইউরো

এমবাপ্পেকে থামানোর চ্যালেঞ্জ কি নিতে পারবেন নাভাস

স্পেনের ডান প্রান্তে দুই খেলোয়াড়ের বয়সের ব্যবধান যেন ক্রমেই বাড়ছে। ১৬ বছর বয়সী লামিনে ইয়ামাল এত দিন এই প্রান্তে জুটি বেঁধেছিলেন তাঁর দ্বিগুণ বয়সী দানি কারভাহালের সঙ্গে। কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত অসম বয়সের এই জুটিই স্পেনকে ম্যাচ জিততে দারুণ সহায়তা করেছে। তবে শেষ আটে লাল কার্ড দেখে মাঠছাড়া কারভাহালকে দেখা যাবে না ফ্রান্সের বিপক্ষে সেমিফাইনালে। লাল কার্ড দেখার আগেই অবশ্য দুই ম্যাচে হলুদ কার্ডের খড়্গে পড়ায় নিষেধাজ্ঞা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল কারভাহালের।

রিয়াল মাদ্রিদে ছয়বার চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা কারভাহাল না থাকায় সেমিফাইনালে তাঁর জায়গায় জেসুস নাভাসকে সুযোগ দিতে যাচ্ছে স্পেন। ডান প্রান্তে এবার ইয়ামালের সঙ্গে জুটি বাঁধবেন নাভাস। ইয়ামালের জন্মের আগেই নাভাস জিতেছিলেন ইউরোপা লিগের দুটি শিরোপা। দুজনের বয়সের পার্থক্য ২২ বছরের। তবে মাঠে নামার সুযোগ পেলে বয়সের এই ব্যবধান ভুলে আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজে মনোযোগ দিতে হবে নাভাসকে। তাঁর কাঁধেই যে কিলিয়ান এমবাপ্পেকে থামানোর গুরুদায়িত্ব থাকবে।

বর্তমানে নিজের সিনিয়র ক্যারিয়ারে ২১তম মৌসুম পার করছেন নাভাস। তবে তিনি যেন সময়কেও ছাপিয়ে গেছেন। ৩৮ বছর বয়সী কদাচিৎ এমন খেলোয়াড় আছেন, যাঁরা এই বয়সে গতি ধরে রাখতে পারেন। কিন্তু নাভাস তা ভালোভাবেই পারেন। পাশাপাশি নিজের ফিটনেসও দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছেন। ফলে সময় বদলেছে কিন্তু বদলাননি নাভাস। এখনো একই গতিতে তিনি রাইট ব্যাক পজি‍শন ছেড়ে রাইট উইংয়ে উঠে আসতে পারেন অনায়াসে।

তাঁর এমন গতিময়তায় হয়তো আজ এমবাপ্পেকে থামাতে কাজে লাগতে পারে স্পেনের। তবে তাঁকে খেলানোর অন্য ক্ষতিও আছে। প্রতি-আক্রমণে প্রতিপক্ষের বক্সে তেমন কোনো হুমকিই তৈরি করতে পারেন না নাভাস। এমনকি এই দশকে ক্লাব এবং জাতীয় দলের হয়ে কোনো গোলও করতে পারেননি নাভাস। সর্বশেষ ২০১৯ সালে স্পেনের জার্সিতে দুই গোল করেছিলেন তিনি।

মাস্ক পরে খেলছেন এমবাপ্পে। কিন্তু এটার সঙ্গে ঠিক মানিয়ে নিতে পারছেন না

স্পেন অবশ্য আজ তাঁর কাছ থেকে গোলের চেয়ে এমবাপ্পেকে ঠিকঠাক থামানোর কাজটিতেই সফল হতে দেখতে চাইবে। সেমিতে তাঁকে খেলানো নিয়ে স্পেনের কোচ দে লা ফুয়েন্তে বলেছেন, ‘আমি এখনো জানি না জেসুস (নাভাস) খেলবে কি না। তবে সে পুরোপুরি প্রস্তুত। এমন না যে আমি আত্মবিশ্বাসী। ব্যাপারটা এই যে সে সেরা। যদি তাকে এমবাপ্পেকে সামলাতে হয়, সে থামানোর চেষ্টা করবে।’

জাতীয় দলে অবশ্য কখনোই নিয়মিত ছিলেন না নাভাস। বিভিন্ন সময় জাতীয় দল থেকে দূরেও ছিলেন স্পেনের হয়ে ইউরো ও বিশ্বকাপ জেতা এই ফুটবলার। এবার তাঁর সামনে সুযোগ দেশের হয়ে আরেকটি ইউরো জেতার। তবে সে জন্য সুযোগ পেলে গুরুদায়িত্বই পালন করতে হবে তাঁকে। থামাতে হবে এই মুহূর্তে বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়কেও। নিজের চেয়ে ১৩ বছরের ছোট এমবাপ্পে গতির ঝড় তুলেই

প্রতিপক্ষকে এলোমেলো করে দিতে পারেন। সেমিফাইনালে সেই গতিময় এমবাপ্পেকে থামানোই হবে নাভাসের আসল চ্যালেঞ্জ। এ ক্ষেত্রে নাভাসকে অবশ্য সাহায্য করতে পারে এমবাপ্পের ভাঙা নাক, মাস্ক পরে খেলার অস্বস্তি এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা, যা লড়াইটাকে সমান সমান করে তুলতে পারে। এখন শেষ পর্যন্ত নাভাস সুযোগ পেলে কাজটা ঠিকঠাক করতে পারেন কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষা।