সর্বশেষ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন বাংলাদেশ নারী দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। দলও জিতেছিল শিরোপা। কিন্তু এবার সেই শিরোপা ধরে রাখার মিশনে সাবিনাকে খুব একটা আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছে না। নেপালে যাওয়ার আগে আজ বাফুফে ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাবিনার কণ্ঠে ঝরল খানিকটা আক্ষেপও। সেই আক্ষেপ প্রস্তুতি ম্যাচ না খেলার।
গত জুনে দেশের মাটিতে চীনা তাইপের বিপক্ষে দুটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ নারী দল। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা দল হিসেবে চীনা তাইপের বিপক্ষে দুটি ম্যাচই ছিল বাংলাদেশের জন্য পরীক্ষার। সে ম্যাচে বাংলাদেশ নারী দল নিজেদের অবস্থানটা বেশ ভালোই বুঝতে পেরেছিল। হেরেছিল দুই ম্যাচেই। প্রথম ম্যাচে ৪-০ গোলে হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচের স্কোরলাইন ছিল ১-০।
শিরোপা ধরে রাখতে পারব কি না, তা বলতে পারব না। তবে অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে।সাবিনা খাতুন, বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক
সাফের আগে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে আরও ম্যাচ খেলার আশা ছিল মেয়েদের। কিন্তু সেই চাওয়া পূরণ হয়নি। শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বদলে গত জুলাইয়ে ভুটানের বিপক্ষে খেলতে হয় দুটি ম্যাচ।
কিন্তু সর্বশেষ তিন মাসে আর কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ বা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ সাবিনাদের জন্য আয়োজন করতে পারেনি বাফুফে। সাবিনার কথা, ‘সাফের প্রস্তুতির জন্য কিছু ম্যাচ দরকার ছিল। যদিও সারা বছর ট্রেনিংয়ে থাকা ও ম্যাচ টেম্পারমেন্ট এক বিষয় নয়। ম্যাচ খেলতে না পারার আক্ষেপ তো থাকছেই।’
এবারের সাফকে কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং মনে করছেন সাবিনা। গ্রুপ ‘এ’তে বাংলাদেশ খেলবে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে। শিরোপা ধরে রাখার মিশনটা বেশ কঠিনই হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন সাবিনা, ‘শিরোপা ধরে রাখতে পারব কি না, তা বলতে পারব না। তবে অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে।’
সাফের দল এবার নতুন ও পুরোনোদের মিশ্রণে গড়া। সর্বশেষ সাফে বাংলাদেশকে শিরোপা জিততে বড় ভূমিকা যাঁদের ছিল, তাঁদের মধ্যে নেই আঁখি খাতুন ও সিরাত জাহান স্বপ্না। সাবিনা তাঁদের এবার মিস করার কথা স্বীকার করলেও নতুনদের নিয়ে আশাবাদী, ‘এটা সত্যি আঁখি ও স্বপ্নাকে মিস করব। ওরা দুজন থাকলে ভারত ও নেপাল ভয় পায়। তবে যারা আছে, তাদের নিয়েই আমাদের লড়াই করতে হবে। আমাদের নতুনেরাও দারুণ। ওদের নিয়েও আমি আশাবাদী।’
ঠিক কী কারণে এবারের সাফ কঠিন আর চ্যালেঞ্জিং মনে হচ্ছে সাবিনার? গতবার ভারতকে গ্রুপ পর্বে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ফাইনালে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়েই শিরোপা জিতেছিল দল। সাবিনা মনে করেন, এবার ভারত আর নেপালই বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী।
এই দুই দলই গতবারের হার মাথায় রেখে এবারের প্রস্তুতি নিয়েছে বলে মনে করেন তিনি, ‘সাফ অঞ্চলে ভারত, বাংলাদেশ আর নেপালের মধ্যেই লড়াইটা হয়। তিনটিই প্রায় একই মানের দল। তবে মুখোমুখি লড়াইয়ে টেকনিক্যালি আর ট্যাকটিক্যালি যারা এগিয়ে থাকে, জেতে তারাই। গতবার ভারতকে গ্রুপ পর্বে ৩-০ গোলে হারিয়েছিলাম সেরা ম্যাচ খেলে। এবার সেটি মাথায় রাখবে ভারত। এবার তারা আরও বেশি প্রস্তুত অবস্থায় আসবে। তাই মনে হচ্ছে, এবার শিরোপা ধরে রাখার মিশনটা সবদিক দিয়েই কঠিন হবে।’