দামে বেশি, লাভেও শীর্ষে সিটি 

ফুটবল বেঞ্চমার্ক কী

ফুটবল বেঞ্চমার্ক আসলে ফুটবলের তথ্য, উপাত্ত নিয়ে গবেষণা ও বিশ্লেষণের কাজ করে। হাঙ্গেরির বুদাপেস্টভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি ইউরোপ ও বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ফুটবল ক্লাবের ব্যবসায়িক পারফরম্যান্স, ফুটবলারদের বাজারমূল্য এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্লাব ও ফুটবলারদের প্রভাব নিয়ে কাজ করে। ফুটবলের অর্থনীতি গভীরভাবে বোঝার ও বিশ্লেষণের জন্য তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করে।

কীভাবে কাজ করে

গত মঙ্গলবার প্রকাশিত ফুটবল বেঞ্চমার্কের বার্ষিক প্রতিবেদনে মূলত ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ আটটি ফুটবল লিগের চ্যাম্পিয়ন ক্লাবগুলোর অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি সর্বশেষ মৌসুমে (২০২১-২২) যে ৮টি লিগকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে, সেগুলো হলো ইংল্যান্ডের প্রিমিয়ার লিগ, স্পেনের লা লিগা, জার্মানির বুন্দেসলিগা, ইতালির সিরি ‘আ’, ফ্রান্সের লিগ আঁ, পর্তুগালের প্রিমেরা লিগা, নেদারল্যান্ডসের এরডিভিসি ও তুরস্কের সুপার লিগ। বিশ্লেষণের জন্য ক্লাবগুলোর ২০২১-২২ মৌসুমের অর্থনৈতিক হিসাব বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে

কী আছে প্রতিবেদনে 

দাম বেশি সিটির

২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে খেলোয়াড়দের বাজারদর হিসাব করলে দেখা যাচ্ছে, আট চ্যাম্পিয়ন ক্লাবের মধ্যে ম্যানচেস্টার সিটির স্কোয়াডের মূল্য সবচেয়ে বেশি। সিটির স্কোয়াডের বর্তমান বাজারমূল্য ১২৬ কোটি ৭০ লাখ ইউরো। শুধু ইউরোপের এই আট লিগের চ্যাম্পিয়নদের মধ্যেই নয়, পুরো ফুটবল–বিশ্বেই সিটি সবচেয়ে দামি দল। এরপর সবচেয়ে দামি পিএসজি, বাজারমূল্য ১০০ কোটি ৮০ লাখ ইউরো। তবে সব চ্যাম্পিয়ন দলই তাদের দেশের সবচেয়ে দামি দল নয়। রিয়াল মাদ্রিদ, পোর্তো ও ত্রাবজোনস্পোর যেমন ফুটবল বেঞ্চমার্কের হিসাবে তাদের নিজ নিজ দেশে দ্বিতীয় দামি দল।

প্রিমিয়ার লিগ–যুগে ম্যানচেস্টার সিটি প্রথম চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পায় ২০১১-১২ মৌসুমে। এক দশক পর সেই সিটির ট্রফি কেসেই ছয়টি প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা, যার চারটিই সর্বশেষ পাঁচ মৌসুমে। এর বড় কৃতিত্ব অবশ্যই পেপ গার্দিওলার। বিশ্বের অন্যতম সেরা কোচের অধীনে এই সময়ে লিগ ছাড়াও এসেছে এফএ কাপ, লিগ কাপ ও কমিউনিটি শিল্ড মিলিয়ে আরও সাতটি শিরোপা। মাঝারি মানের ক্লাব থেকে সিটির উত্তরণ হয়েছে ইউরোপের অভিজাত ক্লাবের তালিকায়। নাম-যশের পাশাপাশি আর্থিক অবস্থানেও এই সাফল্যের প্রভাব পড়েছে। ফুটবল অর্থনীতি নিয়ে গবেষণাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ফুটবল বেঞ্চমার্কের বার্ষিক প্রতিবেদনেও যা স্পষ্ট। নতুন বছরে প্রকাশিত প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ আটটি ফুটবল লিগের চ্যাম্পিয়নদের মধ্যে ম্যানচেস্টার সিটির স্কোয়াডের বাজারমূল্যই সবচেয়ে বেশি। সর্বশেষ বছরে আয়ের হিসাবেও সিটিই সবচেয়ে এগিয়ে।

লাভে শীর্ষে সিটি, লোকসানে পিএসজি

টানা দ্বিতীয় বছরের মতো ক্লাবের পরিচালন আয়েও শীর্ষে ম্যানচেস্টার সিটি। এই শীর্ষ স্থান শুধু আটটি লিগের চ্যাম্পিয়নদের মধ্যেই নয়, সারা বিশ্বের ফুটবল ক্লাবগুলোর মধ্যে। দ্বিতীয় স্থানে রিয়াল মাদ্রিদ। আটটি ক্লাবের মধ্যে শুধু পোর্তো ছাড়া বাকি সব ক্লাবেরই আগের বছরের তুলনায় পরিচালনাগত আয় বেড়েছে। তবে আয়কর ও অন্যান্য ব্যয়ের পর এই আট ক্লাবের মধ্যে মুনাফা করতে পেরেছে মাত্র চারটি ক্লাব। সেখানেও শীর্ষে ম্যানচেস্টার সিটি। গত মৌসুমে যারা লাভ করেছে ৪ কোটি ৯০ লাখ ইউরো। পিএসজির গত মৌসুমে পরিচালনাগত আয় ছিল ৬৭ কোটি ইউরো। কিন্তু আয়কর, খেলোয়াড়দের বেতন ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে তাদের ব্যয় এত বেশি যে গত মৌসুমে পিএসজি লোকসান গুনেছে ৩৬ কোটি ৯০ লাখ ইউরো। খরচের একটা বড় অংশই গেছে মেসি-নেইমার-এমবাপ্পেদের বেতনের পেছনে।