বাংলাদেশের গোলরক্ষক রুপনা চাকমা ও ভারতের গোলরক্ষক অদিতি চৌহান
বাংলাদেশের গোলরক্ষক রুপনা চাকমা ও ভারতের গোলরক্ষক অদিতি চৌহান

ভারতের আছেন অদিতি, বাংলাদেশের রুপনা

দুজনের মধ্যে মিল আছে বেশ। গোলরক্ষক হিসেবে উচ্চতা তুলনামূলক কম দুজনের, মাত্র ৫ ফুট! তবে এই উচ্চতা দিয়ে দুজনই দুর্দান্তভাবে সামলে যাচ্ছেন নিজেদের গোলপোস্ট। বাংলাদেশের গোলরক্ষক রুপনা চাকমা ২০১৬ সাল থেকে খেলছেন জাতীয় দলে। আর ভারতের গোলরক্ষক অদিতি চৌহান খেলছেন ২০১১ সাল থেকে।

এবারের মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে দুজনেরই অবস্থা প্রায় একই রকম। বেশির ভাগ সময় দেখা গেছে ডি–বক্সের ওপরে উঠে দাঁড়িয়ে থাকেন দুজনই। কালেভদ্রে সতীর্থ ডিফেন্ডারদের কাছ থেকে ব্যাক পাস পেলে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আবার দেখেশুনে পাস দেন। গোল খাওয়া তো দূরে থাক, এই দুই ম্যাচে সেভাবে কোনো পরীক্ষার মুখেই পড়তে হয়নি কাউকেই।

ভারতের গোলরক্ষক অদিতি চৌহান

তবে আজ গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতের। বাংলাদেশের গোলরক্ষককে সামলাতে হবে টুর্নামেন্টের অন্যতম শক্তিশালী দলের আক্রমণভাগ। যদিও অনুশীলন শেষে রুপনার চেহারায় দেখা গেল না কোনো দুশ্চিন্তার ছাপ।

১৬ বছর বয়স থেকেই জাতীয় দলের পোস্টের নিচে অন্যতম ভরসার নাম রুপনা। রাঙামাটি থেকে উঠে আসা এই ফুটবলারের পথচলাটা মোটেও সহজ ছিল না। বাবার মুখটা কখনো দেখা হয়নি রুপনার। জন্মের আগেই মারা যান বাবা গাজা মনি চাকমা। তবে মায়ের অনুপ্রেরণায় ফুটবলে এসেছেন। ফুটবল দিয়েই বদলে ফেলেছেন নিজের ভাগ্যটাকে। ফুটবলের সুবাদে অসচ্ছল পরিবারে এসেছে আলো।

অনুশীলনে বাংলাদেশের গোলরক্ষক রুপনা চাকমা


সেই তুলনায় যেন বিপরীত মেরুতে দাঁড়িয়ে অদিতি। ভারতের মেয়েদের ফুটবল ইতিহাসে মাইলফলক গড়েছেন দিল্লির সচ্ছল পরিবারের মেয়ে। প্রথম মহিলা ফুটবলার হিসেবে খেলেছেন ইংল্যান্ডের পেশাদার লিগে। ইংল্যান্ডের মেয়েদের লিগের তৃতীয় স্তরের দল ওয়েস্ট হাম লেডিস ক্লাবে যোগ দেন ২০১৫ সালে। তিন মৌসুম খেলার পর ভারতে ফিরে আসেন আবারও। বর্তমানে খেলছেন ভারতের নারী লিগের দল গোকুলাম কেরালায়। ইংলিশ ফুটবলের সঙ্গে যোগাযোগের গল্প শোনাতে গিতে অদিতি বললেন, ‘ওই সময় আমি এমএসসি পড়তে লবরো ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হই। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল দলে খেলার পর একজন আমাকে যোগাযোগ করিয়ে দেন ওয়েস্ট হাম লেডিস ক্লাবের সঙ্গে।’

কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন


তিন বছর আগে এই নেপালেই সাফের পঞ্চম আসরে দুজন মুখোমুখি হয়েছিল। সেবার টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ৪-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। তবে আজ রুপনা হারিয়ে দিতে চান অদিতিকে, ‘ওর সঙ্গে আমার গত আসরেই কথা হয়েছিল। জানি সে ভারতের সেরা গোলরক্ষক। কিন্তু ওটা নিয়ে মোটেই ভাবছি না। আমার সব মনোযোগ আজকের ম্যাচে।’

অদিতিকে অভিজ্ঞ মানলেও কোচ গোলাম রব্বানীর আস্থার নাম রুপনা, ‘অবশ্যই অদিতি অভিজ্ঞ গোলরক্ষক। দীর্ঘদিন ধরে সে ভারত দলে খেলছে। রুপনা সেই তুলনায় অনেক তরুণ। তবে দিন দিন সে পরিণত হচ্ছে। এই টুর্নামেন্টেও সে অনেক ভালো খেলছে। ওর ওপর অবশ্যই আস্থা রাখা যায়।’