ইউরোপের ফুটবলে কোনো টুর্নামেন্টের সব খেলা একসঙ্গে হয়ে যায় না। লিগের ফাঁকে ফাঁকে টুর্নামেন্টের খেলা হয়। ইংল্যান্ডে যেমন এফএ কাপ বা স্পেনের কোপা দেল রে। বাংলাদেশেও এবার ইউরোপের ধাঁচে ঘরোয়া ফুটবলের সূচি করা হচ্ছে।
নতুন মৌসুমের দ্বিতীয় টুর্নামেন্ট ফেডারেশন কাপের খেলা একসঙ্গে একবারে হয়ে যাবে না, লিগের ফাঁকে ফাঁকে হবে। নতুন মৌসুম নিয়ে বাফুফের খসড়া পরিকল্পনায় তেমন উদ্যোগই নেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাফুফের জ্যেষ্ঠ সহ–সভাপতি ও পেশাদার লিগ কমিটির সভাপতি সালাম মুর্শেদী কাল প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘ইউরোপে যে ধারায় ঘরোয়া ফুটবল চলে, আমরা সেটা এবার অনুসরণ করতে চাই। ফেডারেশন কাপটা এবার আমরা একবারে করে ফেলব না। লিগের ফাঁকে ফাঁকে খেলা চালাব।
টুর্নামেন্টের খেলা একটানা চালালে ২০–২৫ দিন সময় লেগে যায়। এই সময়টা আমরা বাঁচাব। তাতে ফেডারেশন, ক্লাব সবার জন্যই ভালো হবে।’ এরপর যোগ করেন, ‘আমরা ঘরোয়া ফুটবলের কাঠামোটা এবার একটু আধুনিক করছি। সময়ের প্রয়োজনেই এটা করা।’
বৃষ্টির সময়টা এড়াতে আগামী জুন–জুলাইয়ের আগেই সব খেলা শেষ করার পরিকল্পনা বাফুফের। খসড়া পরিকল্পনায় অক্টোবরের পুরো মাস রাখা হয়েছে দলবদলের জন্য। নভেম্বরে শুরু হবে মৌসুমসূচক টুর্নামেন্ট স্বাধীনতা কাপ। বিশ্বকাপের সময়ও এই টুর্নামেন্টের খেলা চলাতে আগ্রহী বাফুফে।
বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত ফেডারেশন কাপের খেলা রাখা হয়েছে খসড়া সূচিতে। বিশ্বকাপের শেষ দিকের ম্যাচগুলোর জন্য ১০–১২ দিনের বিরতি দিয়ে স্বাধীনতা কাপের বাকি ম্যাচগুলো শেষ করার পরিকল্পনা ফেডারেশনের।
বিশ্বকাপ শেষে শুরু হবে প্রিমিয়ার লিগ। সর্বশেষ মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে ৪–৫দিন পরপর মাঠে নেমেছে ক্লাবগুলো। ম্যাচের মাঝখানে কত দিন বিরতি থাকবে, এ নিয়ে কোনো নির্দিষ্ট নীতিমালা ছিল না। যখন যেভাবে সুবিধা, সেভাবেই সূচি করা হয়েছে।
কিন্তু নতুন মৌসুমে সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার হবে লিগের ম্যাচ। প্রতিটি দল সপ্তাহে লিগ ম্যাচ খেলবে একটি। আর ফেডারেশন কাপের খেলা হবে সপ্তাহে মঙ্গলবার। অর্থাৎ সপ্তাহে ম্যাচ ডে থাকছে তিন দিন।
মাত্রই গত মাসে শেষ হয়েছে মৌসুম। দুই মাস পরই আবার ক্লাবগুলো দলবদলে রাজি হবে কি না, সেটা দেখার বিষয়। যদিও কয়েকটি ক্লাব এরই মধ্যে নতুন মৌসুমের ঘর প্রায় গুছিয়ে নিয়েছে। কিন্তু ছোট বা মাঝারি ক্লাবগুলো আর্থিক সমস্যায় আছে।
ইউরোপে যে ধারায় ঘরোয়া ফুটবল চলে, আমরা সেটা এবার অনুসরণ করতে চাই। ফেডারেশন কাপটা এবার আমরা একবারে করে ফেলব না। লিগের ফাঁকে ফাঁকে খেলা চালাব।সালাম মুর্শেদী, বাফুফের জ্যেষ্ঠ সহ–সভাপতি ও পেশাদার লিগ কমিটির সভাপতি
এর ফলে তারা আরও সময় চায় নতুন মৌসুম শুরুর আগে। তা ছাড়া বিশ্বকাপের সময় ক্লাবগুলো খেলতে রাজি হবে কি না, সেটাও প্রশ্ন। বাফুফে অবশ্য অক্টোবরেই দলবদল দিতে চায়। আগামী বছরের প্রথমভাগে ফিফা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সূচি আছে। তখন খেলা বন্ধ রাখতে হবে। কাজেই সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই।
বিশ্বকাপের সময় খেলা রাখার পেছনে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইমের যুক্তি, ‘আমরা খবর নিয়ে জেনেছি, বিশ্বকাপের সময় ভারতের আইএসএলসহ তাদের অন্য সব আয়োজন চলবে। অতএব বাংলাদেশের খেলা চালাতে সমস্যা কী? আমরাও তাই খেলা চালাতে আগ্রহী।’
তবে বাংলাদেশে ক্লাবগুলোর চাওয়া–না চাওয়ার একটা আলাদা গুরুত্ব বরাবরই থাকে। সে ক্ষেত্রে ক্লাব চাইলে বিশ্বকাপের সময় খেলা না–ও চলতে পারে। স্বাধীনতা কাপটা তখন বিশ্বকাপের পর হতে পারে।
শেষ পর্যন্ত কী হবে, তা ঠিক হবে লিগ কমিটির সভায়। তবে একটা সিদ্ধান্ত বাফুফে নিয়েই রেখেছে। আগামী প্রিমিয়ার লিগও হবে সর্বাচ্চ ১২ দল নিয়ে। সাইফ স্পোর্টিং ফুটবল থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় প্রিমিয়ারে এখন দল সংখ্যা ১১টি।