সৌদি আরবের কাছে আর্জেন্টিনা ও জাপানের কাছে জার্মানির হারের পর সবার চোখ ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার দিকে। প্রশ্ন ছিল, তায়েগুক ওয়ারির্সখ্যাত দলটি কি পারবে উরুগুয়েকে হারিয়ে আরেকটি এশিয়ান চমকের জন্ম দিতে?
মাঠের খেলায় অবশ্য দাপট ভালোই দেখিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। উরুগুয়ের ওপর ভালোই ছড়ি ঘুরিয়েছে তারা। তবে ম্যাচ জেতার সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি, সে গোলই পাওয়া হয়নি দক্ষিণ কোরিয়ার। গোলশূন্য ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদের। এমনকি গোলপোস্টে কোনো শটও রাখতে পারেনি তারা। উরুগুয়েও অবশ্য আফসোস করতে পারে, তাদের দুটি সুযোগ নষ্ট হয়েছে পোস্টে লেগে।
আগেই জানা গিয়েছিল, চোট থেকে সেরে উরুগুয়ের প্রথম ম্যাচে থাকবেন সং হিউং-মিন। কথামতো মাস্ক পরেই নেমেছিলেন এই টটেনহাম তারকা। অন্যদিকে এদিনসন কাভানিকে বেঞ্চে রেখে একাদশ সাজান উরুগুইয়ান কোচ দিয়েগো আলোনসো।
ম্যাচের শুরুতে অবশ্য আক্রমণাত্মক ফুটবলে উরুগুয়েকে বেশ চাপে রাখে দক্ষিণ কোরিয়া। বিশেষ করে লম্বা পাস ও বিপজ্জনক ক্রসে লাতিন প্রতিপক্ষকে ফাঁকি দিয়ে গোল আদায়ের চেষ্টা করে তারা।
এ সময় বাধ্য হয়ে নিচে নেমে এসে এশিয়ান প্রতিপক্ষের আক্রমণ সামাল দিতে হয় উরুগুয়েকে। দক্ষিণ কোরিয়ার আক্রমণাত্মক ফুটবলের চাপে কিছুটা এলোমেলো খেলতে শুরু করে বিশ্বকাপের প্রথম চ্যাম্পিয়নরা। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার আক্রমণের চাপ কমে এলে ধীরে ধীরে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে উরুগুয়ে।
ম্যাচের ১৯ মিনিটে দক্ষিণ কোরিয়ার ডি-বক্সে দারুণভাবে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে শট নিয়েছিলেন ফেদে ভালভের্দে। যদিও তাঁর সেই শট পোস্টের ওপর দিয়ে যায়। একটু পরই ম্যাচের তখন পর্যন্ত সহজ সুযোগটি পেয়েছিল উরুগুয়ে। তবে শট করতে গিয়ে বল পায়েই লাগাতে পারেননি দারউইন নুনিয়েজ।
গোল না পেলেও কিছু সময় মাঝমাঠ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখে উরুগুয়ে। আর দক্ষিণ কোরিয়াকে তখন নির্ভর করতে হচ্ছিল প্রতি-আক্রমণের ওপর। তেমনই এক আক্রমণে দুজনকে কাটিয়ে সনের নেওয়া শট ফিরে আসে ডি-বক্সে প্রতিপক্ষ এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে। পরের মুহূর্তে মাথিয়াস ওলিভেরা ঠিকঠাক পাস দিতে না পারায় সুযোগ নষ্ট হয় উরুগুয়ের।
এরপর আবারও উরুগুয়েকে চেপে ধরতে শুরু করে দক্ষিণ কোরিয়া। ৩৪ মিনিটে সুবিধাজনক অবস্থানে বল পেয়ে গোল করতে পারেননি হোওয়াং উই-জো। আক্রমণের ধারায় একাধিকবার উরুগুয়েকে কাঁপিয়ে দিয়েও গোলের দেখা পাননি সনরা। তবে ৪৪ মিনিটে ভালভের্দের কর্নারে দিয়েগো গদিনের দুর্দান্ত হেড যেভাবে পোস্টে লেগে ফিরে আসে, তা উরুগুয়ের সমর্থকদের আক্ষেপ বাড়িয়েছে।
বিরতির পরও শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে যায় দুই দলই। তবে এগিয়ে ছিল দক্ষিণ কোরিয়া। ম্যাচের ৫০ মিনিটে বক্সের ভেতর দারুণভাবে স্লাইড করে সনকে ঠেকিয়ে দেন হোসে হিমেনেজ।
পাল্টাপাল্টি আক্রমণে দুই দলই একে অপরের রক্ষণ ভাঙার চেষ্টা করছিল। তবে রক্ষণদুর্গের দৃঢ়তায় বারবার ফিরতে হয়েছে হতাশ হয়ে। ৬৪ মিনিটে তেমনই এক পাল্টা আক্রমণে গোলের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন নুনিয়েজ।
চেষ্টা করেছিলেন সুয়ারেজকে পাস দিতে। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার গোলরক্ষকের নৈপুণ্যে সফল হননি এই লিভারপুল স্ট্রাইকার। এরপর নিষ্প্রভ সুয়ারেজের পরিবর্তে কাভানিকে নামান আলোনসো। ৭১ মিনিটে আবারও লম্বা পাসে উরুগুয়ে রক্ষণকে বিপদে ফেলে দক্ষিণ কোরিয়া।
তবে উরুগুয়ে গোলরক্ষক এগিয়ে এসে দলকে বিপদমুক্ত করেন। ৭৫ মিনিটে আবার উরুগুয়ের রক্ষণ কাঁপায় এশিয়ান দলটি। গোল যেন এদিন ভাগ্যে লেখা ছিল না। উরুগুয়েও অবশ্য সুযোগ কম পায়নি। ৮১ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়ে চেষ্টা করেছিলেন নুনিয়েজ।
তবে উরুগুয়ে গোলরক্ষক এগিয়ে এসে দলকে বিপদমুক্ত করেন। ৭৫ মিনিটে আবার উরুগুয়ের রক্ষণ কাঁপায় এশিয়ান দলটি। গোল যেন এদিন ভাগ্যে লেখা ছিল না। উরুগুয়েও অবশ্য সুযোগ কম পায়নি। ৮১ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়ে চেষ্টা করেছিলেন নুনিয়েজ।
তবে সেটিও চলে যায় পোস্টের বাইরে। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে ভালভের্দের শট পোস্টে লেগে ফিরে এলে হতাশ হতে হয় উরুগুয়েকে। পরের মুহূর্তে ডি-বক্সের বাইরে থেকে সনের শট পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেও জালের ঠিকানা খুঁজে না পাওয়ায় ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে দুই দলকে।