কাজী সালাহউদ্দিন
কাজী সালাহউদ্দিন

বাফুফে সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন না কাজী সালাহউদ্দিন

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন না কাজী সালাহউদ্দিন। আজ বাফুফে ভবনে এসে এই ঘোষণা দেন ২০০৮ থেকে বাফুফের সভাপতি পদে থাকা সাবেক এই ফুটবলার। আগামী ২৬ অক্টোবর বাফুফের পরবর্তী নির্বাচন হওয়ার কথা।

আজ বাফুফে ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমি চার মেয়াদে দায়িত্বে ছিলাম। সেজন্য নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করি, যে এমন সুযোগ আমার জীবনে এসেছে।এখন বাফুফের যে নির্বাচন আসছে, ২৬ অক্টেবরে; আমি এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব না। এটা আমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এটা জানানোর জন্য এসেছি।’

বাফুফে নির্বাচন ২৬ অক্টোবর না করে পেছানোরও একটা দাবি ছিল। সালাহউদ্দিন জানিয়েছেন, এ বিষয়ে বাফুফে ফিফাকে চিঠি লিখেছিল। তবে ফিফা নির্বাচন পেছানোর আবেদনে নাকচ করে দিয়েছে। বাফুফের চিঠির উত্তরে ফিফা জানিয়েছে, নির্বাচন একদিনও পেছানো যাবে না।

২০০৮ সালে প্রথমবার বাফুফের সভাপতি নির্বাচিত হন সালাহউদ্দিন

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের ফুটবল–সমর্থকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাস’ সালাহউদ্দিনের পদত্যাগের দাবি তোলে। সংগঠনটি দুই দফায় বাফুফের সামনে গিয়ে বিক্ষোভও করেছে। এরপর সংগঠনটি সালাহউদ্দিনকে পদত্যাগের আলটিমেটামও দেয়।

তবে সেই আলটিমেটামকে গুরুত্ব না দিয়ে গত ১৩ আগস্ট সালাউদ্দিন জানিয়েছিলেন, তিনি পদত্যাগ তো করবেনই না, বরং আবার বাফুফের সভাপতি পদে নির্বাচন করবেন। সেই ঘোষণার এক মাস পর নিজের অবস্থান বদলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত জানালেন সালাহউদ্দিন।

২০০৮ সালে সাবেক সেনা কর্মকর্তা আমিন আহমেদ চৌধুরীকে ৬২-৪৯ ভোটে হারিয়ে প্রথমবার বাফুফে সভাপতি হন সালাহউদ্দিন। এর পর ২০১২ সালে আবার সালাহউদ্দিন সভাপতি নির্বাচিত হন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। ২০১৬ সালের নির্বাচনে তিনি প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়েন, তবে শেষ পর্যন্ত কামরুল আশরাফ খানকে (৫০ ভোট) হারিয়ে বাফুফেতে নিজের সিংহাসন ধরে রাখেন সালাহউদ্দিন (৮৩ ভোট)। ২০২০ সালের নির্বাচনে সভাপতি পদে কাজী সালাউদ্দিনের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বাফুফের প্রাক্তন সহসভাপতি ও সাবেক ফুটবলার বাদল রায় এবং সাবেক ফুটবলার ও কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক। সেই নির্বাচনে ৯৪ ভোট পেয়ে আবার জয়ী হন সালাহউদ্দিন। অসুস্থতার কথা বলে প্রথমে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নিয়ে বাদল রায় পান ৪০ ভোট, মানিক পান ১ ভোট।

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন

বাফুফে থেকে সালাহউদ্দিনের সরে যাওয়ার দাবি গত কয়েক বছরে প্রবল হয়ে উঠে। আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে গত বছর এপ্রিলে বাফুফের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় ফিফা। বাফুফের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম দুই বছর নিষিদ্ধ হন। বাফুফের অর্থ কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার অভিযোগে সিনিয়র সহসভাপতি সালাম মুর্শেদীকে ফিফা ১৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। সালাম অবশ্য রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপরই বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এর আগেই প্রশাসনিক ও আর্থিক বিষয়ে অস্বচ্ছতার নানা প্রশ্ন তুলে নির্বাহী কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আরিফ হোসেন মুন। সভাপতি হিসেবে সালাহউদ্দিন এসব অনিয়মের দায় এড়াতে পারেন কি না, সেই প্রশ্ন জোরালো হয়ে উঠে।