ইংল্যান্ডের জার্সিতে হ্যারি কেইন (ডানে) ও জুড বেলিংহাম
ইংল্যান্ডের জার্সিতে হ্যারি কেইন (ডানে) ও  জুড বেলিংহাম

চ্যাম্পিয়নস লিগে কেইন–বেলিংহামের ‘ইংলিশ ডার্বি’

জাতীয় দলে সতীর্থ তাঁরা। নিজেদের পজিশনে এ সময়ের অন্যতম সেরা দুই তারকাও। কিন্তু আজ রাতে তাঁরা শুধুই প্রতিপক্ষ। একে অপরকে হারাতে মরিয়া হয়ে লড়বেন তাঁরা। লক্ষ্য একটাই, নিজ নিজ দলকে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে নিয়ে যাওয়া। বলা হচ্ছে, হ্যারি কেইন ও জুড বেলিংহামের কথা। চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে আজ রাতে বায়ার্ন মিউনিখ ও রিয়াল মাদ্রিদের অন্যতম দুই ভরসা এ দুজন।

বায়ার্ন ও রিয়ালের এই দুই প্রাণভোমরা একই দেশের প্রতিনিধি হলেও দুজনের বয়সের ব্যবধান কিন্তু এক দশকের। কেইন লম্বা সময় ধরে নিজের পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতার কারণে প্রাসঙ্গিক, আর বেলিংহাম নতুন প্রজন্মের অন্যতম সেরা প্রতিনিধি। কেবল এ মৌসুমের শুরুতে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড ছেড়ে এসেছেন রিয়ালে। তবে এই অল্প সময়েই ফুটবলীয় জাদুতে ছড়িয়েছেন মুগ্ধতা।

কেইনও অবশ্য বেলিংহামের মতো মৌসুমের শুরুতে দল বদলেছেন। দীর্ঘদিনের সম্পর্কের ইতি ঘটিয়ে টটেনহাম থেকে চলে আসেন বায়ার্নে। দল বদলালেও পারফরম্যান্সের ধার কমেনি একটুও। মৌসুমজুড়ে গোলের পর গোল করে গেছেন। এখন অপেক্ষা চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতে শিরোপার আক্ষেপ ঘুচানোর। সে জন্য অবশ্য সেমিফাইনালেই পেরোতে হবে রিয়াল মাদ্রিদের কঠিন চ্যালেঞ্জ।

দুই দলের সমর্থকেরা কেইন-বেলিংহামের দিকে তাকিয়ে থাকলেও দুজন কিন্তু খেলেন একেবারে ভিন্ন পজিশনে। পরিপূর্ণ স্ট্রাইকার হিসেবে কেইনের কাজ মূলত গোল করার। বক্সের ভেতর সামনে আসা সুযোগকে কাজে লাগানোই তাঁর মূল দায়িত্ব। আজ রাতেও বক্সের ভেতর পাওয়া সুযোগগুলোকে গোলে রূপান্তর করে দলকে জয় এনে দেওয়ায় থাকবে কেইনের মূল লক্ষ্য।

বায়ার্ন–রিয়াল দ্বৈরথে চোখ থাকবে হ্যারি কেইন ও জুড বেলিংহামের দিকেও

তবে বলা বাহুল্য, আন্তোনিও রুডিগারদের কড়া মার্কিংয়ে সেই সুযোগ কমই আসবে কেইনের সামনে। তাই ‘হাফ চান্স’ কিংবা অল্প যেসব সুযোগ আসবে, সেগুলোকেই জালের ঠিকানা দেখাতে হবে কেইনকে। চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪২ ম্যাচে ৪২ গোল করেছেন কেইন, আর সহায়তা করেছেন আরও ১৩ গোলে। চ্যাম্পিয়নস লিগে ১০ ম্যাচে তাঁর গোলসংখ্যা ৭। পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে দারুণ ছন্দে আছেন এ ইংলিশ স্ট্রাইকার। তাঁর তীব্র গোলক্ষুধা আজ রাতেও রিয়ালের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

অন্যদিকে রিয়ালে এসে শুরু থেকেই আলো ছড়াচ্ছেন বেলিংহাম। প্রথম দিকে টানা কয়েক ম্যাচে গোল করে একাধিক রেকর্ডও ভেঙে দিয়েছিলেন এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। কাজটা মূলত গোল বানানোর হলেও গোল করাতেও অনেক স্ট্রাইকারকে পেছনে ফেলে দেওয়া সামর্থ্য আছে বেলিংহামের। চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তাঁর করা ২১ গোল সে সাক্ষ্যই দিচ্ছে। গোলের পাশাপাশি এ মৌসুমে ১০টি অ্যাসিস্টও আছে তাঁর।

এরই মধ্যে রিয়ালের লা লিগা শিরোপা পুনরুদ্ধারে বড় ভূমিকা রেখেছেন বেলিংহাম। তবে শুধু গোল করা কিংবা গোল বানানো নয়, রিয়ালকে মিডফিল্ডে দখল এনে দেওয়ার দায়িত্বও থাকবে বেলিংহামের কাঁধে। সব মিলিয়ে বায়ার্নের বিপক্ষে আজ রিয়ালের সাফল্যের অনেকটাই নির্ভর করছে বেলিংহামের ওপর।

সেরা ছন্দে থাকা বেলিংহাম কতটা ভয়ংকর হতে পারে তা মনে করিয়ে বায়ার্ন কোচ টমাস টুখেল বলেছেন, ‘জুড (বেলিংহাম) অসাধারণ। বুন্দেসলিগায় সে দারুণ এক খেলোয়াড় ছিল। যেভাবে সে উন্নতি করেছে তার মধ্য দিয়ে সে নিজের ব্যক্তিত্বের পরিচয় দিয়েছে। উচ্চ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন খেলোয়াড়রাই কেবল এটা করে দেখাতে পারে।’