একটা সময় ছিল, বলতে গেলে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের রাজা। কত কঠিন আর গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ যে তিনি জিতিয়েছেন ওল্ড ট্রাফোর্ডের দলটিকে।
জিতেছেন তিনটি প্রিমিয়ার লিগ, একটি চ্যাম্পিয়নস লিগসহ ইউনাইটেডের হয়ে ৯টি শিরোপা। সেই রোনালদোই দ্বিতীয় মেয়াদে ইউনাইটেডে নাম লেখানোর পর ব্রাত্য হয়েছেন, দল থেকে বাদ পড়েছেন, বিতর্কিত সাক্ষাৎকার দিয়ে ক্লাবের সঙ্গে চুক্তিও খুইয়েছেন।
এ সবই ঘটেছে কোচ এরিক টেন হাগের সময়ে। রোনালদোর মতো খেলোয়াড়কে দল থেকে বাদ দেওয়া—এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় কতটা চাপে ছিলেন টেন হাগ? ইউনাইটেডের কোচের উত্তর শুনলে অবশ্য মনে হবে, সেই চাপ তাঁকে খুব একটা কাবু করতে পারেনি।
রোনালদো থাকাকালে মাঠে খুব একটা ভালো সময় কাটেনি ইউনাইটেডের। ২০২২-২৩ মৌসুমের শুরুর কয়েক মাস ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের আলোচনায় ঘুরেফিরে আসত ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর নাম। যার প্রায় সবই ছিল নেতিবাচক। এর প্রভাব পড়ত দলের পারফরম্যান্সে। মাঠেও সীমিত সুযোগ পেয়ে তেমন কিছুই করতে পারেননি রোনালদো।
যে চিত্র পাল্টে গেছে বিশ্বকাপ-বিরতির পর। আরও স্পষ্ট করে বললে রোনালদো ক্লাব ছাড়ার পর। সেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডও ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি (৩০) জয় পাওয়া দল। ৬ বছর পর জিতেছে শিরোপাও। শিরোপার লড়াইয়ে আছে বাকি তিন প্রতিযোগিতাতেও।
শুধু রোনালদোকে নয়, টেন হাগকে একাদশের বাইরে রাখতে হয়েছে তখনকার ইউনাইটেড অধিনায়ক ডিফেন্ডার হ্যারি ম্যাগুয়ারকেও। এমন বড় নাম দলের বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে সফলই হয়েছেন টেন হাগ। পরিসংখ্যান অন্তত সে কথাই বলছে।
সফল হলেও এর ফল যে অন্য রকমও হতে পারত, সেটাও মাথায় ছিল ইউনাইটেডের কোচের। এরপরও ক্লাবের স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে তাঁকে।
লিভারপুল ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে টেন হাগ বলেছেন, ‘আসলে আমার কাছে কারণ ছিল, যা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। আমি জানতাম এর ফল কী হতে পারে, যদি সিদ্ধান্ত পক্ষে না আসত। আর ফুটবলে তো এটা হয়েই থাকে। কিন্তু আমি আসলে উদ্বিগ্ন ছিলাম না, ভালো ঘুমিয়েছিলামও ওই দিনগুলোতেও। ক্লাবের স্বার্থে, ক্লাবকে সামনে এগিয়ে নিতে আমাকে সিদ্ধান্তগুলো নিতে হয়েছে। এটাই আমার কাজ, এই দায়িত্বটা আমার নিতেই হতো।’