টটেনহাম হটস্পারের ইংলিশ স্ট্রাইকার হ্যারি কেইন
টটেনহাম হটস্পারের ইংলিশ স্ট্রাইকার হ্যারি কেইন

কেইনকে পেতে বায়ার্নের সঙ্গে লড়াইয়ে পিএসজি

দলবদলে হ্যারি কেইনকে নিয়ে উত্তাপ ক্রমেই বাড়ছে। তাঁকে দলে টানতে কিছুদিন ধরে টটেনহামের সঙ্গে দর-কষাকষিতে ছিল শুধু বায়ার্ন মিউনিখ। কিন্তু বায়ার্নের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে এবার লড়াইয়ে শামিল হলো পিএসজিও। অবশ্য কেইন যদি টটেনহাম ছেড়ে ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের ডেরায় আসতে রাজি হন, তাহলেই তাঁকে নেওয়ার ব্যাপারে মাঠে নামবে প্যারিসের ক্লাবটি।

কেইনকে নিয়ে পিএসজির এই আগ্রহের সঙ্গে অবশ্য কিলিয়ান এমবাপ্পের দলে থাকা বা না থাকার কোনো সম্পর্ক নেই। ইংলিশ স্ট্রাইকারকে বিকল্প হিসেবে দেখার পাশাপাশি দলের আক্রমণভাগের শক্তি বৃদ্ধির অস্ত্র হিসেবেও দেখা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে ৩০তম জন্মদিন পালন করতে যাওয়া কেইনের সঙ্গে অবশ্য এখনো টটেনহামের এক বছরের চুক্তি বাকি আছে।

টটেনহাম চেয়ারম্যান ড্যানিয়েল লেভি অবশ্য কেইনের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। যেখানে তাঁর লক্ষ্য কেইনকে আরও তিন মৌসুমের জন্য ধরে রাখা। কেইনকে রাখার জন্য বেতনের অঙ্কও দ্বিগুণ করার কথা শোনা যাচ্ছে। টটেনহামের সভাপতি লেভির কোনো অবস্থাতেই কেইনকে ফ্রি এজেন্ট হিসেবে ছাড়ার ইচ্ছা নেই। আর শেষ পর্যন্ত যদি চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো সম্ভব না হয়, তাহলে প্রিমিয়ার লিগের বাইরের কোনো ক্লাবে ১০ কোটি পাউন্ডে কেইনকে ছাড়তে চান লেভি।

কেইনকে ১০ কোটি পাউন্ডের কমে ছাড়তে চান না টটেনহাম চেয়ারম্যান

এদিকে বায়ার্ন এরই মধ্যে কেইনের জন্য দুবার প্রস্তাব দিয়েছে টটেনহামকে। কিন্তু দুটি প্রস্তাবই প্রত্যাখ্যান করেছে স্পাররা। ক্লাবের এক সূত্র ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসকে জানিয়েছে, কেইনের সঙ্গে ব্যক্তিগত শর্তে ঐকমত্যে পৌঁছেছে বায়ার্ন। আর কেইন নিজেও নাকি জার্মানিতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। তবে পিএসজির বিশ্বাস, তারা কেইনের জন্য বায়ার্নের চেয়ে ভালো প্রস্তাব দিতে পারবে। ধারণা করা হচ্ছে, কেইনের ব্যাপারে এ মাসের শুরুতে লেভির সঙ্গে আলাপ করেছেন পিএসজি সভাপতি নাসের আল-খেলাইফি।

কেইনকে বায়ার্নের মুখ থেকে ছিনিয়ে নিতে পিএসজি মুখিয়ে থাকলেও তাঁকে ধরে রাখার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী বায়ার্ন সভাপতি উলি হোয়েনেস। দলের অনুশীলনে ক্যাম্পে এসে সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, কেইন এরই মধ্যে বায়ার্নে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়ে ফেলেছেন। এখন টটেনহাম সভাপতি লেভির সঙ্গে তাদের দর-কষাকষি চলছে।

কেইনের সঙ্গে বোর্ড সদস্য কার্ল-হেইঞ্জ রুমেনিগে ও প্রধান নির্বাহী ইয়ান-ক্রিস্টিয়ান ড্রেসেনের সঙ্গে আলাপ হয়েছে জানিয়ে হোয়েনেস বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত ঘটনা যা দাঁড়িয়েছে, তা হলো সব ধরনের আলাপে হ্যারি (কেইন) নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে পরিষ্কার বার্তা দিয়েছে। বিষয়টা যদি এমনটাই থাকে, তাহলে আমরা তাকে পাব। আর টটেনহামকেও তাকে ছাড়তে হবে।’

গত মৌসুমে টটেনহাম ৮ নম্বরে থেকে প্রিমিয়ার লিগ শেষ করেছে। কেইন যদি ক্লাবটিতে থেকে যান, আগামী মৌসুমে ইউরোপের শীর্ষ প্রতিযোগিতায় দর্শক হয়ে থাকতে হবে তাঁকে। অন্যদিকে, শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় বুন্দেসলিগা শিরোপা ধরে রেখেছে বায়ার্ন। বায়ার্নে গেলে ফের ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে মাঠে নামার সুযোগ পাবেন কেইন। প্রসঙ্গটি পরোক্ষভাবে মনে করিয়ে দিয়ে হোয়েনেস বলেছেন, ‘তার সামনে সুযোগ আছে ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবে আসার।’

গত মৌসুমের শেষ দিকেই মূলত কেইনের টটেনহাম ছাড়ার বিষয়টি সামনে আসে। শুরুতে তাঁকে নেওয়ার দৌড়ে ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। মূলত, করিম বেনেজেমার বিকল্প হিসেবেই ভাবা হচ্ছিল কেইনকে। এরপর রিয়ালের সঙ্গে লড়াইয়ে নামে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডও। তবে রিয়াল এমবাপ্পেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে আর ইংলিশ ক্লাবে কেইনকে না ছাড়ার বিষয়ে অটল অবস্থান নেয় টটেনহাম। এ সুযোগ নিয়েই মূলত মাঠে নামে বায়ার্ন। আর এখন যুক্ত হয়েছে পিএসজিও। শেষ পর্যন্ত কেইনের ভবিষ্যৎ কী, তা জানতে আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।