লিওনেল মেসি স্ট্রাইকার নন, গোল করা তাঁর প্রধান কাজ নয়। খেলেন উইঙ্গার হিসেবে, কখনো আবার অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের জায়গায়। ‘নাম্বার নাইন’র বাইরে যাঁরা খেলেন, তাঁদের কাজই মূলত গোলের সুযোগ তৈরি করা। অন্য অর্থে ‘প্লেমেকার’। দীর্ঘদিন ধরে মেসির খেলা দেখেন, এমন সবারই জানা ম্যাচে সুযোগ তৈরিতে মেসির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাই থাকে। কিন্তু সেটা ঠিক কতটা?
মেসি এখন ইউরোপে খেলেন না। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে এখন তরুণদেরই বেশি জয়জয়কার। সেখানেই–বা কারা এখন গোলের সুযোগ তৈরি করার শীর্ষ খেলোয়াড়? গোলের সুযোগ বেশি তৈরি করেন কারা? এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সিআইইএস ফুটবল অবজারভেটরি। চলতি মৌসুমে অন্তত ৩৬০ মিনিট মাঠে ছিলেন, এমন খেলোয়াড়দের নিয়ে করা এই গবেষণায় ইউরোপে শীর্ষ পাঁচ লিগের মধ্যে এক নম্বরে জায়গা করেছেন পিএসজির জোয়াও নেভেস। আর শীর্ষ পাঁচ লিগের বাইরের লিগগুলোতে সবার ওপরে ইন্টার মায়ামিতে খেলা মেসির নাম।
সিআইইএস নির্দিষ্ট কিছু সূচকের ওপর ভিত্তি করে বেশি সুযোগ তৈরি করা খেলোয়াড়দের বের করেছে। এর মধ্যে আছে কতগুলো পাস থেকে অন্যরা গোল করেছেন বা গোলের সহজ সুযোগ তৈরি হয়েছে, গোলে সহায়তা করা খেলোয়াড়দের কাছে কতগুলো পাস গেছে (সেকেন্ড অ্যাসিস্ট) এবং কতগুলো পাস প্রতিপক্ষের রক্ষণদেয়াল ভেদ করে নিজের সতীর্থের কাছে গেছে।
‘চান্স ক্রিয়েটর’ হওয়ার সুযোগ বেশি থাকে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ও উইঙ্গারদের। তবে সিআইইএস বিবেচনায় নিয়েছে সেন্টার ফরোয়ার্ড, ডিফেন্সিভ ও সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার, উইং ও ফুল ব্যাক সব পজিশনকেই।
দেখা যাচ্ছে, ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের মধ্যে মোট ১০০ পয়েন্টের মধ্যে ৯৯.৪ পয়েন্ট অর্জন করেছেন নেভেস। ২০ বছর বয়সী ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার এ বছরই বেনফিকা থেকে পিএসজিতে যোগ দেন। গোলের সুযোগ তৈরি মানেই গোলে শীর্ষ সহায়তাকারী নন, তবু এবারের ফ্রেঞ্চ লিগে এরই মধ্যে ৬ গোলে অ্যাসিস্ট হয়ে গেছে তাঁর।
নেভেস যে গোলের সুযোগ তৈরিতে খুব ভালো খেলেছেন, তা স্পষ্ট দ্বিতীয় স্থানে থাকা খেলোয়াড়ের সঙ্গে পার্থক্যেও। বেশ খানিকটা পেছনে ৯৪.৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে কোল পালমার। চেলসির ২২ বছর বয়সী এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার অবশ্য এবারের প্রিমিয়ার লিগে প্রথম ৬ ম্যাচে ৬টি গোলও করেছেন। ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের তালিকায় শীর্ষ পাঁচের বাকি তিনটি জায়গায় যথাক্রমে বুন্দেসলিগার ব্রেমেনে খেলা রোমানো স্কিমিড (৯০.৯), লা লিগার বার্সেলোনায় খেলা লামিনে ইয়ামাল (৯০.৩) এবং একই লিগে ভিয়ারিয়ালে খেলা অ্যালেক্স বায়েনা (৯০.২)।
প্রিমিয়ার লিগ, লা লিগা, বুন্দেসলিগা, সিরি আ ও লিগ আঁ–র বাইরে বিশ্বের ৬০টি লিগ নিয়ে আরেকটি তালিকা তৈরি করেছে সিআইইএস। এখানে ইন্টার মায়ামিতে খেলা মেসির পয়েন্ট ৯৮.২। ৩৭ বছর বয়সী মেসির পর দ্বিতীয় স্থানে ইনিও ভিসেন্তে (৩৪.৪), যিনি খেলেন স্পেনের দ্বিতীয় স্তরের দল রেসিংয়ে। মেজর লিগ সকারের দল লস অ্যাঞ্জেলেস গ্যালাক্সিতে খেলা রিকি পিগ ৯৪ পয়েন্ট নিয়ে আছেন তিন নম্বরে।
শীর্ষ পাঁচের অন্য দুটি যথাক্রমে কাতারের ক্লাব আল সাদের উইঙ্গার আকরাম আফিফ (৯৩.৪) এবং সার্বিয়ান লিগের পার্টিজানে খেলা মিডফিল্ডার বেবার্স নাতচো (৯২.৪)।
সৌদি প্রো লিগের খেলোয়াড়দের মধ্যে সবার ওপরে আল–ইত্তিহাদের মুসা দিয়াবি (৯২.৪)। আল নাসর উইঙ্গার সাদিও মানের পয়েন্ট ৮৪.৭, আল ইত্তিহাদ ফরোয়ার্ড করিম বেনজেমার ৮১.৬। সর্বনিম্ন ৮০.৩ পয়েন্ট পাওয়া খেলোয়াড়দের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো নেই। যিনি মূলত উইংয়ে খেলে থাকেন।