আগামীকাল মহান স্বাধীনতা দিবস। দিনটা বিভিন্নভাবে পালন করা হবে সারা দেশে। আর এমন দিনেই মাঠে নামছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে ফিলিস্তিনের। বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় ম্যাচ শুরু বেলা সাড়ে তিনটায়।
২১ মার্চ কুয়েতে ফিলিস্তিনের কাছে প্রথম লেগে ৫-০ গোলে হেরে আসা বাংলাদেশ ফিরতি লেগে ঘরের মাঠে জিততে চায়। জেতা কঠিন জেনেও সমর্থকদের কাছে দিনটা স্মরণীয় করে রাখতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। নিজের এই ইচ্ছার কথা আজ বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন জামাল, ‘কাল বিশেষ একটা দিন। অনেক বড় দিন আমাদের জন্য, মহান স্বাধীনতা দিবস। এমন দিনে আমরা দেশের মানুষকে একটা উপহার দিতে চাই। আমাদের জিততে হবে। জয়ই হবে সেই উপহার।’
ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৮৬ ধাপ এগিয়ে থাকা ফিলিস্তিনের সঙ্গে বাংলাদেশ জিতলে তো কথাই নেই। যদিও তা অনেক কঠিন। তবে জামাল আশাবাদী থাকতে চান, ‘আমরা সমর্থকদের সামনে ম্যাচ হারতে চাই না। কিংস অ্যারেনায় অপরাজিত থাকার রেকর্ড আমাদের ধরে রাখতে হবে। ভালো খেলতে হবে সমর্থকদের জন্য। ম্যাচটা আমাদের কাছে ফাইনালের মতো।’
ফিলিস্তিনের সঙ্গে প্রথম ম্যাচটা খুব হতাশায় কেটেছে বাংলাদেশের। সেই হতাশা ভুলে সামনে তাকানোর তাগিদ জামালের, ‘গত ম্যাচে কী হয়েছে, সেটা ভুলে যেতে হবে। সব মনোযোগ কালকের ম্যাচের জন্য রাখছি আমরা। কুয়েতের ম্যাচে ৪৩-৫৩—এই ১০ মিনিটে আমরা ৪ গোল খেয়েছি। এ সময় আমাদের কী হয়েছে, ঠিক বলতে পারব না। বিপর্যয় ছিল, এই ১০ মিনিট অনেক গুরুত্বপূর্ণও ছিল। ভুল থেকে শিখতে হবে আমাদের।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশেরই মাঠে নামছে ফিলিস্তিন দল, যারা নিজেরাও স্বাধীনতার জন্য লড়ছে। বাংলাদেশের বিশেষ এই দিনে বাংলাদেশি জনগণের জন্য কোনো বার্তা আছে কি না, জানতে চাইলে ফিলিস্তিন দলের তিউনিসিয়ান কোচ মাকরাম দাবোব বলেন, ‘আমরা খুশি যে এমন দিনে ঢাকায় খেলতে নামছি। বাংলাদেশে মানুষের জন্য শুভেচ্ছা। আশা করি, প্রতিবছর বাংলাদেশের জনগণ দিনটি দারুণভাবে উদ্যাপন করবে।’
বাংলাদেশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরার কথায় অবশ্য স্বাধীনতা দিবস প্রসঙ্গটা আলাদাভাবে আসেনি। তবে তিনিও বলেছেন, ‘কাল আমাদের জন্য বড় দিন।’ কাবরেরা আরও বলেছেন, ‘অনেক দিন পর দেশে খেলার সুযোগ পাচ্ছি, তাই খুব খুশি আমরা। কিংস অ্যারেনায় আমরা অপরাজিত। এটা দারুণ ব্যাপার। এতে আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে।’
ফিলিস্তিনের সঙ্গে প্রথম ম্যাচে ৫-০ গোলে হার বাংলাদেশের জন্য বড় এক শিক্ষাই। তবে তাতেও অনেক ইতিবাচক দিক আছে জানিয়ে কোচ বলেন, ‘প্রথমার্ধে আমরা খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ খেলেছি। ৪২ মিনিট পর্যন্ত লড়াই করেছি এশিয়ান কাপে সেরা ১৬-তে ওঠা দলের সঙ্গে। যাহোক, সেই ম্যাচের ভুল শুধরে ফিরতি লেগে ভালো কিছু করতে চাই। আশা করি, আমরা কিছু পয়েন্ট পাব। সমর্থকদের জন্য ভালো কিছু করব।’
৫ গোল ব্যবধানে হারের পর ঘুরে দাঁড়ানো কতটা কঠিন? প্রশ্নের উত্তরে আশার কথা শোনালেন কাবরেরা, ‘আমাদের সামনে তাকাতে হবে। আগামীকাল আমরা আগের ভুল করব না, এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা। আমরা পারব লড়তে। প্রথম ম্যাচের ফলে আমি হতাশ অবশ্যই। তবে ৪-০, ৫-০ স্কোরলাইনকে আমি ধর্তব্যেই আনছি না। গোলের সংখ্যা নয়, আমি মনে করি, কী খেললাম, সেটা বিশ্লেষণ করা উচিত আমাদের।’
ফিলিস্তিনের সঙ্গে ঘরের মাঠে জয় না ড্র? এমন প্রশ্নে বাংলাদেশ কোচের কৌশলী উত্তর, ‘আমাদের লক্ষ্য লড়াই করা। আমরা জানি, ফিলিস্তিন দলের শক্তি কেমন। জানি বক্সে তারা কী করতে পাবে। তাদের অনেক শক্তিশালী খেলোয়াড় আছে। তবে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে চাই।’