রিয়াল মাদ্রিদ উইঙ্গার ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের গোল উদ্‌যাপন (বাঁয়ে), হারের পর হতাশ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ডিফেন্ডার হ্যারি ম্যাগুয়ার
রিয়াল মাদ্রিদ উইঙ্গার ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের গোল উদ্‌যাপন (বাঁয়ে), হারের পর হতাশ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ডিফেন্ডার হ্যারি ম্যাগুয়ার

চ্যাম্পিয়নস লিগ

রিয়ালের রেকর্ড, ইউনাইটেডের শঙ্কা

ম্যাচ শুরুর কয়েক মিনিট আগে রিয়াল মাদ্রিদ পেয়েছিল বড় দুঃসংবাদ। খেলতে নামার আগে গা গরম করতে গিয়ে চোট পান রিয়ালের গোলরক্ষক কেপা আরিজাবালাগা। আন্দ্রি লুনিন তখনই বুঝে নেন, আরিজাবালাগার পরিবর্তে তাঁকেই নামতে হবে।

রিয়াল যখনই বিপদে পড়ে, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের এই গোলরক্ষকের ওপরই আস্থা রাখতে হয়। এর আগে থিবো কোর্তোয়ার অনুপস্থিতিতে লুনিন আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। গত রাতে আচমকা সুযোগ পেয়েও আলো ছড়ালেন।

ম্যাচের শুরুতেই পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেন রিয়াল গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিন

ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে পর্তুগিজ ক্লাব ব্রাগার বিপক্ষে ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই ঝাঁপিয়ে পড়ে পেনাল্টি ঠেকিয়ে দেন লুনিন। শুরুতেই বড়সড় ধাক্কা থেকে রক্ষার পরেই রিয়াল যেন চ্যাম্পিয়নস লিগের রিয়াল হয়ে ওঠে। এরপর ব্রাগাকে তেমন কোনো সুযোগ না দিয়ে ম্যাচ জিতে নেয় ৩-০ ব্যবধানে। প্রথমার্ধে ব্রাহিম দিয়াজ দলকে এগিয়ে দেওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে গোল করেন দুই ব্রাজিলিয়ান ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও রদ্রিগো।

টানা ৪ জয়ে ‘সি’ গ্রুপ থেকে সবার আগে নকআউট পর্বে নাম লিখিয়েছে রিয়াল। সর্বশেষ ২০১৪-১৫ মৌসুমে গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ৪ ম্যাচ জিতেছিল লস ব্লাঙ্কোরা। সে সময়ও ক্লাবটির দায়িত্বে ছিলেন বর্তমান কোচ কার্লো আনচেলত্তি।

গত রাতের জয়ে আরেকটি রেকর্ডও গড়েছে রিয়াল। প্রথম ক্লাব হিসেবে টানা ২৭ মৌসুম নকআউট পর্বে উঠল তারা। সর্বশেষ ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে নকআউট পর্বে খেলতে পারেনি রিয়াল। মূলত লা লিগার আগের মৌসুমে ষষ্ঠ হওয়ায় চ্যাম্পিয়নস লিগের ওই মৌসুমে খেলারই সুযোগ পায়নি ক্লাবটি।

দলকে নকআউট পর্বে নিতে পারায় খুশি আনচেলত্তি। ম্যাচ শেষে তিনি বলেছেন, ‘শেষ ষোলোয় উঠতে পেরে আমরা আনন্দিত। গ্রুপ পর্বের বাধা পেরোনো সহজ ব্যাপার নয়। হোম-অ্যাওয়ে মিলিয়ে প্রথম ৪ ম্যাচে আমরা সত্যিই খুব ভালো খেলেছি।’

রিয়ালের নতুন রেকর্ডের রাতে গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কায় পড়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। বাজে সময় পার করতে থাকা ইউনাইটেড কাল ৪-৩ ব্যবধানে হেরেছে ডেনমার্কের ক্লাব কোপেনহেগেনের কাছে।

অথচ কোপেনহেগেনেই জন্ম নেওয়া রাসমুস হইলুন্দের জোড়া গোলে আধঘণ্টার মধ্যে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছিল রেড ডেভিলরা। সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু ৪২ মিনিটে মার্কাস রাশফোর্ড সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে খেই হারিয়ে ফেলে। ১০ জনের দলের পরিণত হওয়া ইউনাইটেড এরপর খেয়েছে ৪ গোল।

বিরতিতে যাওয়ার আগেই দুই গোল শোধ করে স্বাগতিক কোপেনহেগেন। ৬৯ মিনিটে ব্রুনো ফার্নান্দেজ পেনাল্টি থেকে গোল করলে আবারও এগিয়ে যায় ইউনাইটেড। কিন্তু শেষ দিকে আরও দুই গোল খেয়ে হেরে বসে এরিক টেন হাগের দল।

লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় রাশফোর্ডকে। এটাই ইউনাইটেডের বড় সর্বনাশ করেছে

দুই দলের আগের দেখায় কোপেনহেগেনকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল ইউনাইটেড। একমাত্র সেই জয়ে পাওয়া ৩ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ’ গ্রুপের তলানিতেই পড়ে আছে ইংলিশ ক্লাবটি। ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে কোপেনহেগেন। এই গ্রুপ থেকে সবার আগে নকআউট পর্বে উঠে গেছে বায়ার্ন মিউনিখ। জার্মান চ্যাম্পিয়নরা গত রাতে গালাতাসারাইকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়াও নিশ্চিত করেছে।

একনজরে ফলাফল

রিয়াল মাদ্রিদ ৩ : ০ ব্রাগা

কোপেনহেগেন ৪ : ৩ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড

বায়ার্ন মিউনিখ ২ : ১ গালাতাসারাই

আর্সেনাল ২ : ০ সেভিয়া

সাল্‌জবুর্গ ০ : ১ ইন্টার মিলান

রিয়াল সোসিয়েদাদ ৩ : ১ বেনফিকা

নাপোলি ১ : ১ ইউনিয়ন বার্লিন

পিএসভি আইন্দহফেন ১ : ০ লাস