শেখ মোরছালিন কিংবা রাকিব হোসেন—দুজনই দায়ী সহজ সুযোগ নষ্ট করার জন্য। বাংলাদেশের দুই ফরোয়ার্ড যদি আজ গোল মিস না করতেন, তাহলে হয়তো আফগানিস্তানের বিপক্ষে একাধিক গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে পারত বাংলাদেশ, কিন্তু সেটি হয়নি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে আফগানদের বিপক্ষে আরাধ্য জয়টাও আসেনি। গোলশূন্য ড্র ম্যাচের পর কোচ হাভিয়ের কাবরেরার কথায় সবাই একটু অবাকই। আজ মোরছালিন–রাকিবদের গোল মিসে তিনিও যে খুশি!
বাংলাদেশ দলের স্প্যানিশ কোচ অবশ্য নিজের এ মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘মোরছালিন আর রাকিব দুজনই খুব ভালো খেলোয়াড়। প্রতিপক্ষের জন্য খুবই বিপজ্জনক খেলোয়াড়। ওরা সুযোগ তৈরি করেছে। কিন্তু আফগানিস্তানের রক্ষণ ফোকরগুলো পূরণ করে ফেলেছিল। ওরা যে আজ মিস করেছে, এতে ভালোই হয়েছে। মিস করতে হলে আজই করা ভালো। ওরা যেন আজ ওদের ভুলত্রুটিগুলো বিশ্লেষণ করে মালদ্বীপের বিপক্ষে গোল করতে পারে।’
অক্টোবরের ১২ ও ১৭ তারিখ ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রাথমিক রাউন্ডের অগ্নিপরীক্ষা বাংলাদেশের। প্রতিপক্ষ মালদ্বীপ। কোচ কাবরেরা আগে থেকেই ঢাকা ও মালের ম্যাচ দুটিকে পাখির চোখ করেছেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচকে মালদ্বীপের বিপক্ষে লড়তে নামার আগে বড় প্রস্তুতি হিসেবেই দেখছেন কাবরেরা। মোরছালিন আর রাকিব আজকের ম্যাচে যে মিসগুলো করেছেন, সেগুলো দেখে তাঁর মনে হচ্ছে, মালদ্বীপের বিপক্ষে ওই দুটি ম্যাচে এমন মিস করার চেয়ে প্রস্তুতি হিসেবে দেখা ম্যাচে মিস করাটাই ভালো।
কাবরেরা খুশি আফগানিস্তানের মতো দলকে প্রস্তুতির জন্য পেয়েও, ‘আজকের ম্যাচে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বেশ ইতিবাচকই বলব আমরা। আমাদের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান খুবই শক্তিশালী দল। আমরা প্রথম থেকেই আফগানিস্তানের অর্ধে খেলতে পেরেছি। শুরুর দিকে তাদের রক্ষণ ও মধ্যমাঠের কিছু ফাঁকফোকর বের করে ফেলেছিলাম আমরা। কিন্তু পরে ওরা সেটি খুব ভালো সামলে নিয়েছে। পরের দিকে খেলাটা খুবই কঠিন ছিল। আমরা এমন ম্যাচই চেয়েছি। আমরা কঠিন পরিস্থিতি চেয়েছি, চ্যালেঞ্জ চেয়েছি। আমরা এমন একটা দলের সঙ্গে খেলতে চেয়েছি, যারা আমাদের মাঠে বেশি বেশি করে ভাবতে বাধ্য করে। প্রতিপক্ষ হিসেবে আফগানিস্তানকে পেয়ে আমি আসলে খুশি।’
৭ সেপ্টেম্বর বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনাতেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচের আগে সেটিই নিজেদের দলকে গুছিয়ে ফেলার শেষ বড় সুযোগ। আজ আফগানিস্তানকে হারাতে না পারলেও কাবরেরা দলের খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সে খুব হতাশ নন।
বরং তিনি মনে করেন আজকের ‘ইতিবাচক’ পারফরম্যান্স ৭ সেপ্টেম্বর প্রতিপক্ষের বিপক্ষে আরও সহায়ক হিসেবে কাজ করবে, ‘আজকের ম্যাচের সবচেয়ে ভালো জিনিস যেটি আমি খুঁজে পেয়েছি, সেটি হচ্ছে আজ খেলার মধ্যেই অনেক খেলা হয়েছে। ম্যাচের মধ্যেই আমাদের অনেক কৌশল এদিক–ওদিক করতে হয়েছে। যেটি প্রস্তুতিতে দারুণ সহায়ক হবে। আমি মনে করি আজকের ম্যাচের মতোই আমরা পরের ম্যাচে ভালো করব।’
কাবরেরার মতে বেঙ্গালুরুর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পর থেকে বাংলাদেশ ফুটবল দল সত্যিকারের একটা দলই হয়ে উঠছে, ‘আমরা প্রতিপক্ষের চোখে চোখ রেখে লড়াই করছি। আমরা প্রাধান্য বিস্তার করছি। গোলের সুযোগ তৈরি করছি। সবাই মিলে রক্ষণের কাজটাও করছি। আমি মনে করি আমরা সত্যিকারের একটা দলই হয়ে উঠছি।’