জাপানের ‘বিভীষণ’ আছেন বাংলাদেশ দলে!
মাতসুশিমা সুমাইয়া তো অনেকটা তা-ই! বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলে খেলছেন জাপানি মায়ের এই মেয়ে। সেখানেই বেড়ে ওঠা, ফুটবলার হয়ে ওঠা। বাবার দেশের জার্সি পরে খেলার গর্বটা তাঁর কাছে বড় কিছুই। এরই মধ্যে অভিষিক্ত হয়েছেন, খেলে ফেলেছেন দুটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। এশিয়ান গেমসে মেয়েদের ফুটবলে বিশ্বের ১১ নম্বর দেশ জাপানের বিপক্ষে যখন মাঠে নামবেন সাবিনা-কৃষ্ণা-সানজিদারা, তখন এই সুমাইয়াই হয়তো হয়ে উঠবেন তুরুপের তাস!
সুমাইয়া নিজেকে ঠিক এভাবে ভাবেন না, ‘জাপানের সঙ্গে খেলা পড়েছে আমাদের। এটা খুব বড় একটা চ্যালেঞ্জ। মেয়েদের ফুটবলে বিশ্বের অন্যতম সেরা দল জাপান। এশিয়ান গেমসে জাপানের বিপক্ষে খেলে আমরা অনেক কিছু শিখব। তবে আমাদের দলেও দারুণ কিছু খেলোয়াড় আছে। সাবিনা, কৃষ্ণা, মাসুরা, সানজিদা, মারিয়া ওরা খুবই ভালো। আশা করি, আমরা ভালোই লড়ব।’
জাপানের খেলা দেখেছেন তবে দূর থেকে। নারী বিশ্বকাপে জাপান খেলছে দুর্দান্ত। সুমাইয়া অবশ্য জাপানকে নিয়ে বেশি ভাবতে চান না, ‘জাপান ছাড়াও আমাদের গ্রুপে ভিয়েতনাম আছে, নেপাল আছে। ভিয়েতনামও খুব শক্তিশালী দল, ওরাও বিশ্বকাপে খেলছে। ওদের নিয়েও ভাবতে হবে। আমাদের শুধু নিজেদের খেলাটা খেলতে হবে। প্রস্তুতিটা ভালো নিতে হবে।’
জাপানের নাগোয়ায় বেড়ে উঠেছেন সুমাইয়া। মায়ের নাম মাতসুশিয়া তোমোমি। মা–বাবার সঙ্গে বাংলাদেশেও থেকেছেন। জাপানে থাকতেই ফুটবলের প্রতি অনুরাগ। তবে সুমাইয়ার সবচেয়ে বড় পাওয়া বাংলাদেশের হয়ে খেলাটাই, ‘বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পেরে আমি খুবই গর্বিত। আমি কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আশা করি, ফল পাব। আমার সতীর্থরা সবাই আমাকে খুব সহযোগিতা করছে। ওদের সঙ্গ আমি উপভোগ করি।’
অনুশীলনে বরাবরই খুব সিরিয়াস সুমাইয়া। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও চোখেমুখে তাঁর ফুটে ওঠে প্রত্যয়। সেই প্রত্যয় বাংলাদেশের জার্সির প্রতি ভালোবাসাই।
বাংলাদেশের লাল-সবুজ জার্সি পরে খেলার বিনিময়ে কোনো কষ্টকেই কষ্ট মনে হয় না এই ‘জাপানি’ মেয়ের, ‘ছয় মাস ধরে ক্যাম্পে আছি। আমি জানি, আমাকে পরিশ্রম করে যেতে হবে। নেপালের বিপক্ষে কিছুদিন আগে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেকের সময় খুব গর্ব হয়েছিল। সেই গর্বের কোনো তুলনা নেই। কঠোর অনুশীলন করে এখন নিজেকে বাংলাদেশ দলে নিয়মিত বানানোই আমার লক্ষ্য।’
বাংলাটা বেশ ভালোই বলেন। কথা বলেন ধীরেসুস্থে। লাজুক কণ্ঠে বলা কথাগুলোই যেন তাঁর চ্যালেঞ্জ জয় করার প্রতিশ্রুতি।