মাত্র ৪ মিনিটের এক ঝড়। আর তাতেই এলোমেলো ব্রাজিল। ২০২৬ বিশ্বকাপের দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে কলম্বিয়ার বিপক্ষে গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লির গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ব্রাজিল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র ৪ মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল করে লুইস দিয়াজ কলম্বিয়াকে এনে দিয়েছেন ২-১ ব্যবধানের দারুণ এক জয়। এ জয়ে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বের পয়েন্ট তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে কলম্বিয়া।
সময়টা খুব খারাপ যাচ্ছিল দিয়াজের। লিভারপুলের এই তারকার বাবা মানুয়াল দিয়াজ ও তাঁর মা ১২ দিন আগে অপহরণের শিকার হয়েছিলেন। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় কেটেছে দিয়াজের প্রতিটি ক্ষণ, প্রতিটি দিন। মাকে আগেই ছেড়ে দিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। তবে তাঁর বাবাকে উদ্ধার করা হয় গত ১০ নভেম্বর। সেই দিয়াজই কলম্বিয়ার জয়ের নায়ক বনে গেলেন কাল।
বারানকুইলার এস্তাদিও মেত্রোপলিতানোয় মার্তিনেল্লির গোলে ব্রাজিল তখন এগিয়ে ১-০ গোলে। ম্যাচের ৭৫ মিনিটে দলকে সমতায় ফেরান দিয়াজ। এরপর ৭৯ মিনিটে করেন জয়সূচক গোল। দুটি গোলই এসেছে দিয়াজের হেড থেকে। গ্যালারিতে বসে ছেলের কীর্তি দেখেছেন লুইস দিয়াজের বাবা। কলম্বিয়ার জার্সিতে ওই সময় তাঁকে আবেগপ্রবণ দেখাচ্ছিল। ছেলের আন্তর্জাতিক ফুটবল তারকা হয়ে ওঠার পেছনে দিয়াজের বাবার আছে বড় অবদান। বারানকাসের একমাত্র ফুটবল একাডেমিটির প্রতিষ্ঠাতা তিনিই। সেখান থেকেই লুইজ দিয়াজের বেড়ে ওঠা এবং ফুটবলার হয়ে ওঠা। এই জয় ২০২৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো বিশ্বকাপের চূড়ান্তপর্বের পথে কলম্বিয়াকে এগিয়ে রাখল অনেকটাই।
ব্রাজিলের জন্য রাতটা ভুলে যাওয়ার মতোই। ম্যাচের ২৭ মিনিটে চোটে পড়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। ব্রাজিল এর আগের দুটি ম্যাচে ভেনেজুয়েলার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করার পর উরুগুয়ের কাছে ২-০ গোলে হেরেছিল। চোটের কারণে নেইমারকে ছাড়াই কলম্বিয়ার বিপক্ষে খেলা ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নেমেছিল ব্রাজিল। শেষ পর্যন্ত আরও একটি হার সঙ্গী হয়েছে তাদের।
ম্যাচের ৪ মিনিটে ব্রাজিলকে এগিয়ে দেওয়া মার্তিনেল্লির গোলটিতে সহায়তা করেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়া কলম্বিয়া প্রতি আক্রমণে ব্রাজিলকে বিপদে ফেলেছে অনেকবারই। লুইস দিয়াজ নিজেও খেলছিলেন চমৎকার। কিন্তু গোলের দেখা পাচ্ছিলেন না। ব্রাজিলের গোলকিপার আলিসন বেকারও খেলেছেন ভালো। ৭৫ মিনিটে আসপ্রিয়ার ক্রস থেকে হেড করে কলম্বিয়াকে সমতায় ফেরান দিয়াজ। দ্বিতীয় গোলটি আসে হামেস রদ্রিগেজের ক্রস থেকে দিয়াজের আরও একটি হেডে।