ফুটবলে সৌদি আরবের বিপুল অর্থ ব্যয় নিয়ে ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলোর ভয় পাওয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্ডার সেফেরিন। ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই প্রধানের মতে, ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে থাকা ফুটবলারদের জন্য অর্থ ব্যয় করে ভুল করছে সৌদি আরব।
গত ছয় মাসের মধ্যে সৌদি আরবের আল নাসর ও আল ইত্তিহাদ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও করিম বেনজেমাকে দলে ভিড়িয়েছে। বিভিন্ন সূত্র অনুসারে রোনালদো বছরে ২০ কোটি ইউরোর আশপাশে এবং বেনজেমা বছরে ১০ কোটি ইউরোর বেশি পাবেন। এ দুজনের পাশাপাশি লিওনেল মেসি ও লুকা মদরিচকেও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। ২০০৮ সালের পর থেকে সব কটি ব্যালন ডি’অর পুরস্কার ভাগাভাগি করে নিয়েছেন এ চারজন। তাঁদের কারও বয়সই ৩৫-এর কম নয়।
মেসি-মদরিচ সৌদিকে ‘হ্যাঁ’ না বললেও আরও বেশ কয়েকজন ফুটবলার মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে যেতে পারেন বলে আভাস পাওয়া গেছে। আর এটি সম্ভব হচ্ছে দেশটির পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (পিআইএফ) থেকে ক্লাবগুলোর জন্য বিপুল অর্থ খরচের কারণে। পিআইএফের চেয়ারম্যান সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান।
ইউরোপ থেকে খেলোয়াড়দের সৌদিমুখী হওয়ায় উয়েফার ভীত হওয়ার কারণ আছে কি না—রোববার এমন একটি প্রশ্ন করা হয়েছিল উয়েফা সভাপতি সেফেরিনকে। নেদারল্যান্ডসের সরকারি সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান এনওএসের এ প্রশ্নের জবাবে সরাসরিই ‘না, না, না’ বলেছেন সেফারিন।
কেন ভীত নন, সেই ব্যাখ্যায় সেফেরিন বলেছেন, ‘আমি মনে করি, এটা সৌদি আরবের ফুটবলের ভুল। এটা তাদের জন্য কীভাবে সমস্যা জানেন? কারণ, তাদের এখন একাডেমিতে বিনিয়োগ করা উচিত, কোচ আনা উচিত, উচিত নিজেদের খেলোয়াড় তৈরি করা। যেসব খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ার শেষ প্রান্তে, তাদের কিনে ফুটবল কাঠামোর উন্নতি করা যাবে না। এই ভুল চীনও করেছিল, শেষবেলায় থাকা খেলোয়াড়দের কিনেছিল যখন।’
২০১২ সালের দিকে চাইনিজ লিগের দলগুলো ইউরোপে খেলা শীর্ষস্থানীয় খেলোয়াড়দের দলে ভিড়িয়েছিল। এর মধ্যে দিদিয়ের দ্রগবা, নিকোলাস আনেলকা, ফ্রেদরিক কোনাতেরা ছিলেন। তবে নামী খেলোয়াড়দের দলে টেনেও লিগ বা জাতীয় দল পর্যায়ে খুব একটা এগোতে পারেনি চীন।
সৌদি প্রো লিগের দলগুলো ইউরোপে সেরা সময় পার করা খেলোয়াড়দের কিনছে উল্লেখ করে সেফেরিন বলেন, ‘সেখানে যাওয়া একজন শীর্ষ খেলোয়াড়ের নাম বলেন তো আমাকে, যার বয়স বেশি নয় কিংবা ক্যারিয়ার কেবল শুরু হয়েছে। এখানে (ইউরোপে) টাকাটাই সব নয়। ফুটবলাররা সেরা প্রতিযোগিতায় খেলতে চায়, সেরা প্রতিযোগিতায় জিততে চায়।’
সৌদি আরবের কারণে দর্শক আকর্ষণ করা কিছু খেলোয়াড়কে উয়েফা হারিয়ে ফেলছে কি না—এমন একটি আলোচনা চালু আছে ইউরোপে। তবে উয়েফা সভাপতি বিষয়টিকে দেখছেন ভিন্ন পরিপ্রেক্ষিতে, ‘আমরা কাউকে হারিয়ে ফেলিনি। ওরা এখনো ফুটবল খেলছে। ক্যারিয়ারের শেষবেলায় কিছু খেলোয়াড় অন্যত্র গিয়ে কিছু অর্থ আয়ের চেষ্টা করেই থাকে।’