ব্রাজিলের প্রয়াত ফুটবল–কিংবদন্তি পেলের মোট সম্পদের ৩০ শতাংশ পাবেন তাঁর স্ত্রী মার্সিয়া সিবেলে আওকি। পেলের উইল অনুযায়ী তথ্যটি জানিয়েছেন আওকির আইনজীবী লুইজ কিগনেল। সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, পেলের করে যাওয়া উইলে আরও এক নারীরও উল্লেখ আছে, যিনি তাঁর কন্যা হতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। পেলে বেঁচে থাকতে তাঁকে স্বীকৃতি দেননি।
ব্রাজিলের গুয়ারুজায় পেলের একটি বাসভবন আছে। সেটি পাবেন তাঁর তৃতীয় স্ত্রী আওকি। সাও পাওলোর সুমদ্রঘেঁষা এ বাড়িতে একসঙ্গে থাকতেন পেলে ও আওকি।
গত ২৯ ডিসেম্বর ৮২ বছর বয়সে মারা যান ব্রাজিলের হয়ে তিনবার বিশ্বকাপজয়ী পেলে। তাঁর রেখে যাওয়া সম্পদের পুরো তালিকা এখনো প্রস্তুত করা হয়নি বলে জানিয়েছেন আইনজীবী লুইজ কিগনেল। এর মধ্যে পেলের অন্যান্য বাড়ি আর তাঁর ব্র্যান্ডও আছে। কিংবদন্তির সম্পদের বাকি ৭০ শতাংশ তাঁর সন্তানেরা পাবেন। এর মধ্যে স্বীকৃতি না পাওয়া সেই কন্যাও আছেন।
এএফপিকে কিগনেল বলেছেন, ‘আরেকজন কন্যাসন্তান আছেন, এমন ইঙ্গিত তিনি (পেলে) দিয়ে গেছেন। ডিএনএ পরীক্ষার ওপর তাঁর পরিচিতি পাওয়া নির্ভর করছে। করোনাভাইরাস মহামারি ও তাঁর (পেলে) স্বাস্থ্যের কথা ভেবে তখন এটা করানো হয়নি।’
কিগনেল জানিয়েছেন, সেই নারী একজন ব্রাজিলিয়ান এবং পেলের কন্যা হিসেবে স্বীকৃতি পেতে তিনি আইনি ব্যবস্থা নিয়েছেন। সাও পাওলোর আদালত ২০২২ সালে পেলের ডিএনএ পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিলেন। পেলের অবর্তমানে এখন তাঁর সাত স্বীকৃত সন্তানের মধ্যে যেকোনো একজনের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে।
ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ইওএল জানিয়েছে, পেলে ১ কোটি ৭০ লাখ ডলার মূল্যমানের সম্পদ রেখে গেছেন। তাঁর সন্তানেরা এই সম্পত্তির সরাসরি উত্তরাধিকার। পেলে ৭০ বছর বয়সের পর আওকিকে বিয়ে করায় প্রয়াত স্বামীর সরাসরি উত্তরাধিকার তিনি হতে পারেননি। পেলে নিজেই তাঁর তৃতীয় স্ত্রীকে সম্পদের ৩০ শতাংশ দেওয়ার উইল করে গেছেন।
পেলে জীবদ্দশায় তিনবার বিয়ে করেছেন। এর বাইরেও তাঁর বিভিন্ন নারীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল। ১৯৬৬ সালে পেলে রোজমেরিকে বিয়ে করেন। সে ঘরে দুই কন্যা ও এক ছেলে আছে। ১৯৮২ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। ১৯৯৪ সালে মনোবিদ আসিরিয়া লেমোসকে বিয়ে করেন পেলে। সে ঘরে যমজ সন্তানের দেখা পান পেলে। ১৯৬৪ সালে বাসার পরিচারিকা আনিজিয়া মাচাদোর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে পেলের। সেখানে এক কন্যাসন্তানের জন্ম হলেও পেলে তাঁর স্বীকৃতি দিতে চাননি।
পরে আদালতের নির্দেশে ডিএনএ পরীক্ষা করানোর পর নিশ্চিত হওয়া গেছে, আনিজিয়ার কোলে জন্ম নেওয়া সান্দ্রা মাচাদো পেলেরই কন্যা। ক্যানসারে ভুগে ২০০৬ সালে সেই কন্যা মারা যান।
এই ছয় সন্তানের বাইরেও পেলের আরেকজন কন্যাসন্তান আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম ক্লারিন জানিয়েছে, পেলে এ বিষয়ে প্রমাণও রেখে গেছেন। আর সম্পত্তি বণ্টনের হিসাব দেখেও ব্যাপারটি আন্দাজ করে নেওয়া যায়।
আওকি ৩০ শতাংশ পাওয়ার পর পেলের বাকি ৭০ শতাংশ সম্পদ তাঁর সন্তানদের মধ্যে ১০ শতাংশ করে বণ্টন করা হবে। সন্তান ৬ জন হলে ১০ শতাংশ করে সবাইকে বণ্টনের পরও ১০ শতাংশ থেকে যায়। সেটি তাহলে কার? স্বীকৃতি না পাওয়া সেই কন্যাসহ ৭ সন্তান বলেই হয়তো পেলে সবাইকে ১০ শতাংশ করে উইল করে গেছেন।