ইস্পাহানি-প্রথম আলো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান আজ হয়ে গেল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে
ইস্পাহানি-প্রথম আলো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান আজ হয়ে গেল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে

ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে হবে ইস্পাহানি–প্রথম আলো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল

প্রথমবারের মতো ইস্পাহানি-প্রথম আলো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট সফলভাবে শেষ হয়েছে গত মাসে। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে টুর্নামেন্টটি আয়োজনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আজ সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে ইস্পাহানি-প্রথম আলো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আয়োজক প্রথম আলো ও পৃষ্ঠপোষক ইস্পাহানি গ্রুপ এই পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করে।

দেশের ৩২টি বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে গত ১৪ জুলাই চট্টগ্রামে শুরু হয়েছিল এবারের টুর্নামেন্ট। কুমিল্লা হয়ে যা শেষ হয়েছে ঢাকায়। ঢাকা পর্বের খেলা হয়েছে সাভারের বিরুলিয়ায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মাঠে। ৩০ জুলাই ফাইনালে ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে গণ বিশ্ববিদ্যালয়। নকআউটভিত্তিক টুর্নামেন্টটি সাড়া ফেলেছে বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে।

এবারের আয়োজনের পর্যালোচনা ও ভবিষ্যতে কী করা যায়—এ নিয়ে আলোচনা করতে আজকের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। স্বাগত বক্তব্যে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান প্রথমবারের আয়োজন সফল করার জন্য সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। পৃষ্ঠপোষক ইস্পাহানি গ্রুপ ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিকে বিশেষ ধন্যবাদ দেন তিনি।

বক্তব্য রাখছেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান

মতিউর রহমান বলেন, ‘আমরা কোনো আয়োজন শুরু করলে সেটা অব্যাহত রাখতে চাই। ইস্পাহানি-প্রথম আলো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় টুর্নামেন্টও ব্যতিক্রম নয়। আমরা আগামী বছর আরও বড় পরিসরে এটি আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়েছি। প্রথমবার তিনটি অঞ্চলে খেলা হয়েছে। আগামী বছর আমরা খুলনা ও রাজশাহীতেও এই টুর্নামেন্ট নিতে চাই, যাতে আরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় খেলতে পারে।’ আগামী বছরের আয়োজনের সঙ্গেও ইস্পাহানি সম্পৃক্ত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

ইস্পাহানি গ্রুপের চেয়ারম্যান মির্জা সালমান ইস্পাহানি তাতে সম্মতি দিয়েছেন। অনেক বছর ধরে ক্রীড়াঙ্গনে পৃষ্ঠপোষণ করে আসা ইস্পাহানি গ্রুপ আন্তবিশ্ববিদ্যালয় টুর্নামেন্টের পৃষ্ঠপোষকতা করতে পেরে খুবই খুশি বলে জানান তিনি। মতিউর রহমানের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে আগামীতে এই টুর্নামেন্ট আরও বড় পরিসরে আয়োজনের ওপর জোর দিয়ে সালমান ইস্পাহানি বলেন, ‘প্রথমবার ভালোভাবে টুর্নামেন্টটি হয়েছে। আমরা চাইব এর কলেবর আরও বাড়ুক। খুলনা, রাজশাহী, কক্সবাজার, দিনাজপুরেও আগামীতে খেলা হতে পারে। প্রথম আলো আমাদের এই টুর্নামেন্টের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার সুযোগ দেওয়ায় তাদের অনেক ধন্যবাদ।’

প্রথমবারের আয়োজন নিয়ে সন্তুষ্টি ঝরেছে ইস্পাহানি গ্রুপের পরিচালক ইমাদ ইস্পাহানি, প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক (বিপণণ) ওমর হান্নানের কণ্ঠেও। তাঁরা সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে কিছু সময় উপস্থিত ছিলেন ইস্পাহানি গ্রুপের পরিচালক জাহিদা ইস্পাহানি।

প্রথমবার টুর্নামেন্টটি ভালোভাবে আয়োজন করে সন্তুষ্ট আয়োজকেরা। পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে একটি মুহূর্ত

প্রথম আলোর প্রধান ক্রীড়া সম্পাদক উৎপল শুভ্রর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইস্পাহানি-প্রথম আলো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবলের টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক কোচ গোলাম সারোয়ার টিপু। পরিচ্ছন্ন, জমজমাট ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি টুর্নামেন্ট আয়োজনের তৃপ্তি ঝরেছে তাঁর কণ্ঠে, ‘কয়েকটি ম্যাচ মাঠে গিয়ে দেখেছি। খেলার মান বেশ ভালো ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতা নিয়ে অংশ নিয়েছেন। ফলে প্রথমবারের এই আয়োজন সফল ও সার্থক হয়েছে।’ প্রথমবার যেভাবে হয়েছে, আগামীতে তার চেয়ে আরও বেশি পেশাদার উপায়ে টুর্নামেন্টটি করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন টুর্নামেন্টের টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য এম লুৎফুর রহমান এই টুর্নামেন্টের ঢাকা পর্বের ভেন্যু হতে পেরে তাঁর প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন, ‘আগামীতেও আমরা যেকোনোভাবেই হোক এই টুর্নামেন্টের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে চাই।’ রানার্সআপ হওয়া ফারইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রকীব আহমদ বলেন, ফাইনালে হেরে যাওয়ায়ও তিনি মন খারাপ করেননি। কারণ, নির্দিষ্ট কোনো দলের জয়–পরাজয় ছাপিয়ে এই টুর্নামেন্টে ফুটবলেরই জয় হয়েছে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন টুর্নামেন্ট কমিটির সদস্য জাতীয় দলের ফুটবলার ইমতিয়াজ সুলতান জনি, শফিকুল ইসলাম মানিক, ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব, ক্রীড়া লেখক ইকরামউজ্জমান, পাক্ষিক ক্রীড়াজগৎ সম্পাদক দুলাল মাহমুদ, টুর্নামেন্টের প্রচার সহযোগী এটিএন বাংলার হেড অব প্রোগ্রাম তাশিক আহমেদ।

অনুষ্ঠানে এসেছিলেন ইস্পাহানি-প্রথম আলো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ও জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক কোচ গোলাম সারোয়ার টিপু

অনুষ্ঠানে ‘যে আগুন ছড়িয়ে গেল সবখানে’ শিরোনামে কলসিন্দুরের নারী ফুটবলারদের নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়। প্রথম আলোর ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তৈরি করা হয়েছিল এটি। এবারের টুর্নামেন্ট নিয়ে ছোট্ট একটি ভিডিও দেখানো হয়। পত্রিকা ও অনলাইন ছাড়া সমাজের নানা ক্ষেত্রে অবদান রাখতে প্রথম আলোর বিভিন্ন কর্মসূচিও তুলে ধরা হয় অনুষ্ঠানে।