২৬ অক্টোবর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচন। এ নির্বাচনে যাঁরা ভোট দেবেন, সেই কাউন্সিলরদের নাম জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল সোমবার। সেই দিন পর্যন্ত জমা পড়েছিল ১৩৭টি আবেদন। এই আবেদনগুলোর মধ্যে ৪টি নিয়ে শুনানি ছিল আজ বাফুফে ভবনে। সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হওয়া এই শুনানি চলেছে ১০ ঘণ্টা ধরে। শুনানি শেষে কাউন্সিলরশিপ থেকে বাদ পড়েছে ৪ জেলা। এই জেলাগুলো হচ্ছে ফেনী, গোপালগঞ্জ, লালমনিরহাট ও শেরপুর। এর আগে মামলা থাকায় কাউন্সিলরশিপের আবেদন গ্রহণ করা হয়নি দুই জেলার—যশোর ও সাতক্ষীরা। আজ চার জেলা বাদ পড়ায় এবারের নির্বাচনে মোট কাউন্সিলর, অর্থাৎ ভোটের সংখ্যা ১৩৩।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অবসরপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জকরিয়াকে বাফুফে নির্বাচনের কাউন্সিলরশিপ নিয়ে অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়ক মনোনীত করা হয়েছিল। জকরিয়ার সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের আরও দুই সাবেক কর্মকর্তা। তাঁরা অভিযোগের বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে ফেনী, গোপালগঞ্জ, শেরপুর ও লালমনিরহাট ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (ডিএফএ) ভোটাধিকার বাতিল ঘোষণা করেন।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাফুফের নির্বাহী কমিটির সভায় ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হবে। কাউন্সিলরশিপ পর্যালোচনার বিষয়ে মোহাম্মদ জকরিয়া বলেন, ‘আমরা গঠনতন্ত্র, সই, জাতীয় পরিচয়পত্র দেখেছি। পাশাপাশি দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।’
এদিকে এফসি উত্তরবঙ্গ, সিদ্দিক বাজার, কুড়িগ্রাম জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের কাউন্সিলরশিপ নিয়েও অভিযোগ ছিল। এই সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রেরিত নামগুলো অবশ্য বৈধতা দিয়েছে পর্যালোচনা কমিটি।
নাম জমা পড়া ১৩৭ কাউন্সিলরের মধ্যে আপত্তি উঠেছিল ১৭ জনকে নিয়ে। তবে বাফুফে গ্রহণ করেছিল ৫টি আপত্তি। এর মধ্যে একটি আপত্তি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। মোট ৪টি আপত্তির বিষয়ে শুনানিতেই ব্যয় হয়েছে ১০ ঘণ্টার মতো।
১৩৩ কাউন্সিলরশিপের মধ্যে আছে ৮ বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন, ৬২ জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন, প্রিমিয়ার লিগের ১০ ক্লাব, বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের ৫ ক্লাব, প্রথম বিভাগের ১৮ ক্লাব, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগের ৮ টি করে ক্লাব, নারী লিগের ৪ শীর্ষ দল, ৬ বিশ্ববিদ্যালয়, ৫ শিক্ষা বোর্ড। রেফারি, কোচেস অ্যাসোসিয়েশন এবং মহিলা ক্রীড়া সংস্থার ভোট একটি করে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ১০ ক্লাব থেকে যাঁদের নাম কাউন্সিলর হিসেবে জমা পড়েছে, তাঁরা হলেন কাজী ইনাম আহমেদ (ঢাকা আবাহনী), গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর (মোহামেডান), তরিকুল ইসলাম চৌধুরী (বসুন্ধরা কিংস), সাব্বির আহমেদ আরিফ (ব্রাদার্স), শাহীন আহমেদ (ফর্টিস এফসি), শেখ মোহাম্মদ রেজাউল হায়দার (বাংলাদেশ পুলিশ), তরফদার রুহুল আমিন (চট্টগ্রাম আবাহনী), মাহবুবুর রহমান শাহীন (ঢাকা ওয়ান্ডারার্স), মোস্তাফিজুর রহমান মাইনু (ইয়ংমেন্স ক্লাব ফকিরেরপুল), শহীদুল ইসলাম (রহমতগঞ্জ এমএফএস)।
এবারের নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাফুফের বর্তমান সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন। এরই মধ্যে সভাপতি পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন তরফদার রুহুল আমিন ও সাবেক সহসভাপতি তাবিথ আওয়াল। তরফদারের নাম চট্টগ্রাম আবাহনী থেকে কাউন্সিলর হিসেবে জমা পড়লেও তাবিথ কাউন্সিলর হননি। সভাপতি পদে নির্বাচন করতে অবশ্য কাউন্সিলরশিপ থাকার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।