মেসি ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবল–উন্মাদনা বেড়েছে
মেসি ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবল–উন্মাদনা বেড়েছে

যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলকে বদলে দিতে মেসি যথেষ্ট নন

লিওনেল মেসিকে পেয়ে ইন্টার মায়ামির খেলায় যেমন বৈপ্লবিক উন্নতি হয়েছে, তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলও আমূল বদলে গেছে। মাঠের বাইরে পরিস্থিতি আরও উন্মাতাল। পুরো দেশেই পড়েছে মেসি-প্রভাব। তাঁর সৌজন্যে মার্কিন মুলুকে ফুটবলের বাজারও ব্যাপক প্রসারিত হয়েছে।

তবে নেদারল্যান্ডস কিংবদন্তি রুদ খুলিত মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে মেসি যথেষ্ট নন। দেশটিকে নিজেদেরই তারকা খেলোয়াড় তৈরি করতে হবে।

নেদারল্যান্ডসের ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সাফল্য ১৯৮৮ ইউরো জয়। সেই দলের অধিনায়ক ছিলেন খুলিত। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপক্ষে ফাইনালে গোলও করেছিলেন সাবেক এসি মিলান তারকা। এখন পর্যন্ত সেটিই হয়ে আছে ডাচদের একমাত্র শিরোপা।

নেদারল্যান্ডস কিংবদন্তি রুদ খুলিত

৬১ বছর বয়সী খুলিত বর্তমানে ফুটবল বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করছেন। সম্প্রতি অনলাইন বেটিং ওয়েবসাইট ‘গ্যাম্বলিং জোন’কে তিনি একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন।

সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমার কাছে মনে হয় যুক্তরাষ্ট্রের নিজেদের নায়ক প্রয়োজন। এটাই আসল কথা। সর্বশেষ তারা পুলিসিককে পেয়েছে। তবে (পুলিসিকের মানের খেলোয়াড়) নিয়মিত আসছে না। আরও ভালো করতে হলে স্থানীয় খেলোয়াড় তৈরি করতে হবে। মেসির আগমন আকর্ষণীয় ব্যাপার। কারণ, মেসি মেসিই। বিশেষ করে সেখানে (মায়ামিতে) স্প্যানিশ ভাষাভাষীর অনেকে থাকায় তাকে নিয়ে আগ্রহ আরও বেশি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থানীয় খেলোয়াড়দের তারকা বানানো। তাদের এমন একজন খেলোয়াড়ের প্রয়োজন, যে ইউরোপে সত্যিকার অর্থেই ভালো করেছে।’

খুলিতের মতে, বড় অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তারকা খেলোয়াড় নিয়ে আসা মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) জন্য ইতিবাচক ব্যাপার হলেও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভেবে স্থানীয় খেলোয়াড় তৈরির বিকল্প নেই, ‘এটি এমন কিছু, যা তারা প্রথমে বেকহামকে আনার মাধ্যমে (২০০৭ সালে ডেভিড বেকহাম রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে লস অ্যাঞ্জেলেস গ্যালাক্সিতে নাম লেখান) করেছিল। এটা যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবলের জনপ্রিয়তা বাড়াতে ভূমিকা রেখেছিল। এবার মেসিকে দিয়ে জনপ্রিয়তা বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের শিশুদের বলার জন্য নিজস্ব নায়ক থাকা প্রয়োজন। যাতে তারা বলতে পারে, “আরে, আমারও (বড় মাপের ফুটবলার হওয়ার) সুযোগ আছে”।’

যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলের অভিষেক মৌসুমটা ভালোই কেটেছে মেসির। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৪ ম্যাচে করেছেন ১১ গোল, সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ৫টি। তাঁর হাত ধরেই লিগস কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বেকহামের মালিকানাধীন ইন্টার মায়ামি, যা ক্লাবটির ইতিহাসে প্রথম শিরোপা।

মেসির হাত ধরেই প্রথম ট্রফির স্বাদ পেয়েছে ইন্টার মায়ামি

যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল মৌসুম শেষ হওয়ায় ও আপাতত আর্জেন্টিনার খেলা না থাকায় লম্বা ছুটি কাটাচ্ছেন মেসি। আগামী ১৯ জানুয়ারি সালভাদরের বিপক্ষে প্রাক্‌-মৌসুম প্রস্তুতি দিয়ে মাঠে ফিরতে পারেন মেসি। প্রাক্‌-মৌসুম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ফেব্রুয়ারিতে এশিয়া সফরও করবে তাঁর দল ইন্টার মায়ামি।