ট্রফি হাতে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি
ট্রফি হাতে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি

বিশ্বজয়ের পর মেসি

‘কত স্বপ্ন দেখেছি, কত আকুলভাবে চেয়েছি, অবশেষে আমরা পেরেছি’

কখনো কখনো ১ ভাগ অপূর্ণতা যেমন ৯৯ ভাগ পূর্ণতাকে আড়াল করে দেয়, লিওনেল মেসির জন্য বিশ্বকাপও ছিল অনেকটা তেমনই। এই একটা ট্রফি ছাড়া ফুটবল–ক্যারিয়ারের সম্ভাব্য সবই ছিল তাঁর শোকেসে। কিন্তু একটা বিশ্বকাপের হাহাকার শুধু দীর্ঘই হচ্ছিল।

আট বছর আগে একবার ফাইনালে উঠলেও ট্রফির পাশ দিয়ে হেঁটে আসতে হয়েছে। তারপর তো কোপা আমেরিকায় টানা দুটি ফাইনাল হেরে অবসর, ফিরে আসা, ২০১৮ বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায়, ওদিকে আবার এক এক করে সাতটি ব্যালন ডি’অর জিতে ফেলা—কত উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছে দিন।

উত্থাপ-পতন তো ছিল কাতারেও। টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থেকে অন্যতম ফেবারিট হিসেবে খেলতে নামা, এরপর প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের কাছে হার। আবার কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে দুই গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরও ম্যাচ চলে গেল টাইব্রেকারে, যার পুনরাবৃত্তি ঘটল ফাইনালেও।

দুই দফায় এগিয়েও মুহূর্তের মধ্যে আবার সব ধসে যাওয়ার শঙ্কা। তবে অবশেষে এসেছে মধুরেণসমাপয়েতের ক্ষণ। ৩৫ বছর বয়সে পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলতে এসে মেসির হাতে উঠল সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত ট্রফি। ঘুচল সেই এক ভাগ অপূর্ণতাও।

কত হাহাকার আর আক্ষেপের রজনী পার করে এল বিশ্বকাপ, ট্রফি হাতে তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অনুসারীদের সে কথাই জানালেন মেসি। ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লিখেছেন, ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য ওয়ার্ল্ড! কতবার এই স্বপ্নটা আমি দেখেছি, কী আকুলভাবেই না চেয়েছি। এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না।’ বিশ্বকাপ জয়ে পরিবারের পাশাপাশি যাঁরা বিশ্বাস রেখেছেন, তাঁদেরও ধন্যবাদ দিয়েছেন মেসি।

বিশ্বকাপ জয়ের পথে ফাইনালে ২টিসহ মোট ৭টি গোল করেছেন মেসি, সতীর্থদের করিয়েছেন আরও ৩টি। ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জয়ে ডিয়েগো ম্যারাডোনাও অবদান রেখেছিলেন ১০ গোলে। তবে ৩৬ বছরের অপেক্ষা ঘোচানোর বিশ্বকাপে নিজের চেয়ে দলগত ভূমিকাকেই বড় করে দেখছেন মেসি।

লিখেছেন, ‘আমরা আর্জেন্টাইনরা আরেকবার প্রমাণ করেছি, একসঙ্গে লড়াই করে লক্ষ্য অর্জন করতে পারি। এই দলের মূল শক্তি একতা, ব্যক্তির ঊর্ধ্বে। প্রতিটি আর্জেন্টাইনের স্বপ্ন পূরণে সবাই লড়াই করে গেছি। অবশেষে আমরা পেরেছি। এগিয়ে চলো আর্জেন্টিনা। শিগগিরই সবার সঙ্গে দেখা হচ্ছে।’