শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের লোগো
শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের লোগো

‘শেখ জামাল, শেখ রাসেলের নামে ফুটবল ক্লাবে আপত্তি নেই সরকারের’

সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এ মৌসুমে কয়েকটি ক্লাব নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে। শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র তো গতকালই বাফুফে বরাবর চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, এ মৌসুমে তারা দল গঠন করবে না। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে নিয়েও শঙ্কা রয়েছে।

রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে এ দুটি ক্লাব থেকে নিজেদের আর্থিক বিনিয়োগ তুলে নিয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। মূলত এ দুটি ক্লাবের নাম পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুই ভাইয়ের নামে হওয়ার কারণেই এমনটি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে দেখা করে আজ বিষয়টি জানিয়েছেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন। তবে ক্রীড়া উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেছেন, নামের কারণে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ফুটবল লিগে খেলার ব্যাপারে সরকারের কোনো আপত্তি নেই।

বক্তব্য দিচ্ছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। আজ সকালে সচিবালয়ে

ইমরান হোসেন আজ বাফুফে ভবনে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এ দুটি ক্লাব যদি নিজেদের নাম পরিবর্তন করতে চায়, তাহলে সেটি তাদের ব্যাপার। তবে ক্রীড়া উপদেষ্টা মহোদয় বলেছেন, নামের কারণে তাদের দেশের ফুটবলে খেলতে কোনো সমস্যা নেই। ক্লাবগুলোকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তারও আশ্বাস দিয়েছেন উপদেষ্টা মহোদয়।’

আজ সকালে সচিবালয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ফুটবলের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন ইমরান হোসেন। এ মৌসুমে যে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে কয়েকটি ক্লাব খেলতে চাচ্ছে না, সেটিও তুলে ধরা হয়েছে উপদেষ্টার কাছে। সেখানে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ও শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব থেকে পৃষ্ঠপোষকের সরে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে সরকারের ভাবনাও জানিয়েছেন বাফুফে সাধারণ সম্পাদক, ‘উপদেষ্টা বলেছেন, পৃষ্ঠপোষক যেহেতু ক্লাবের ব্যাপার, তাই এটা নিয়ে যেন তারাই চেষ্টা চালায়।’

স্বাভাবিকভাবেই বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্লাবের নাম নিয়ে নিরাপত্তহীনতায় ভুগছে তারা। পৃষ্ঠপোষকও সরে গেছে। এ ক্ষেত্রে দুটি ক্লাবই নিজেদের নাম পরিবর্তনের কথা ভাবছে বলে জানা গেছে। ক্লাবগুলো যদি নাম পরিবর্তন করতে চায়, সে ক্ষেত্রে বাফুফে সাধারণ সম্পাদকের কথা, ‘এটা একটা প্রক্রিয়ার ব্যাপার। তাতে কিছু সময় লাগবে। তবে এ ব্যাপারে বাফুফের সহায়তা পাবেন তারা।’

বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন

এদিকে আজ বাফুফেতে সমবেত হয়েছিলেন বর্তমান ও সাবেক ফুটবলাররা। গতকাল বর্তমান ফুটবলাররা সাত দফা দাবি উপস্থাপন করেছেন। আজ তাঁদের সঙ্গে ছিলেন ওয়াসিম ইকবাল, শফিকুল ইসলাম মানিক, আলফাজ আহমেদ, ইমতিয়াজ আহমেদ নকীবদের মতো সাবেক তারকা ফুটবলাররা। যে খেলোয়াড়েরা এ মৌসুমে এরই মধ্যে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ও শেখ জামাল ধানমন্ডির সঙ্গে চুক্তি করে ফেলেছেন, তাঁরা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন।

সাবেক ফুটবলার শফিকুল ইসলাম মানিকের কথা, ‘আমরা খেলোয়াড়দের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে এসেছি। আমরা চাই লিগটা যেন হয়। বর্তমানে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, তিন–চারটি ক্লাব খেলতে চাচ্ছে না। এটা হলে শতাধিক ফুটবলার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। প্রিমিয়ার লিগ ও দেশের ফুটবলকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে রেখে পৃষ্ঠপোষকদের এগিয়ে আসতে হবে।’

ফুটবলার আশরাফুল ইসলাম রানা জানান, গতকাল ফুটবলারদের একটি প্রতিনিধিদল বাফুফে সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিনের সঙ্গে দেখা করে ক্লাবগুলো যেন ফুটবল লিগে অংশ নেয়, সে ব্যাপারে তাঁর সহযোগিতা চান। বাফুফে সভাপতি তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন, তিনি তাঁর অবস্থান থেকে ক্লাবগুলোকে বোঝানোর চেষ্টা করবেন। ক্লাবগুলো যেন এ মৌসুমে দল গঠন করে, সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেবেন।