ছবিটা ২০১৪ সালের ব্যালন ডি’অর পুরস্কার মঞ্চে। তবে এ বছর মেসি–রোনালদোর কাউকেই এ মঞ্চে দেখা যাবে না
ছবিটা ২০১৪ সালের ব্যালন ডি’অর পুরস্কার মঞ্চে। তবে এ বছর মেসি–রোনালদোর কাউকেই এ মঞ্চে দেখা যাবে না

ব্যালন ডি’অর: ২১ বছর পর মেসি–রোনালদো অধ্যায়ের অবসান

ব্যালন ডি’অরে মনোনীতদের তালিকায় লিওনেল মেসি কিংবা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো থাকবেন—লম্বা সময় ধরে এটাই যেন ছিল অবধারিত নিয়ম। একসময় ব্যালন ডি’অরের সমার্থকই ছিলেন মেসি ও রোনালদো। ২০০৮ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত টানা ১০ বছর দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যেই থেকেছে ফুটবলে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ বর্ষসেরার এ পুরস্কার।

২০১৮ সালে এসে সে ধারায় ছেদ ফেলেন ক্রোয়েশিয়া ও রিয়াল মাদ্রিদ অধিনায়ক লুকা মদরিচ। তবে পুরস্কার না জিতলেও ২০০৩ সালের পর থেকে প্রতি বছরই মনোনীত ৩০ জনের তালিকায় ছিলেন মেসি কিংবা রোনালদো। কিন্তু গত রাতে ব্যালন ডি’অর পুরস্কারের আয়োজক ফ্রান্স ফুটবল ২০২৪ সালের জন্য ফুটবলারদের যে তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে নাম নেই ১৩ বার (মেসি ৮ বার, রোনালদো ৫ বার) বর্ষসেরার স্বীকৃতি পাওয়া দুই কিংবদন্তির।

এর মধ্য দিয়ে একটি অধ্যায়েরও যেন অবসান হলো। কারণ, মেসি–রোনালদো দুজনই বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে চলে এসেছেন। ইউরোপীয় ফুটবলের পাট চুকিয়ে দুজন পাড়ি জমিয়েছেন ভিন্ন মহাদেশে। আগামী বছরগুলোতে তাঁদের ব্যালন ডি’অরে বর্ষসেরা হওয়ার সম্ভাবনা খুব একটা নেই বলেই মনে করেন অধিকাংশ ফুটবল বিশ্লেষক। প্যারিসের থিয়েটার দু শাতেলেতে আগামী ২৮ অক্টোবর ব্যালন ডি’অর পুরস্কার দেওয়া হবে।

২০১৬ ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানে মেসি (ডানে) ও রোনালদো

এবার ব্যালন ডি’অর পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে গত বছরের ১ আগস্ট থেকে এ বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত পারফরম্যান্স বিবেচনা করা হবে। এ সময়ের মধ্যে মেসি দুটি শিরোপা জিতেছেন। চোটেও ভুগেছেন। জাতীয় দল আর্জেন্টিনার হয়ে কোপা আমেরিকা এবং ক্লাব ইন্টার মায়ামির হয়ে লিগস কাপ। আর রোনালদো এ সময়ের মধ্যে তাঁর দেশ পর্তুগালের হয়ে কিছুই জিততে পারেননি। ক্লাব আল নাসরের হয়ে জিতেছেন আরব ক্লাব চ্যাম্পিয়নস কাপ।

২০২৩–২৪ মৌসুমে মেসি আর্জেন্টিনা ও ইন্টার মায়ামির হয়ে ৪১ ম্যাচ করেছেন ৩১ গোল, অ্যাসিস্ট করেছেন ১৮টি। আর রোনালদো পর্তুগাল ও আল নাসরের হয়ে ৬৩ ম্যাচে করেছেন ৫৭ গোল, অ্যাসিস্ট ১৬ অ্যাসিস্ট।

তবে দুজনের এই পারফরম্যান্স ব্যালন ডি’অর কর্তৃপক্ষকে আকৃষ্ট করতে পারেনি। কেউ কেউ বলতে পারেন, মেসি–রোনালদো এখন যে লিগ দুটিতে খেলেন (মেজর লিগ সকার ও সৌদি প্রো লিগ), সেখানকার মান ইউরোপের শীর্ষ ৫ ঘরোয়া লিগের তুলনায় অনেক নিচে বলেই গোল ও অ্যাসিস্টগুলোকে বড় করে দেখা হয় না।

গত জুলাইয়ে কোপা আমেরিকার ফাইনালে পাওয়া চোটের সঙ্গে এখনো লড়াই চালিয়ে যাওয়া মেসিই বর্তমান ব্যালন ডি’অর জয়ী। গত বছর অষ্টমবারের মতো এই পুরস্কার জেতেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। ২০০৯ সালে প্রথমবার বর্ষসেরার স্বীকৃতি পাওয়া এই ফুটবলার প্রথমবার মনোনীতদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা করে নেন ২০০৬ সালে।

মেসি ও রোনালদোকে একবিংশ শতাব্দীর সেরা দুই ফুটবলার মনে করা হয়

আর রোনালদো প্রথমবার মনোনীত হন ২০০৪ সালে। মেসি সবচেয়ে বেশি ৮ বার ব্যালন ডি’অর জিতলেও মনোনীতদের তালিকায় রোনালদোই শীর্ষে। তিনি মনোনীত হয়েছেন ১৮ বার। সবচেয়ে বেশি ৬ বার রানারআপও হয়েছেন রোনালদো। মেসি দ্বিতীয় হয়েছেন ৫ বার।