ম্যানচেস্টার সিটি ছেড়ে গ্রীষ্মের দলবদলে আর্সেনালে যোগ দেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। এমিরেটসের দলটিতে শুরু থেকেই আলো ছড়াচ্ছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। এখন পর্যন্ত আর্সেনালের হয়ে ৮ ম্যাচ খেলে ৪টি গোল করেছেন, সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ৩ গোল। আর্সেনালে নতুন এক জেসুসকেই যেন দেখা যাচ্ছে। ক্লাব বদলানোকেই নিজের সাফল্যের রহস্য বলে মনে করছেন ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার।
জেসুসের দাবি, সিটিতে গার্দিওলার কৌশলের কারণে নিজের সেরাটা দিতে পারেননি। এখন মাঠে মুক্তবিহঙ্গের মতো নিজেকে মেলে ধরতে পারছেন। মিকেল আরতেতার অধীনে খেলতে পেরে আনন্দিত বলেও জানিয়েছেন ২৫ বছর বয়সী স্ট্রাইকার। ২০১৭ সালে পালমেইরাস থেকে ম্যান সিটিতে নাম লেখান জেসুস। ৬ বছরে ম্যান সিটির দারুণ সব সাফল্যের অংশও হয়েছেন।
ম্যান সিটির হয়ে ৪টি প্রিমিয়ার লিগসহ জিতেছেন ১০টি শিরোপা। ইতিহাদের দলটির হয়ে জেসুসের ব্যক্তিগত অর্জনও কম ছিল না। সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ম্যান সিটির হয়ে ২৩৬ ম্যাচ খেলে করেছেন ৯৬ গোল। এরপরও ইতিহাদের এই সময়টাতে নিজের পারফরম্যান্সে খুব একটা সন্তুষ্ট ছিলেন না জেসুস।
কেন তিনি ইতিহাদে খুশি ছিলেন না, এর কারণও বলেছেন ব্রাজিলের স্ট্রাইকার, ‘ব্যাপারটা ছিল, যেভাবে গার্দিওলা ফুটবল বোঝেন এবং তিনি যা পেতে চান। এরপর এটা আপনার ওপর যে আপনি সেটা মানবেন কি মানবেন না। যদি আপনি না মানেন, তাহলে সেখানেই শেষ এবং অন্য চ্যালেঞ্জ নিতে চলে যান।’
তাহলে এত দিন পর এসে কেন মনে হলো যে গার্দিওলার চাওয়ার সঙ্গে তাল মেলানো যাচ্ছে না! জেসুসের উত্তর, ‘আমি কিছু সময়ের জন্য মেনে নিয়েছিলাম, তবে এরপর এমন একটা মুহূর্ত আসে, যখন আমার মনে হয়েছে, আমি নিজের জন্য অন্য কিছু চাই। আমি তাঁকে ধন্যবাদ দিই, তিনিও বুঝতে পারেন। এরপর যে যার পথে এগিয়ে যাই। আর্সেনালের চিত্রটা একেবারে ভিন্ন। এখানে ফুটবলটা ভিন্ন, খেলোয়াড়েরা ভিন্ন, খেলার ধরনও ভিন্ন।’
সিটিতে গার্দিওলা স্ট্রাইকারদের চেয়ে মিডফিল্ডারদের বেশি গুরুত্ব দেন বলেও মনে করেন জেসুস। বিপরীতে আরতেতার অধীনে পাচ্ছেন অনেক বেশি স্বাধীনতা নিয়ে খেলার সুযোগ। জেসুস বলেছেন, ‘সিটিতে খেলাটা অন্য রকম ছিল। স্ট্রাইকাররা সেখানে খুব বেশি বল স্পর্শ করতে পারত না। আপনি খেলা দেখলেই বিষয়টা বুঝতে পারবেন। যখন বল ধরার সময় আসবে, তখন সেটা স্ট্রাইকাররা স্পর্শ করত না। কারণ, গার্দিওলা একজন মিডফিল্ডারের কাছাকাছি নিয়ে আসতেন। আচ্ছা, ঠিক আছে। আমি তখন পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিলাম।’
ক্লাব বদলানোর সিদ্ধান্তকে সঠিক মনে করেন জেসুস। যা কিনা হাসিও ফিরিয়ে এনেছে তাঁর মুখে, ‘আমি আর্সেনালের কৌশল নিয়ে আরতেতার সঙ্গে অনেক আলাপ করেছি। তিনি আমাকে জানেন, আমিও তাঁকে জানি। আমি বুঝলাম, তিনি আমার কাছ থেকে কী চান। এখন, মাঠে আমি মুক্ত। হাসিমুখে ফুটবল খেলতে পারছি এবং সব সময় নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’