ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার ডমিনিক লিভাকোভিচ
ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার ডমিনিক লিভাকোভিচ

ক্রোয়েশিয়ার সাবেক মন্ত্রীর ছেলের হাতে বিদায় ব্রাজিলের

দানিয়েল সুবাসিচের সুবাস পেয়েছে রাশিয়া বিশ্বকাপ। কাতার পাচ্ছে দমিনিক লিভাকোভিচের সুবাস। দ্বিতীয়জনকে আবারও আদর্শ মানেন প্রথমজন। আদর্শ আরও আছে—ইকার ক্যাসিয়াস ও ডেভিড দে হেয়া। তবে পেনাল্টি সেভের দক্ষতা ছাড়া ক্যাসিয়াস ও দে হেয়ার সঙ্গে লিভাকোভিচের মিল সামান্যই।

বরং সুবাসিচের সঙ্গে লিভাকোভিচের মিল বেশি। দুজনের নামের শেষে ‘চ’–বর্ণ দেখে নিশ্চয়ই আন্দাজ করে ফেলেছেন! হ্যাঁ, দুজনেই ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার। সুবাসিচ সাবেক, লিভাকোভিচ বর্তমান। দুজনের জন্মই ক্রোয়েশিয়ার জাদার শহরে। আর কাল রাতে ব্রাজিলকে টাইব্রেকারে বিদায় করার পথে এক বিশ্ব রেকর্ডে সুবাসিচের পাশেও বসেছেন লিভাকোভিচ।

আল রাইয়ানে কাল রাতে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে ব্রাজিলের সঙ্গে ১–১ গোলে ড্র করে ক্রোয়েশিয়া। এরপর টাইব্রেকারে ৪–২ গোলের জয়ে ব্রাজিলকে বিদায় করে ক্রোয়েশিয়াই উঠেছে সেমিফাইনালে। ম্যাচে ১১টি সেভ করেন ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার লিভাকোভিচ।

২০১৪ বিশ্বকাপে যুক্তরাস্ট্র–বেলজিয়াম ম্যাচে যুক্তরাস্ট্রের গোলকিপার টিম হাওয়ার্ডের ১৫ সেভের পর এটি বিশ্বকাপের এক ম্যাচে কোনো গোলকিপারের সর্বোচ্চ সেভের রেকর্ড।

ক্রোয়েশিয়াকে জেতানোর পর লিভাকোভিচের পেছনে তাঁর সতীর্থরা

তবে গত বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়াকে ফাইনালে তোলা সুবাসিচের নাম এই রেকর্ডে নেই। সেটি আরও বড় কিছু। কাল রাতের আগে বিশ্বকাপের এক টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ৪টি পেনাল্টি (শুটআউট) সেভ করার রেকর্ড ছিল শুধু আর্জেন্টিনার সের্হিও গয়কোচিয়ার এবং দানিয়েল সুবাসিচের।

১৯৯০ বিশ্বকাপে গয়কোচিয়া ও ২০১৮ বিশ্বকাপে সুবাসিচ—রেকর্ডবইয়ে দুটি নামের পাশে কাল রাতে নিজের নামও লেখেন লিভাকোভিচ। এই বিশ্বকাপে ৪টি পেনাল্টি সেভ করেছেন তিনিও।

ব্রাজিলের বিপক্ষে কাল টাইব্রেকারে রদ্রিগোর শট ঠেকান লিভাকোভিচ। তার আগে শেষ ষোলোয় জাপানের বিপক্ষেও টাইব্রেকারে ঠেকান তিনটি শট। অথচ দিনামো জাগরেবের ২৭ বছর বয়সী এই গোলকিপারের ফুটবলারই হওয়ার কথা ছিল না।

কূটনীতিবিদ হওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন লিভাকোভিচ। তাঁর বাবা দ্রাভকো লিভাকোভিচ পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হলেও ক্রোয়েশিয়ার অবকাঠামো মন্ত্রী ছিলেন। কূটনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কে পড়াশোনা করতে বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি হয়েছিলেন লিভাকোভিচ। তাঁর পরিবারের বেশির ভাগই উচ্চশিক্ষিত। দাদা ছিলেন চিকিৎসক, দাদি ইংরেজি ভাষার শিক্ষক।

লিভাকোভিচকে ঘিরে তাঁর সতীর্থদের উল্লাস। এমন উদ্‌যাপন লিভাকোভিচকেই মানায়

লিভাকোভিচের জন্ম যে শহরে—জাদার—সেখানকার স্থানীয় এক ক্লাবের সদস্য ছিলেন তাঁর দাদা। ছোটবেলায় বাস্কেটবলও খেলেছেন। তবে ৬ ফুট ১ ইঞ্চি উচ্চতাটা তিনি কাজে লাগিয়েছেন ফুটবলের পোস্টের নিচে। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে সুবাসিচ থাকায় রিজার্ভ বেঞ্চে ছিলেন লিভাকোভিচ। বিশ্বকাপের পর সুবাসিচ জাতীয় দল ছেড়ে দেওয়ার পর পোস্টে নিচে নিয়মিত হন লিভাকোভিচ।