সাফল্যের অবিশ্বাস্য এক সোনালি সময় পার করছেন লিওনেল মেসি। যেখানেই হাত দিচ্ছেন, সেখানেই মিলছে সাফল্য। বিশেষ করে গত বছর কাতার বিশ্বকাপ থেকে মেসি যেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জিতিয়ে পিএসজি অধ্যায় ভুলে মেসি যোগ দেন ইন্টার মায়ামিতে। সেখানে এসে কখনো শিরোপা না জেতা দলটিকে এনে দেন প্রথম ট্রফি।
মেসির হাত ধরে দলটি জেতে লিগস কাপের শিরোপা। এরপরই দলটিকে মেসি পৌঁছে দেন ইউএস ওপেন কাপের ফাইনালে। তবে এরপর জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচেও দারুণভাবে শুরু করেছে মেসির আর্জেন্টিনা। জাতীয় দলের মিশন শেষে মেসির মনোযোগ এখন ইন্টার মায়ামির পরের ম্যাচগুলোয়। বিশেষ করে বাকি ১৫ দিনে মেসির সামনে অপেক্ষা করছে দারুণ সব চ্যালেঞ্জ।
আগামী কয়েক দিনে ইন্টার মায়ামির হয়ে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মাঠে নামবেন মেসি, যেখানে ৪টি ম্যাচ এমএলএসে এবং অন্যটি হচ্ছে ইউএস ওপেন কাপ ফাইনাল। তবে বলে রাখা ভালো, আন্তর্জাতিক বিরতিতে এমএলএসের খেলা বন্ধ ছিল না এবং মেসিকে ছাড়াই একটি ম্যাচে জিতেছে ইন্টার মায়ামি। কানসাস সিটির বিপক্ষে ইন্টার মায়ামি সে ম্যাচে জিতেছে ৩-২ গোলে।
মেসি ফেরার পর ইন্টার মায়ামি প্রথম ম্যাচ খেলবে আটলান্টা ইউনাইটেডের বিপক্ষে। ইস্ট কনফারেন্সের সেরা দলগুলোর একটি হলো আটলান্টা। তাদের হারানো মোটেই সহজ হবে না। তবে প্লে-অফের স্বপ্নে মেসিরা এখন দারুণ উজ্জীবিত। এ ম্যাচে অবশ্য মেসির শুরু থেকে একাদশে থাকা নিয়ে সংশয় আছে। বিশেষ করে বলিভিয়ার বিপক্ষে মাঠে না নামতে পারার পর সেই শঙ্কা আরও বেড়েছে। তবে মেসি শুরু থেকে না খেললেও তাঁর উপস্থিতি নিশ্চিতভাবেই আত্মবিশ্বাস বাড়াবে সতীর্থদের।
চার দিন পর মেসি পরের ম্যাচ খেলবে টরন্টো এফসির বিপক্ষে। তারা এ মুহূর্তে ইস্টার্ন কনফারেন্সের তলানিতে আছে। এ দলের বিপক্ষে পূর্ণ ফিট মেসিকে পাওয়া এবং সহজ জয়ের প্রত্যাশাই থাকবে সমর্থকদের। এরপর ২৫ সেপ্টেম্বর মেসিদের পরের ম্যাচের প্রতিপক্ষ অরল্যান্ডো সিটি।
ক্লাসিকোর এ ম্যাচে চাপ থাকলেও মায়ামির বর্তমানে ছন্দ বিবেচনা করলে জয়টা কঠিন হওয়ার কথা নয়। এই তিন ম্যাচের পর আরেকটি বড় উপলক্ষ আসবে মেসির সামনে। ২৭ সেপ্টেম্বর ইউএস ওপেন কাপের ফাইনালে মেসিদের প্রতিপক্ষ হিউস্টন ডায়নামো। এ ম্যাচে মেসির দিকেই থাকবে সবার চোখ। তাঁর হাত ধরে ইন্টার মায়ামি পেয়ে যেতে পারে নিজেদের ইতিহাসের দ্বিতীয় শিরোপাটিও। আর এ মাসের শেষে মেসিরা এমএলএসের ম্যাচে মুখোমুখি হবে নিউইয়র্ক এফসির।
এমএলএসের প্লে- অফ বিবেচনায় নিলে প্রতিটি ম্যাচই সমান গুরুত্বপূর্ণ। এমএলএসের প্লে-অফ খেলা থেকে তারা এখন আর ৬ পয়েন্ট দূরে। মেসি যোগ দেওয়ার আগে এমএলএসের ইস্টার্ন কনফারেন্সে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা মায়ামি আজকের জয়ের পর ২৬ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে ১৪তম স্থানে। প্লে-অফ জোনে উঠে আসার জন্য মেসিদের এখন প্রয়োজন ৬ পয়েন্ট।
তবে এ ক্ষেত্রে বাকিদের ম্যাচের ফলের দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে। ওপরে থাকা দলগুলো জিতলে এ পয়েন্টের তারতম্য হতে পারে। তবে নানা হিসাব-নিকাশ বলছে, সব মিলিয়ে ৪৭ পয়েন্ট পেলে নিশ্চিত হতে পারে মেসিদের প্লে-অফ খেলা। এর আগে ২০২২ সালে ৯ নম্বরে শেষ করা দলটি পেয়েছিল ৪২ পয়েন্ট এবং ২০২১ সালে সেই পয়েন্ট ছিল ৪৭। এখন হাতে থাকা ৮ ম্যাচ থেকে ১৯ পয়েন্ট পাওয়া কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। অন্তত মেসির জন্য তো কখনোই নয়। শেষ পর্যন্ত সুদিনের চূড়ায় থাকা মেসি এই লক্ষ্য অর্জন করতে পারেন কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষা।