জাভি হার্নান্দেজের জন্য গতকাল দিনটি একটু অন্যরকমই ছিল। বার্সেলোনার ডাগআউটে ৫০ ম্যাচের মাইলফলক ছুঁয়েছেন দলটির সাবেক প্লে-মেকার। কিন্তু উপলক্ষটা উদ্যাপন করতে পারলেন কই! বার্সার কোচ হিসেবে ৫০তম ম্যাচটি ছিল এল ক্লাসিকো। রিয়াল মাদ্রিদের কাছে সেই ম্যাচে ৩-১ গোলে হেরেছে তাঁর দল।
এমন দিনে এভাবে হেরে গেলে কারই বা মন ভালো থাকে! জাভিরও মন ভালো নেই। শুধু রিয়ালের কাছে ম্যাচ হারার কারণেই নয়, জাভির বেশি খারাপ লাগছে দুর্দান্তভাবে শুরু করা মৌসুমটাতে দল হঠাৎই পথ হারানোয়। ম্যাচ শেষে বার্সেলোনা কোচ বলেছেন, ‘মনে হচ্ছে আমরা উল্টো গতিতে আছি। আমরা ভালো করার চেষ্টা করছি, এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি। ৩ পয়েন্ট নিয়ে আমাদের শীর্ষে ওঠার সুযোগ ছিল। কিন্তু আমরা শূন্য হাতে ফিরলাম।’
প্রথমার্ধে ২-১ গোলে পিছিয়ে পড়া বার্সেলোনা ৮৩ মিনিটে ব্যবধান কমায় ফেরান তোরেসের গোলে। এরপর সমতায় ফেরার সুযোগও পেয়েছিল তারা। কিন্তু গোলের সহজ সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি আনসু ফাতি। এরপর যোগ করা সময়ে রদ্রিগোর পোনাল্টি গোলে বার্সেলোনার সব আশা নিভে যায়।
সব মিলিয়ে মন ভালো নেই জাভির, ‘খুব খারাপ লাগছে। আমি কিছু নিয়েই সন্তুষ্ট নই। আমরা জানি যে ভালো খেলছি না।’ জাভি এরপর যোগ করেন, ‘আমরা লা লিগায় খুব ভালো করছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি, আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে।।’
চ্যাম্পিয়নস লিগেও হতাশার খবর বার্সেলোনার জন্য। সর্বশেষ ম্যাচে ইন্টার মিলানের সঙ্গে ৩-৩ গোলে ড্র করার পর শেষ ষোলোতে ওঠার ভাগ্যটা এখন আর শুধুই নিজেদের হাতে নেই বার্সার। ৪ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে বার্সেলোনার অবস্থান তিন নম্বরে। ১২ পয়েন্ট নিয়ে এরই মধ্যে শেষ ষোলো নিশ্চিত করে ফেলেছে বায়ার্ন। ৭ পয়েন্ট নিয়ে ইন্টার মিলান আছে দ্বিতীয় স্থানে। ভিক্তোরিয়া প্লজেন ও বায়ার্নের বিপক্ষে গ্রুপের শেষ দুটি ম্যাচে একটি জিতলেই ইন্টার মিলান উঠে যাবে শেষ ষোলোতে।
চ্যাম্পিয়নস লিগে দলের এই হালের প্রভাব রিয়ালের বিপক্ষে পড়েছে কি না-এমন এক প্রশ্নের উত্তরে জাভি বলেছেন, ‘আমি মনে করি না, চ্যাম্পিয়নস লিগের ফলের প্রভাব এখানে পড়েছে। আসলে আমরা রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে তাদের মাঠে খেলেছি। আর আমরা উল্টো গতিতে আছি। এটা খুব দ্রুত বদলাতে হবে।’
উল্টো গতিতে আছেন আসলে জাভি নিজেও! মাইলফলকের ম্যাচটি হেরে ভুলে যাওয়ার মতো একটি রেকর্ড সঙ্গী হয়েছে তাঁর। বার্সেলোনার ডাগআউটে ৫০ ম্যাচ কাটানো কোচদের মধ্যে জয়, হার আর ড্রয়ের দিক থেকে জাভির অবস্থাই সবচেয়ে বাজে। ৫০ ম্যাচে জাভির জয় ২৮টি, ১১টি ড্রর পাশাপাশি তিনি হেরেছেন ১১টি ম্যাচে।
বার্সার সাবেক কোচ ফ্রাঙ্ক রাইকার্ডের রেকর্ডটি প্রায় একই রকম। জাভির সমান জয় তাঁর। তবে তিনি একটি ম্যাচ কম হেরেছেন, একটি ড্র বেশি তাঁর। লুইস এনরিকে এদিক থেকে অনেক এগিয়ে। বার্সার ডাগআউটে প্রথম ৫০ ম্যাচে তাঁর জয় ৪২টি, ড্র করেছেন তিন ম্যাচে। পেপ গার্দিওলা, টাটা মার্তিনো, আর্নেস্তো ভালভের্দে, টিটো ভিলানোভারাও বার্সার ডাগআউটে প্রথম ৫০ ম্যাচে এত ভালো করতে পারেননি।
জাভি যাঁর কাছ থেকে দায়িত্ব পেয়েছেন, সেই রোনাল্ড কোমান বার্সার ডাগআউটে প্রথম ৫০ ম্যাচের ৩৩টি জিতেছেন। ৭টি ম্যাচে ড্র করেছেন, হেরেছেন ১০ ম্যাচ। তবে এটাও সত্য গার্দিওলা-এনরিকে-কোমানদের মতো লিওনেল মেসিকে দলে পাননি জাভি।