পয়েন্ট তালিকায় দুই শীর্ষ দল আর্সেনাল ও ম্যানচেস্টার সিটির এই ম্যাচকেই অলিখিত ফাইনাল মনে করছেন অনেকে।
প্রিমিয়ার লিগ শেষ হবে সামনের মাসের শেষ সপ্তাহে। কিন্তু শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটা কি আজই হয়ে যাচ্ছে? পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুই দল আর্সেনাল ও ম্যানচেস্টার সিটি মুখোমুখি আজ।
অন্য দলগুলো এত পেছনে যে শিরোপা লড়াইয়ে নেই–ই বলা যায়। ম্যান সিটির চেয়ে ৫ পয়েন্ট এগিয়ে আর্সেনাল। তবে সিটি আর্সেনালের চেয়ে ম্যাচ খেলেছে দুটি কম। ফলে কার্যত পেপ গার্দিওলার সিটিকেই কিছুটা এগিয়ে রাখতে হচ্ছে আর্সেনালের চেয়ে।
সিটির মাঠ ইতিহাদে গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচের আগে সবচেয়ে বেশি আলোচিত কয়েকটি বিষয়—
মৌসুমের শুরু থেকেই দারুণভাবে ছুটছিল আর্সেনাল। মাস দুয়েক আগেও সিটির কোচ গার্দিওলা বলেছেন, আর্সেনাল কোনো ভুল না করলে তাদের সাধ্য নেই এই মৌসুমে লিগ জেতার। লিভারপুল, ওয়েস্ট হাম ও সাউদাম্পটনের বিপক্ষে সর্বশেষ তিন ম্যাচেই ড্র করে সেই ভুলটাই করেছে আর্সেনাল। অন্যদিকে সব প্রতিযোগিতা মিলে সর্বশেষ ১২ ম্যাচে ১১ জয় সিটির। প্রিমিয়ার লিগে সর্বশেষ ৮ ম্যাচে অপরাজিত, জয় ৭টি। প্রিমিয়ার লিগে এর আগে আর্সেনালের মাঠে যখন মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল, ম্যাচটা সিটি জিতেছিল ৩-১ গোলে। সব মিলিয়ে আর্সেনালের কাজটা আজ আসলেই কঠিন।
এই মৌসুমে এখনো তিনটি টুর্নামেন্টে টিকে আছে সিটি। লিগে শিরোপার লড়াই চলছে, সামনে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল ও এফএ কাপের ফাইনাল। ট্রেবল জয়ের সম্ভাবনাটা অবশ্যই আনন্দের ব্যাপার, তবে তিনটি টুর্নামেন্টের চাপ সামলানো খুব সহজ নয়। তবে এখন পর্যন্ত কোনো রকম ক্লান্তি বা চাপে থাকার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না সিটির খেলোয়াড়দের মধ্যে।
অন্যদিকে আর্সেনাল ২০০৩-০৪ মৌসুমের পর এই প্রথম শিরোপা জয়ের আশা জাগিয়েছে। প্রত্যাশার সেই চাপ তো আছেই, আবার আর্সেনালের দলটাও তরুণ। আজ সিটির বিপক্ষে জয় আর্সেনালকে মানসিকভাবে দারুণ চাঙা তো করবেই, শিরোপার পথেও অনেকটা এগিয়ে দেবে।
সবচেয়ে বেশি চোখ তো আর্লিং হলান্ডের ওপরই থাকবে। এই মৌসুমে ম্যান সিটিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই গোলের পর গোল করে রেকর্ডের পর রেকর্ড ভেঙে যাচ্ছেন নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার। লিগে এরই মধ্যে ৩২ গোল হয়ে গেছে। আর মাত্র ২টি গোল করলেই প্রিমিয়ার লিগে এক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ডে ভাগ বসাবেন, সব প্রতিযোগিতা মিলে ৫০ গোল হয়ে যাবে তাঁর।
জ্যাক গ্রিলিশ অবশেষে সিটি সমর্থকদের আস্থাভাজন হয়ে উঠতে শুরু করেছেন। কেভিন ডি ব্রুইনা তো বরাবরের মতোই ভরসার নাম। আর্সেনালের দুই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হয়ে উঠতে পারেন গত মৌসুমে সিটি ছেড়ে আসা দুজন—গ্যাব্রিয়েল জেসুস ও ওলেকসান্দর জিনচেঙ্কো। সাবেক সতীর্থদের বিপক্ষে আজ তারাই হতে পারেন আরতেতার তুরুপের তাস।
তিন বছরের কিছু বেশি সময় গার্দিওলার সঙ্গে কাজ করেছেন আরতেতা। শিক্ষাটা যে বৃথা যায়নি, সেটার প্রমাণ দিতেও আরতেতা দেরি করেননি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে আর্সেনালের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর নিজের প্রথম মৌসুমেই এফএ কাপ জিতেছেন গার্দিওলার সিটিকে হারিয়ে।
তবে এখনো বোধ হয় শেখার আরও বাকি। গুরু-শিষ্য এখন পর্যন্ত মুখোমুখি হয়েছেন যে ৮ ম্যাচে, এফএ কাপের ওই ফাইনালটা বাদে বাকি সাতটাতেই গার্দিওলার জয়। আজ হিসাবটা বদলানোর সুযোগ পাচ্ছেন আরতেতা।