দুই দলের শক্তির পার্থক্য অনেক। তবে কুয়েতের সঙ্গে দারুণ লড়েছে বাংলাদেশ। চোখে চোখ রেখেছে খেলেছে। নিজেদের সামর্থ্যের সেরাটা দিয়ে কুয়েতকে পাল্টা চ্যালেঞ্জও দিয়েছে। কুয়েতকে ৯০ মিনিটের নির্ধারিত সময়ে গোল করতে দেয়নি হাভিয়ের কাবরেরার দল। বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে সাফ ফুটবলের প্রথম সেমিফাইনাল অতিরক্তি সময়ে নিয়ে গেছে লড়াকু বাংলাদেশ।
সব অস্ত্র ব্যবহার করেও গোল পাননি কুয়েতের পর্তুগিজ কোচ রুই ফার্নান্দো বেন্তো। ৩১ মিনিটে রক্ষণে দাস্তিকে মাঠে পাঠান। উইংয়ের দ্রুত গতির রাকিবকে আটকাতে এই বদলটা আনেন কুয়েতের কোচ। উদ্দেশ্য ছিল, আক্রমণেও যেন তিনি ভূমিকা রাখতে পারেন। কিন্তু সেরকম কিছু করতে পারেননি তিনি। বিরতির পর নাম্বার নাইন মোহাম্মদ আবদুল্লাহকে নিয়ে মাঠে নামে কুয়েত। ৫৩ মিনিটে আসেন নাম্বার টেন আল খালদি। ৬১ মিনিটে নাম্বর সেভেন সালেহও আসেন মাঠে। কিন্তু গোল পায়নি কুয়েত। হয়তো আফসোস থাকলে তৃতীয় মিনিটে কর্নার থেকে ১-০ না হওয়ায়। গোললাইন থেকে সেবার দারুণ সেভ করেন বাংলাদেশ দলের লেফট–ব্যাক ইসা ফয়সাল।
দারুণ খেলেছে বাংলাদেশের রক্ষণ। চোটের কারণে ভুটান ম্যাচ খেলতে না পারা তারিক কাজী ফিরেছেন। রক্ষণে তিনিও আস্থার প্রতীক। সবচেয়ে বড় আস্থা গোলকিপার আনিসুর ছিলেন চীনের প্রাচীর হয়ে। ৩০ মিনিটে কুয়েতের আল রশিদির শট আটকেছেন। প্রথমার্ধের শেষ দিকে আরেকবার বাংলাদেশকে বাঁচিয়েছেন আনিসুর।। প্রথমার্ধে দুবার কুয়েতের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ান বাংলাদেশ গোলকিপার। দ্বিতীয়ার্ধে আরও বেশি। ৬১ মিনিটে আনিসুর অটকান কুয়েতের ফ্রি–কিক। পরপরই আরেকটি আক্রমণ রুখে দেন আনিসুর। সময় যত এগিয়েছে, আনিসুর তত বেশি দেয়াল তোলেন কুয়েতের সামনে। দ্বিতীয়ার্ধে বলতে গেলে একাই বাংলাদেশকে ম্যাচে রাখেন আনিসুর।
বাংলাদেশ শুধু গোল আটকেছে একটুকু বললে ম্যাচেন আসল ছবিটা ফুটে ওঠে না। ম্যাচের সহজতম সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশই। সেটিও ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই। ডান দিক থেকে রাকিব বক্সে ঢুকে বল দেন তরুণ মোরছালিনকে। সামনে শুধু গোলকিপার । ঠিকঠাক প্লেসিং করতে পারলেই গোল। এমন সুযোগ কি না হাতছাড়া হলো। মোরছালিনের শট লাগল কুয়েতের গোলকিপার মারজুকের গায়ে।
ঘর সামলে বাংলাদেশও আক্রমণে উঠেছে। সেটা মূলত আগের দুই ম্যাচে গোল করা রাকিবকে কেন্দ্র করেই। ৫৪ মিনিটে রাকিবের শট অল্পের জন্য বাইরে যায়। ৬১ মিনিটে মোরছালিন রাকিব সমন্বয়ের তৈরি হয়েছিল গোলের দারুণ সুযোগ। ভুটান ম্যাচ থেকে যে কোন থেকে গোল করেছিলেন রাকিব, আজ তার চেয়ে একটু সহজ কোন থেকে তাঁর শট লাগে বারে।
দ্বিতীয়ার্ধে এটিই বাংলাদেশের সহজ সুযোগ। ৬৭ মিনিটে স্ট্রেচারে শুয়ে মাঠ ছাড়া অধিনায়ক জামালের জায়গায় আসেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। ফয়সালের ক্রস থেকে হেডটা ঠিকঠাক করতে পারেনি রাকিব। এর আগে সাফে দুবার অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচ নেয় বাংলাদশ। একবার হার, একবার জয়। দেখা যাক আজ কী হয়?