পিছমোড়া দিয়ে হাত বেঁধে কখনো সাঁতার কাটার চেষ্টা করেছেন কি? এভাবে সাঁতার কাটা আদৌ সম্ভব? বাস্তবতা বলছে, পিছমোড়া দিয়ে হাত বেঁধে রাখলে সাঁতার কাটার কোনো সুযোগ নেই। বরং ডুবে মরার আশঙ্কা বেশি। তবে বাস্তব জীবনে নানা চাপে থাকা অসহায় মানুষের কখনো কখনো এমন অনুভূতি হতে পারে।
মনে হতে পারে, কেউ তাঁকে হাত বেঁধে রেখে সাঁতার কাটতে নামিয়ে দিয়েছেন! বতর্মানে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কোচ এরিক টেন হাগের অনুভূতিও অনেকটা এমনই। তাঁর মনে হচ্ছে, বর্তমান ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড দলকে সামলানো অনেকটা হাত পেছনে বেঁধে সাঁতার কাটার মতোই। গতকাল রাতে আর্সেনালের বিপক্ষে ঘরের মাঠ ওল্ড ট্রাফোর্ডে হারের পর এমন অনুভূতির কথা জানিয়েছেন এই ডাচ কোচ।
আর্সেনালের বিপক্ষে ঘরের মাঠে গতকাল রাতে চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি ইউনাইটেড। উল্টো লেয়ান্দ্রো ত্রোসারের গোলে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের, যেটি এ মৌসুমে ঘরের মাঠে ইউনাইটেডের রেকর্ড নবম হার। এর আগে নিজেদের মাঠে ইউনাইটেড কখনো এতগুলো ম্যাচ হারেনি। প্রিমিয়ার লিগে ব্যর্থতার পাশাপাশি চ্যাম্পিয়নস লিগেও গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল ইউনাইটেড।
মৌসুমে সাফল্য তুলে নেওয়ার কেবল একটি সুযোগ এখন দলটির সামনে—এফএ কাপ ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটিকে হারিয়ে শিরোপা জিততে পারবে কি ইউনাইটেড?
এফএ কাপ ফাইনালের প্রসঙ্গ বাদ দিলে এবার এমন বাজে মৌসুম ইউনাইটেড খুব কমই দেখেছে। দলের ব্যর্থতার জন্য দলের খেলোয়াড়দের একের পর এক চোটে পড়াকেও দায়ী করেছেন টেন হাগ।
ইউনাইটেড কোচ বলেছেন, ‘যেকোনো কোচ সব সময় আরও ভালো কিছু করতে পারে। কিন্তু এ ক্লাবে দুই বছরের মধ্যে একবারই আমি খেলোয়াড়দের পুরো দলকে একসঙ্গে পেয়েছি। এতগুলো চোট নিয়ে আপনি কখনো দলকে এগিয়ে নিতে পারবেন না। এটা অনেকটা হাত পিছমোড়া করে বেঁধে সাঁতার কাটার মতো। এমন পরিস্থিতিতে আপনাকে মাথা পানির বাইরে রাখতে হবে এবং আমরাও সেটাই করার চেষ্টা করছি।’
চোটের কারণে আর্সেনালের বিপক্ষে ম্যাচে ব্রুনো ফার্নান্দেজ, মার্কাস রাশফোর্ড, হ্যারি ম্যাগুয়ার ও ম্যাসন মাউন্টের মতো তারকাদের পাননি টেন হাগ। দলটি এতই তীব্র খেলোয়াড়–সংকটে পড়েছিল যে মিডফিল্ডার কাসেমিরোকে সেন্টার ব্যাক হিসেবে খেলতে হয়। দলের এমন সংকট নিয়ে টেন হাগ আরও বলেছেন, ‘ব্যাপারটা এমন হওয়া উচিত নয়। আপনাদের দেখতে হবে যে আমরা লড়াকু ছিলাম। অবশ্যই আমাদের জিততে হবে। আমাদের সব কটি ম্যাচই জিততে হবে। কিন্তু এখন আমরা সেই অবস্থায় নেই এবং অনেকগুলো চোট নিয়ে দলও ভালো নেই।’
ইউনাইটেডের আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলার সম্ভাবনা আরও আগেই শেষ হয়ে গেছে। ইউরোপা লিগ খেলতে হলে হয় তাদের এফএ কাপ ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটিকে হারাতে হবে কিংবা যেকোনোভাবে পয়েন্ট টেবিলে ষষ্ঠ স্থান নিয়ে মৌসুম শেষ করতে হবে। বর্তমানে ছয় নম্বর স্থান নিয়ে ইউনাইটেডের সঙ্গে লড়াইয়ে আছে নিউক্যাসল ও চেলসিও।
তাই কাজটা মোটেই সহজ হবে না। ইউরোপে খেলতে না পারার শঙ্কা নিয়ে টেন হাগ বলেছেন, ‘এটা খুবই ক্ষতিকর হবে। কিন্তু আমরা এখনো সেখানে পৌঁছাতে পারি। আমাদের সুযোগ কাজে লাগাতে হবে এবং লড়াই করে যেতে হবে। যদিও সমস্যা অনেক বড় এবং সবাই তা জানেও।’