‘এটা অবিশ্বাস্য’—স্টুটগার্টের বিপক্ষে ৯৬ মিনিটে বায়ার লেভারকুসেনের হার এড়ানো গোলের পর ধারাভাষ্যকারের প্রথম কথা ছিল এটিই। এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত লেভারকুসেন যা করছে, সবকিছুই যেন অবিশ্বাস্য! সাধারণ যুক্তি ও হিসাব-নিকাশের সীমাও যেন মানছে না দলটি। নইলে ম্যাচের পর ম্যাচ একই কাজ করে যাওয়া কি সত্যিই সম্ভব? এই অসম্ভবকে সম্ভব করার ব্যাখ্যা অবশ্য লেভারকুসেন কোচ জাবি আলোনসোর কাছেও নেই। ম্যাচ শেষে নিজেই যে বললেন, ‘আমরা আবারও কীভাবে এটা করলাম, সেটা ব্যাখ্যা করা সহজ নয়।’
এমন কিছুর ব্যাখ্যা আসলে হয়ও না। গতকাল রাতের ম্যাচসহ বুন্দেসলিগায় এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচে যোগ করা সময়ের গোলে পয়েন্ট আদায় করে নিয়েছে আগেই লিগ শিরোপা নিশ্চিত করা লেভারকুসেন। সে সঙ্গে ধরে রেখেছে অপরাজিত থাকার ধারাও। স্টুটগার্টের বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করা ম্যাচটি দিয়ে এ নিয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ৪৬ ম্যাচে অপরাজিত থাকল লেভারকুসেন। পুরো মৌসুমে এখন পর্যন্ত একটি ম্যাচেও হারেনি তারা।
অপরাজিত থাকার এ ধারা আর দুই ম্যাচ ধরে রাখলে নতুন এক কীর্তিতে নাম লেখাবে লেভারকুসেন। ১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে উয়েফা প্রতিযোগিতা শুরুর পর সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ডে বেনফিকার পাশে বসবে আলোনসোর দল। ১৯৬৩-৬৫ সালে টানা ৪৮ ম্যাচে অপরাজিত থেকে ইতিহাস গড়েছিল বেনফিকা।
গতকাল অবশ্য ইতিহাস গড়ার কক্ষপথ থেকে একপর্যায়ে ছিটকেই যাচ্ছিল লেভারকুসেন। ম্যাচের ৫৬ মিনিটের মধ্যেই ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে তারা। এরপর ৬১ মিনিটে আমিনে আদলির গোলে ব্যবধান ২-১ করে লেভারকুসেন। তবে সমতাসূচক গোলটি কোনোভাবেই যেন মিলছিল না।
এরপর যোগ করা সময়েও হতাশায় কাটছিল লেভারকুসেনের। যখন মনে হচ্ছিল আজ হয়তো আর সম্ভব নয়, তখনই দেখা মেলে চমকের। ম্যাচের ঠিক শেষ মুহূর্তে বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি-কিক পায় লেভারকুসেন। সেই ফ্রি-কিককে কাজে লাগিয়ে দারুণ এক শটে গোল করেন রবার্ট আন্দরিখ। যোগ করা সময়ের ৬ মিনিটের এই গোলেই হার এড়িয়ে অপরাজিত থাকার ধারা অব্যাহত রাখল লেভারকুসেন।
ম্যাচ শেষে আলোনসো বলেছেন, ‘আমরা শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেছি। আমিনের করা প্রথম গোলটিই আমাদের বিশ্বাসী করে তুলেছে।’ অন্যদিকে ২ গোলে এগিয়ে গিয়েও জিততে না পারার বিষয়টি মানতে পারছেন না স্টুটগার্ট কোচ সেবাস্তিয়ান হোয়েনেস। তিনি বলেছেন, ‘এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা সত্যিই দুর্ভাগা ছিলাম।’