ফিলিস্তিনকে হারাতে চায় বাংলাদেশ
ফিলিস্তিনকে হারাতে চায় বাংলাদেশ

কুয়েতে ৫ গোলে হেরে এবার ঢাকায় ফিলিস্তিনকে হারাতে চায় বাংলাদেশ

যে দলের কাছে মাত্রই দুদিন আগে কুয়েতের মাঠে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ৫-০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ, সেই দলকেই কিনা ঘরের মাঠে হারানোর স্বপ্ন দেখছেন তপু বর্মণ!

কুয়েত থেকে ঢাকায় ফিরেই আজ বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় বাংলাদেশ দলের অনুশীলন শেষে সেন্টারব্যাক তপু সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তাঁর স্বপ্নের কথা বলেছেন। ফিলিস্তিনের কাছে ৫ গোলের হারের পরে ২৬ মার্চ কিংস অ্যারেনায় দুদলের ফিরতি ম্যাচে বাংলাদেশ দল কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? এমন প্রশ্নে আত্মবিশ্বাসী তপু বললেন, ‘অবশ্যই ফেরা সম্ভব। তবে ফেরা মানে ওদের সঙ্গে আবার ৫ গোলে জিততে হবে এমন বাধ্যবাধকতা নেই। নিজেদের মাঠে যদি আমরা ওদের ১-০ গোলে হারাই সেটাও ভালো। অবশ্যই আমাদের ওই লক্ষ্য আছে।’

কুয়েতে যে ফল হয়েছে সেটি দলের কেউ ভাবতেও পারেননি বলে জানিয়েছেন তপু। মনোযোগে ঘাটতি ছিল কি না জানতে চাইলে বলেন, ‘মনোযোগে ঘাটতি ছিল না। আমাদের নির্দিষ্ট কোনো সমস্যাও ছিল না। আসলে আমাদের রক্ষণ হয়তো একটু নড়বড়ে ছিল। ৪২ মিনিটে আমরা প্রথম গোল খাই। এটা আমাদের জন্য মাইনাস পয়েন্ট ছিল। কারণ, আমরা সমানতালে খেলছিলাম। সুযোগও তৈরি করছিলাম। হঠাৎ গোল খাওয়ায় মানসিকভাবে একটু চিড় ধরে আমাদের।’

কুয়েতে যে ফল হয়েছে সেটি দলের কেউ ভাবতেও পারেননি বলে জানিয়েছেন তপু

এর কারণও ব্যাখ্যা করেছেন তপু, ‘আমাদের দমে ঘাটতি হয়নি। মনোযোগ যদি আরেকটু ভালো থাকত তাহলে পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারতাম। রক্ষণভাগ যদি ভালোভাবে সামলাতে পারতাম তাহলে খুবই ভালো হতো। আসলে চার বনাম ছয় খুবই কঠিন। আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন ফিলিস্তিন দল আমাদের ওপর কীভাবে চড়ে বসেছিল। রক্ষণ ভালো হলেও ম্যাচ হয়তো হারতাম, তবে এত গোল খেতাম না। যে ফল হয়েছে সেটা আমাদের জন্য একটা বিপর্যয়।’

প্রথম ৪২ মিনিট লড়াই করে গোলশূন্য রাখার পরের দশ মিনিটে কেন চারটি গোল হজম করতে হলো, এখন সেটাই খুঁজে বের করতে চান কোচ হাভিয়ের কাবরেরা, ‘এখন সময় সেই ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার, আত্মবিশ্লেষণ করার। ফিরতি ম্যাচে অবশ্যই ভুলগুলো শুধরে খেলতে হবে। আমরা কেন প্রথমার্ধের শেষ মিনিট আর দ্বিতীয়ার্থের প্রথম ৫ মিনিট দুটি করে গোল হজম করেছি, এটা চিন্তার কারণ। যে ভুলে এটা হয়েছে তা আমাদের বদলাতে হবে। আমরা নিজেদের কাছে আরও ভালো কিছু আশা করছি। অ্যাওয়ের চেয়ে দেশের মাটিতে আমরা শক্তিশালী।’

দশ মিনিটে কেন চারটি গোল হজম করতে হলো, এখন সেটাই খুঁজে বের করতে চান কোচ হাভিয়ের কাবরেরা

ফিলিস্তিন ম্যাচে কাবরেরা যান হাইলাইন ডিফেন্স কৌশলে। র‌্যাঙ্কিংয়ের ৮৬ ধাপ এগিয়ে থাকা দলের সঙ্গে সমানতালে খেলতে চেয়ে হিতে বিপরীত হয়েছে। ফিলিস্তিন দল বাংলাদেশের রক্ষণের পেছনে অনেক জায়গা পেয়েছে এবং অনায়াসে গোল করেছে। ৫টি গোলই হয়েছে বক্সের ভেতর থেকে।

অনেকেই এ নিয়ে কোচের কৌশলের সমালোচনা করছেন। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমানে মোহামেডানের কোচ আলফাজ আহমেদ প্রথম আলোকে গত পরশু বলেন, শক্তিশালী দলের বিপক্ষে রক্ষণ আরও শক্তিশালী করে রয়েসয়ে খেলা উচিত ছিল বাংলাদেশের। কোচের ভুল কৌশলেই আসলে এমন বিপর্যয় হয়েছে।
কাবরেরা অবশ্য অভিযোগটা মানতে চাননি, ‘ব্যাপারটা ঠিক তা নয়। আমরা হাইলাইন ডিফেন্সে খেলেছি। কিছু সুযোগও তৈরি করেছি। গোল পেলে ম্যাচের গল্প ভিন্ন হতে পারত। তবে শেষ পর্যন্ত আসলে আমরাই ভুগেছি। ফিলিস্তিনিরা মাঠে ছিল শক্তিশালী। ফিরতি ম্যাচে আমাদের সবকিছু বুঝেশুনে খেলতে হবে।’

বাংলাদেশ দলের চার ডিফেন্ডারের সমন্বয় নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে, যাঁদের তিনজন লম্বা সময় ধরে খেলছেন বসুন্ধরা কিংসের হয়ে। ফিলিস্তিন-ভরাডুবির জন্য ডিফেন্ডারদের বেশি দায়ী করছেন বিশ্লেষকেরাও। তবে কাবরেরা আছেন তাঁর খেলোয়াড়দের পাশে, ‘চার ডিফেন্ডারের ওপর আমি সন্তুষ্ট, সঙ্গে গোলকিপারের ওপরও। ওরা নিজেদের দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করেছে। বিশেষ করে ফিলিস্তিনিদের ক্রস করা থেকে কিছুটা দূরে রাখতে পেরেছে। আমার পূর্ণ আস্থা আছে ওদের ওপর। এ নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। ফিলিস্তিনের মান আর আমাদের দুর্বলতা মিলিয়েই আসলে এমন ফল।’ রক্ষণে তারিক কাজীকে মিস করছেন কি না প্রশ্নে সরাসরি উত্তর না দিয়ে কোচ বলেন, ‘ঠিক তা নয়। শুরু থেকেই তারিক আমাদের সঙ্গে নেই। সেভাবেই আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। তারিক ভালো খেলোয়াড়। তবে অন্যরা জায়গাটা ভরাট করার সামর্থ্য রাখে।’