এ মৌসুমে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের কোনো ক্লাবেই নেই জামাল ভূঁইয়া! বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক দেশের বাইরের কোনো ক্লাবেও নাম লেখাননি। একটি জাতীয় দলের অধিনায়কের ক্লাবহীন থাকার আপাত অসম্ভব ঘটনারই সাক্ষী হলো বাংলাদেশের ফুটবল।
২০২৪-২৫ মৌসুমের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের দলবদল শেষ হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। শেখ জামাল ধানমন্ডি ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ছাড়া দলবদল সেরেছে প্রিমিয়ার লিগের ১০টি ক্লাব। সব ক্লাবই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে) নিজেদের নিবন্ধিত খেলোয়াড়দের নাম জমা দিয়েছে। কোনো ক্লাবের তালিকাতেই জামালের নাম না থাকা অবাক করেছে সবাইকেই।
গত মৌসুমে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র থেকে আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিভাগের দল সোল দো মায়োতে যোগ দিয়েছিলেন জামাল। কিন্তু সেখানে খুব বেশি দিন খেলতে পারেননি। চারটি ম্যাচ খেলেই দেশে ফিরে এসেছিলেন। আর্জেন্টাইন ক্লাব তাঁকে বেতন দেয়নি—জামালের অভিযোগ ছিল এমনই। সোল দো মায়োর বিরুদ্ধে তিনি ফিফার কাছেও অভিযোগ করেছিলেন। সেই অভিযোগে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থার রায় অবশ্য গেছে জামালের পক্ষেই। ফিফা সোল দো মায়োকে নির্দেশ দিয়েছে জামালকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার। সেই ক্ষতিপূরণও তিনি পেয়েছেন এরই মধ্যে।
আর্জেন্টিনা থেকে ফিরে মধ্যবর্তী দলবদলে জামাল আবাহনীতে যোগ দিয়েছিলেন। আবাহনীতেও নিয়মিত খেলা হয়নি তাঁর। এ মৌসুমে দলই পেলেন না জাতীয় দলের অধিনায়ক।
তবে জামালের এ মৌসুমে আবাহনীতেই খেলার কথা ছিল। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দুর্বৃত্তদের হামলা ও লুটপাটে আবাহনী ক্লাব ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আবাহনী নতুন মৌসুমে দল গঠন করবে কি না, তা নিয়েই শঙ্কা তৈরি হয়। আবাহনী অবশ্য শেষ পর্যন্ত দল গঠন করেছে। খেলোয়াড়দের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কম বেতনেই চুক্তিবদ্ধ হতে হয়েছে আবাহনীর সঙ্গে। খেলোয়াড়েরাও আবাহনীর বর্তমান অবস্থার কথা চিন্তা করে ব্যাপারটি মেনে নিয়েছেন। জামালও আগের তুলনায় ৩০ শতাংশ কম বেতনেই আবাহনীতে খেলার ব্যাপারে রাজি ছিলেন। কিন্তু সেটি শেষ পর্যন্ত হয়নি।
কেন হয়নি, সেটি প্রথম আলোকে জানিয়েছেন জামাল, ‘আমি আবাহনীতে ৩০ শতাংশ কম বেতনে খেলতে রাজি ছিলাম। আমাকে চুক্তির কাগজও পাঠিয়েছিল ক্লাব। ওই সময় আমি ডেনমার্কে ছিলাম। কিন্তু দলবদলের শেষ দিন রাতে হঠাৎ করেই ক্লাব থেকে আমাকে ফোন করে ৬০ শতাংশ কম বেতনে খেলার কথা বলা হয়। সেটি সম্ভব ছিল না। তারা এমন সময় অনুরোধটি করেন, যখন নতুন কোনো ক্লাব খুঁজে নেওয়ার সময় ছিল না।’
এখন কী করবেন, সেটিই বুঝতে পারছেন না জামাল, ‘কী করব বুঝতে পারছি না। এই অবস্থায় তো আমাকে বসে থাকতেই হবে। মধ্যবর্তী দলবদলের তো অনেক বাকি। কিন্তু আমাকে তো খেলতে হবে।’
বিদেশি লিগে কয়েকটি ক্লাব থেকে তাঁর প্রস্তাব আছে বলেই জানালেন জামাল। তবে সেটি নিয়েও অনিশ্চয়তা আছে, ‘ভারতের কেরালার একটি ক্লাব প্রস্তাব দিয়েছে। প্রস্তাব আছে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া থেকেও। কিন্তু প্রস্তাবগুলো যে খুব ভালো, সেটি বলা যাবে না। আমি কেরালার ক্লাবটিকে নিয়েই বেশি আগ্রহী। কিন্তু এ মুহূর্তে ভিসা নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে।’