রোজার কারণে গ্যালারিতে দর্শক সমাগম নিয়ে স্থানীয় আয়োজকেরা সংশয় প্রকাশ করেছিলেন আগেই। তাঁদের সংশয় যে ঠিক ছিল, তা বোঝা গেল মাঠে এসেই। সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের গ্যালারি বলতে গেলে অনেকটাই ফাঁকা। ঠিক কতজন দর্শক তা বোধ হয় ম্যাচ শুরুর আগ পর্যন্ত হাতে গোনা সম্ভব ছিল। বড় জোড় তখন শ দু-এক ছিল গ্যালারিতে। চেয়ার বসানোর পর ১৭ হাজার ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামে যা ছিল একটা কার্যত চোখেই পড়ার মতো নয়। এরপর কিছুটা বাড়লেও তা হাজারখানেক পর্যন্ত ঠেলেঠুলে হয়তো পৌঁছেছে।
অথচ এই স্টেডিয়ামে অতীতে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সব ম্যাচেই ছিল ভিন্ন ছবি। পরিপূর্ণ গ্যালারি বরাবর সমর্থন দিয়ে গেছে ঘরের ছেলেদের। ২০১৪ সালে ২৯ আগস্ট তো বাংলাদেশ-নেপাল অনূর্ধ্ব-২৩ দলের ম্যাচে স্টেডিয়ামের ফটক ভেঙে মাঠে ঢোকেন হাজার হাজার মানুষ। মাঠের ভেতরে লাইনের পাশে দাঁড়িয়ে সে ম্যাচ দেখেন কয়েক হাজার দর্শক। ২০১৪ সালের সেই ম্যাচে বাংলাদেশ ১-০ গোলে হেরে গেলেও দশর্ককের মনে ছিল ম্যাচ দেখতে পারার তৃপ্তি।
মাঝে ৮ বছর এই স্টেডিয়ামে ফিফা প্রীতি ম্যাচসহ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ খেলেছে বাংলাদেশ। এক বছর আগেও এখানে মঙ্গোলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের ফিফা প্রীতি ম্যাচে ১০-১২ হাজার দর্শক এসেছিল গ্যালারিতে।
কিন্তু আজকের ছবিটি দেখলে অতীতের সেই ম্যাচগুলোতে শুধুই গল্প মনে হবে। আজকের মতো এত দর্শক খরা কখনো ছিল না। আর তা দেখে বিস্মিত সিলেটের ফুটবলার তকলিছ আহমেদ। বছর তিনেক আগে ইংল্যান্ডে প্রবাসী হয়ে যাওয়া জাতীয় দলের সাবেক এই ফুটবলার সপ্তাহ তিনেক আগে দেশে এসেছেন বেড়াতে। ঘরের মাঠে যখন খেলা একবার ঢুঁ মারলেন। এসেই বললেন, ‘বুঝতে পারছি না, কেন এই অবস্থা। রোজা একটা বড় কারণ। তা ছাড়া মনে হচ্ছে প্রচারণাও কম হয়েছে। সব মিলিয়ে স্টেডিয়ামে এসে মনটা খারাপ হয়ে গেছে।’
সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহিউদ্দিন আহমেদ সেলিমেরও মন খারাপ। যদিও আগে থেকেই তিনি আশঙ্কা করছিলেন গ্যালারিতে দর্শক সমাগম নিয়ে। আজ সেটা হওয়াতে তিনি বললেন, ‘খেলার সময়টা আসলে অনুকূলে ছিল না। রোজা, ইফতার এসব একটা প্রভাব ফেলেছে।’
তবে দর্শক খরার মধ্যেই প্রথমার্ধে এক গোলে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ৪২ মিনিটে জামাল ভূঁইয়ার ফ্রি–কিকে তারিক কাজীর হেডে বল জালে জড়াতেই স্বস্তি নামে বাংলাদেশ দলে। জাতীয় দলের জার্সিতে এটি ফিনল্যান্ড প্রবাসী তারিক কাজীর প্রথম গোল।