দারুণ গোল করেছেন কোভাচিচ
দারুণ গোল করেছেন কোভাচিচ

চ্যাম্পিয়নস লিগ

চোখ ধাঁধানো দুই গোলে নকআউটে চেলসি

এটা ছিল গোলরক্ষক এবং ফরোয়ার্ডদের মুখোমুখি লড়াই! চেলসির একের পর এক আক্রমণ ঠেকিয়ে নায়ক হয়ে মাঠ ছাড়ার প্রতিজ্ঞা নিয়েই যেন মাঠে নেমেছিলেন সালজবুর্গ গোলরক্ষক ফিলিপ কোন। গোলবারের সামনে একাই প্রাচীর তুলে দিয়েছিলেন এই সুইস গোলরক্ষক।

দেয়াল ভাঙতে দারুণ কিছুই করে দেখাতে হতো চেলসি আক্রমণভাগকে। সেটিই অবশ্য করে দেখিয়েছেন কোভাচিচ-হাভার্টজ। দুই অর্ধের দুই চোখ ধাঁধানো গোলে চেলসির নকআউট পর্ব নিশ্চিত করেছেন এ দুজন। প্রথমার্ধে মাতেও কোভাচিচ ও দ্বিতীয়ার্ধে লক্ষ্যভেদ করেন কাই হাভার্টজ। চেলসির জয় ২-১ ব্যবধানে।

শুধু সালজবুর্গ গোলরক্ষকের প্রশংসা করলেই হচ্ছে না, বলতে হবে চেলসি গোলরক্ষক কেপার কথাও। শেষ দিকে সালজবুর্গের দারুণ কিছু আক্রমণ ঠেকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেছেন এই স্প্যানিশ গোলরক্ষক।

দুর্দান্ত গোলের পর হাভার্টজের উদ্‌যাপন

জিতলেই নকআউট নিশ্চিত- এমন সমীকরণ সামনে রেখে ৩-৪-১-২ ফরমেশনে খেলতে নামে চেলসি। মাঝমাঠ নিয়ন্ত্রণে রেখে আক্রমণে যাওয়াই ছিল চেলসির লক্ষ্য। ম্যাচের দুই মিনিটে সুযোগও পেয়ে যায় স্টামফোর্ড ব্রিজের দলটি। যদিও সে সুযোগ কাজে লাগেনি।

চেলসির আক্রমণের বিপরীতে সালজবুর্গের চেষ্টা ছিল প্রতি আক্রমণ থেকে সুযোগ তৈরি করার। শুরুতে কয়েকবার চেলসি ডিফেন্সে হানাও দিয়েছিল অস্ট্রিয়ান ক্লাবটি। যদিও তা চেলসির রক্ষণ ভাঙার জন্য যথেষ্ট ছিল না।

কয়েক স্তরের রক্ষণবুহ্য তৈরি করে চেলসির আক্রমণ ঠেকানোর চেষ্টা করছিল সালজবুর্গ। তবে কোভাচিচের অসাধারণ এক গোলে ২৩ মিনিটে ঠিকই পিছিয়ে পড়ে দলটি। ডি-বক্সের কাছাকাছি জায়গায় বল পেয়ে নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার বদলে মুহূর্তের মধ্যে শট নিয়ে নেন ক্রোয়াট মিডফিল্ডার। টপ কর্নার দিয়ে বল জালে জড়ানোর সময় সালজবুর্গ গোলরক্ষকের তাকিয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না।

দারুণ কিছু গোল বাঁচিয়েছেন সালজবুর্গ গোলরক্ষক

২৬ মিনিটে আবারও গোলের কাছাকছি পৌঁছে যায় চেলসি। তবে এ যাত্রায় বেঁচে যায় সালজবুর্গ। ৩১ মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন চেলসির গ্যাবন তারকা পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াং।

তবে এর মূল কৃতিত্ব দিতে হবে সালজবুর্গ গোলরক্ষক কোনকে। সামনে এগিয়ে এসে অবামেয়াংয়ের জন্য শট নেওয়ার জায়গা অনেক সংকুচিত করে দেন ২৪ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক। সালজবুর্গ গোলরক্ষক দেয়াল তুলে না দাঁড়লে প্রথমার্ধে আরও একাধিকবার বল জালে জড়াতে পারত চেলসি। অন্যদিকে গোলের কাছাকাছি গিয়েছিল সালজবুর্গও। তবে মেলেনি সাফল্য।

বিরতির পর শুরুতেই ডি-বক্সের ভেতরে কোভাচিচের হাতে বল লাগায় হ্যান্ডবলের আবেদন করে সালজবুর্গ। তবে ভিএআরের সাহায্য নিয়ে আবেদন বাতিল করেন রেফারি।

৪৮ মিনিটে সালজবুর্গকে আর ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি চেলসি ডিফেন্স। অলআউট খেলার মূল্য দিতে হয়েছে গোল হজম করে। সালজবুর্গের এই গোলে ফিনিশিং ও অ্যাসিস্ট দুটি ছিল দেখার মতো। ম্যাক্সিমিলিয়ান ওবেরের দুর্দান্ত এক পাসে প্রথম স্পর্শেই কেপাকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়িয়ে স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান জুনিয়র আদামু।

একটু পর আবারও অবামেয়াংয়ের প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেন সালজবুর্গ গোলরক্ষক। ম্যাচে অবাকে চারবার গোল বঞ্চিত করেছেন কোন। এরপর হাভার্টজের শটও আটকে দেন এই গোলরক্ষক।

চেলসির উদ্‌যাপন

গোলবারের সামনে চীনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা কোনকে পরাস্ত করতে অসাধারণ কিছুই করে দেখাতে হতো চেলসিকে। প্রথম গোলের পর ব্লুজদের দ্বিতীয় গোলেও দেখা গেল তেমন কিছু। সালজবুর্গের তিন ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে ক্রিস্টিয়ান পুলিসিক বল পাঠান হাভার্টজকে। ডি-বক্সের বাইরে থেকে অসাধারণ এক বাঁকানো শটে টপ কর্নার দিয়ে বল জালে জড়ান এই জার্মান তারকা। এবারও তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছু করার ছিল না কোনের।

পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে ফেরার চেষ্টায় দারুণ প্রেসিং করে দ্রুত কিছু সুযোগ তৈরি করে সালজবুর্গ। বেশ কয়েকবার চেলসি রক্ষণকে কাঁপিয়েও দিয়েছিল তারা। তবে কেপা-সিলভাদের নৈপুণ্যে শেষ পর্যন্ত জালের দেখা পায়নি অস্ট্রিয়ান ক্লাবটি।