গত জানুয়ারিতেই দলবদলের উত্তাপের আগুনে ঘি ঢেলেছিল সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসর। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে তিক্ততায় ক্লাব ছাড়া ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে কিনে নেয় তারা। রোনালদোকে আল নাসর নেওয়ার পর লিওনেল মেসির দিকে হাত বাড়ায় আরেক সৌদি ক্লাব আল হিলাল।
দুই সেরা তারকাকে নিয়ে এমন উন্মাদনার পরও সৌদি ক্লাবগুলোকে তখন পর্যন্ত ইউরোপের জন্য হুমকি মনে হয়নি। কিন্তু পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে গ্রীষ্মের দলবদল শুরুর পর। একের পর এক হাইপ্রোফাইল সাইনিংয়ে দলবদলের বাজারকে রীতিমতো ওলট–পালট করে দিয়েছে সৌদি আরবের ক্লাবগুলো। এখন পর্যন্ত খেলোয়াড় বেচাকেনার তালিকায় ওপরের দিকে জায়গা করে নিয়েছে সৌদি ক্লাব আল হিলাল। দলবদল শেষ হতে হতে এ তালিকায় সৌদি ক্লাবগুলোর দাপট আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে আল হিলাল কিলিয়ান এমবাপ্পের জন্য ৩০ কোটি ইউরোর প্রস্তাব নিয়ে হাজির হয়েছে। আল হিলালের এই প্রস্তাবে পিএসজিও সম্মতি দিয়েছে। তবে এমবাপ্পে নাকি এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত এমবাপ্পে যদি চোখধাঁধানো এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান, তবে এ মৌসুমে দলবদলের রাজত্ব পুরোপুরি তাদের দখলে চলে আসবে।
অবশ্য এমবাপ্পেকে ছাড়াও এখন পর্যন্ত আল হিলালের নেট (বেচাকেনা মিলিয়ে) খরচ ১৭ কোটি ৬৬ লাখ ইউরো। এবারের দলবদলে ১১ জন খেলোয়াড়কে দলে ভিড়িয়েছে তারা। যেখানে রুবেন নেভেস, কালিদু কোলিবালি এবং ম্যালকমের মতো তারকারা আছেন। যাদের পেছনে আল হিলালের খরচ হয়েছে ১৭ কোটি ৮০ লাখ ইউরো। বিপরীতে ক্লাবটি ৭ খেলোয়াড়কে বিক্রি করে তারা পেয়েছে ১৩ লাখ ৮০ হাজার ইউরো। নেট খরচের তালিকায় যা তাদেরকে দুই নম্বরে তুলে এনেছে।
গত মৌসুমে দারুণ চেষ্টা করেও ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা পুনরুদ্ধার করতে পারেনি আর্সেনাল। লম্বা সময় দাপট ধরে রেখেও শেষ দিকে গিয়ে পথ হারিয়ে শিরোপা হাতছাড়া করেছে আর্সেনাল। তবে আগামী মৌসুমে আরও শক্তি নিয়ে ফিরে আসতে চায় গানাররা। সে লক্ষ্যে এবার দলবদলে বেশ খরচও করছে লন্ডনের ক্লাবটি।
এরই মধ্যে ৯ খেলোয়াড়কে কিনতে তারা খরচ করেছে ২৩ কোটি ১৬ লাখ ইউরো। যে তালিকায় আছেন ডেকলান রাইস, কাই হাভার্টজ, জুলিয়ান টিম্বারের মতো তারকারা। অন্যদিকে তারা ৩ খেলোয়াড়কে বিক্রি করে পেয়েছে ১ কোটি ৯৯ লাখ ইউরো। শীর্ষে থাকা আর্সেনালের নেট খরচ এখন পর্যন্ত ২১ কোটি ১৭ লাখ ইউরো। যা খেলোয়াড় বেচাকেনার তালিকায় খরচের দিক থেকে ক্লাবটিকে শীর্ষে তুলে দিয়েছে।
আর্সেনাল ও আল হিলালের পর আছে পিএসজি। লিওনেল মেসিকে ফ্রি ট্রান্সফার হিসেবে ছাড়তে হয়েছে পিএসজিকে। ক্লাব ছাড়ার পথে আছেন কিলিয়ান এমবাপ্পেও। তবে এসব ওলট–পালটের মধ্যেও খেলোয়াড় কিন্তু ঠিকই কিনে চলেছে পিএসজি। এরই মধ্যে মার্কো আসেনসিও, লুকাস হার্নান্দেজসহ একাধিক তারকা ফুটবলারকেও কিনে নিয়েছে তারা। ক্লাবটির রাডারে আছেন হ্যারি কেইনের মতো তারকাও। দলবদলে এখন পর্যন্ত তারা খরচ করছে ১৫ কোটি ৯৬ লাখ ইউরো। আর খেলোয়াড় বিক্রি করে আয় করেছে ২ কোটি ১৫ লাখ ইউরো। সব মিলিয়ে ১৩ কোটি ৮০ লাখ ইউরো এখন পর্যন্ত খরচ পিএসজির।
তালিকার চতুর্থ স্থানে আছে রিয়াল মাদ্রিদ। এখন পর্যন্ত দলবদলে খেলোয়াড় বিক্রি না করা ক্লাবটি (বেনজেমাসহ ৬ খেলোয়াড় ফ্রি ট্রান্সফারে ক্লাব ছেড়েছেন) খরচ করেছে ১২ কোটি ৮৫ লাখ ইউরো। এরই মধ্যে জুড বেলিংহাম, আর্দা গুলের এবং হোসেলুর মতো তারকাকে দলে ভিড়িয়েছে রিয়াল। খরচ করার দিক থেকে ৫ নম্বরে আছে ইংলিশ ক্লাব টটেনহাম। জেমস ম্যাডিসন, পেদ্রো পোরোর মতো খেলোয়াড়দের আনতে স্পারদের খরচ ১৩ কোটি ৬৩ লাখ ইউরো। অন্যদিকে ৬ খেলোয়াড়কে ছেড়ে তারা পেয়েছে ১ কোটি ১৬ লাখ ইউরো। যেখানে ক্লাবটির নেট খরচ ১২ কোটি ৪৭ লাখ ইউরো।
এ ছাড়া তালিকার শীর্ষ দশে থাকা অন্য ক্লাবগুলো হচ্ছে যথাক্রমে আরবি লাইপজিগ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, নিউক্যাসল ইউনাইটেড, লিভারপুল ও চেলসি।
এ মৌসুমে সবচেয়ে বেশি খরচ করা ৫ ক্লাব