কিলিয়ান এমবাপ্পে ও লিওনেল মেসি
কিলিয়ান এমবাপ্পে ও লিওনেল মেসি

মেসি বনাম এমবাপ্পে—কাকে সমর্থন দেবেন পিএসজির মালিক

ফ্রান্স বা আর্জেন্টিনা নয়, বিশ্বকাপের আসল জয়ী অরিক্স কাতার ইনভেস্টমেন্ট কিংবা আরও নির্দিষ্ট করে বললে পিএসজির মালিক ও সভাপতি নাসের আল খেলাইফি।
তাঁর ক্লাবের দুই তারকা রোববার বিশ্বকাপের ফাইনালে একে অপরের মুখোমুখি হবেন। লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা বনাম কিলিয়ান এমবাপ্পের ফ্রান্স।

প্রশ্ন হচ্ছে, নিজের ক্লাবের এই দুই তারকার মধ্যে কাকে সমর্থন দেবেন পিএসজির মালিক খেলাইফি? এই ধনকুবের শেষ পর্যন্ত যাঁকেই সমর্থন দিন না কেন, শেষ পর্যন্ত জয়টা তাঁর–ই হবে। এরপরও অবশ্য কিছু কিন্তু থেকেই যায়।

কাতারি সরকারের সঙ্গে ফরাসি সরকারের দারুণ সম্পর্ক কিছুটা হলেও ফ্রান্সের প্রতি খেলাইফির পক্ষপাতের কারণ হতে পারে। আরব দেশটি আকারে ছোট হলেও তারা কিন্তু বিশ্বে গ্যাস মজুতে শীর্ষ সারির দেশগুলোর একটি। বিপরীতে ফ্রান্সের গ্যাসের মজুত অনেক কম। ভূরাজনৈতিক সম্পর্ক সমর্থনের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

পিএসজিতে দেখা যায় মেসি-এমবাপ্পে জুটির ঝলক

আর আর্জেন্টিনার সঙ্গে কাতারের তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাঁখো অবশ্য আর্জেন্টাইন প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজকে একসঙ্গে ফাইনাল দেখার আমন্ত্রণ জানিয়ে রেখেছেন। তবে আলবার্তো যাবেন না বলে জানা গেছে। সব মিলিয়ে বিবেচনা করলে ফ্রান্সের জয় চাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি পিএসজি মালিক নাসের আল খেলাইফির।  

ফুটবলের অর্থনৈতিক দিক বিবেচনা করলেও পিএসজি মালিকের ফ্রান্স দলকে সমর্থন দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। যদিও কদিন আগে নানা বিরোধে এমবাপ্পের পিএসজি ছাড়তে চাওয়ার গুঞ্জন শোনা গেছে। তবে কাগজে–কলমে ২৩ বছর বয়সী এই তারকার সঙ্গে ২০২৫ সাল পর্যন্ত চুক্তি আছে পিএসজির। যেখানে তিন বছরের জন্য এমবাপ্পে ৬৩০ মিলিয়ন ইউরো পাবেন।

এমবাপ্পের বিশ্বকাপ জয় পিএসজিকে নানা দিক থেকে অর্থনৈতিকভাবে সুবিধা দেবে। এমনকি এমবাপ্পে তখন ক্লাব ছেড়ে দিতে চাইলেও সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে পিএসজি। আর মেসির সঙ্গে পিএসজির চুক্তি যতটা অর্থনৈতিক, তার চেয়ে বেশি প্রতীকী অর্থে মর্যাদার, যা এমবাপ্পের সঙ্গে পিএসজির চুক্তির তুলনায় অর্থনৈতিকভাবে অতটা ফলপ্রদ নয়।  

আবেগের জায়গা বিবেচনায় নিলে মেসি অবশ্য এমবাপ্পের চেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবেন। খেলাইফি রিয়াল মাদ্রিদকে একেবারেই পছন্দ করেন না। রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কও ভালো না। আর কে না জানে, আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতলে যে মানুষগুলো সবচেয়ে বেশি অখুশি হবে, তাদের মধ্যে থাকবেন অনেক রিয়াল সমর্থকও। কারণ, মেসির জয় যে এক অর্থে বার্সেলোনারও জয়।

আর এমবাপ্পের পছন্দের ক্লাব যে রিয়াল মাদ্রিদ, তা তো সবার জানাই। তাই মেসি জিতলে রিয়াল–সংশ্লিষ্ট সবার জন্য বড় জবাব হিসেবেও দেখছেন অনেকে। এদিক বিবেচনায় খেলাইফি ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে সমর্থন দিলেও দিতে পারেন।

অবশ্য মানুষের সমর্থন তো এত দিক বিবেচনা করে হয় না। সমর্থন এমন একটি ব্যাপার, যা সব সূত্রের বিরুদ্ধে গিয়েও হতে পারে। তাই পিএসজি সভাপতি ফাইনালে কাকে সমর্থন করবেন, তা কেবল অনুমানই করা যায়।