দোহার খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে কমলা–উৎসব, নাকি নীল–চমক—কোনটি দেখা যাবে, এই প্রশ্ন নিয়ে শুরু হয় নেদারল্যান্ডস–ইকুয়েডর ম্যাচ। ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের ৮ নম্বরে থাকা ডাচদের চমকে দেওয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন ইকুয়েডরের গোলকিপার এরনান গালিন্দেজ। শেষ পর্যন্ত সেই হুমকির অনুবাদ পুরোপুরি করতে পারেনি তাঁরা। তবে কমলা শিবিরকে কাঁপিয়ে দিয়ে ম্যাচটি তারা ড্র করেছে ১–১ গোলে।
খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচটি শুরুই হয়েছে বলতে গেলে ডাচদের কমলা উচ্ছ্বাস নিয়ে। ৬ মিনিটেই কোডি গাকপোর গোলে এগিয়ে যায় তারা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোলটি ফিরিয়ে দিয়ে ইকুয়েডরকে সমতায় ফেরান এনার ভ্যালেন্সিয়া। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি ১–১ গোলের ড্রয়ে শেষ হয়েছে। এই ম্যাচের পর ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ’ গ্রুপের শীর্ষে নেদারল্যান্ডস। সমান ম্যাচে সমান পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ইকুয়েডর। তৃতীয় স্থানে থাকা সেনেগালের পয়েন্ট ৩। ২ ম্যাচ থেকে কোনো পয়েন্ট না পাওয়া স্বাগতিক কাতার এক ম্যাচ বাকি থাকতেই ছিটকে গেছে বিশ্বকাপ থেকে।
প্রথমার্ধটা একটু অন্যরকমই ছিল। নেদারল্যান্ডস এই অর্ধে একটি মাত্র শট নেয় আর তা থেকেই গোলটি পায়। ২০১০ বিশ্বকাপের পর এমন ঘটনা এটাই প্রথম। সেবার ইতালির বিপক্ষে প্রথমার্ধে গোল লক্ষ্য করে একটি মাত্র শট নিয়ে লক্ষ্যভেদ করেছিল নিউজিল্যান্ড। ডাচদের এগিয়ে দেওয়া গোলটি করে অনন্য এক কীর্তি গড়েছেন গাকপোও। বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের পক্ষে নিজের প্রথম দুই ম্যাচে গোল করা দ্বিতীয় খেলোয়াড় তিনি। এর আগে এই কীর্তি ২০১৪ বিশ্বকাপে গড়েছেন মেম্ফিস ডিপাই।
ইকুয়েডর গোলটি শোধ দেয় ৪৯ মিনিটে। বাঁ প্রান্ত থেকে নিচুর এক শট নেন এস্তুপিয়ান। ডাচ গোলকিপার নোপার্ট বলটি ঠেকালেও গ্লাভসে নিতে পারেননি। বল পেয়ে যান সামনে এগিয়ে আসা ভ্যালেন্সিয়া। সহজেই তিনি বলটি জালে জড়ান। এটা নিয়ে বিশ্বকাপে ইকুয়েডরের সর্বশেষ ৬টি গোলই তাঁর। বিশ্বকাপের ইতিহাসে কোনো দলের পক্ষে টানা ৬টি গোল করা চতুর্থ খেলোয়াড় হয়ে গেছেন তিনি। এর আগে এই কীর্তি গড়েছেন পর্তুগালের ইউসেবিও (১৯৬৬), ইতালির পাওলো রসি (১৯৮২) ও রাশিয়ার ওলেগ সালেঙ্কো (১৯৯৪)।
ইকুয়েডর অবশ্য এগিয়ে যেতে পারত প্রথমার্ধের শেষ দিকেই। এ সময় নেদারল্যান্ডসকে যেন চেপে ধরেছিল ইকুয়েডরের আক্রমণভাগ। এস্তুপিয়ান বল জালে পাঠিয়ে উচ্ছ্বাসেও মেতেছিলেন। কিন্তু গোলটি জালে যাওয়ার সময় পোরোজ্জো ছিলেন অফসাইড পজিশনে। বলে তিনি কোনোপ্রকার ছোঁয়া না লাগালেও রেফারি অফসাইডের বাঁশি বাজান। বিষয়টি নিয়ে ইকুয়েডরের খেলোয়াড়েরা প্রতিবাদ করেন রেফারির সঙ্গে। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। ওই গোলটি ইকুয়েডর পেয়ে গেলে ম্যাচের ফল অন্যরকম হলেও হতে পারত।