‘আমি ভালো একটা জীবন পেয়েছি। আমার মনে হয়, আমরা সবাই মৃত্যুর দিনটিকে ভয় পাই। কিন্তু জীবন মানে মৃত্যুও। আপনাকে এটা যেমন, সেভাবেই গ্রহণ করা শিখতে হবে। আশা করি, সব শেষ হওয়ার পর লোকে বলবে, মানুষটা ভালো ছিল। কিন্তু সবাই সেটা বলবে না’— কদিন আগে এক প্রামাণ্যচিত্রে এভাবেই বিদায়ী বার্তা দিয়েছিলেন ক্যানসারে আক্রান্ত ইংল্যান্ডের সাবেক কোচ সভেন-গোরান এরিকসন। সেদিন তাঁর বার্তায় হৃদয় ভেঙেছিল অনেকের। তবে সেই বিদায়ী বার্তার রেশ কাটার আগেই আজ সত্যি সত্যি বিদায় নিলেন এরিকসন।
৭৬ বছর বয়সী অন্য লোকে পাড়ি জমানো এই কোচ গত জানুয়ারিতেই তাঁর ক্যানসার হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছিলেন। সে সময় তিনি বলেছিলেন, তাঁর হাতে বড়জোর এক বছর সময় আছে। তবে সেই খবরের ৮ মাস না পেরোতেই চলে গেলেন ইংল্যান্ডের প্রথম নন-ব্রিটিশ এই কোচ। এরিকসনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তাঁর এজেন্ট বো গুস্তাবসন। তিনি জানিয়েছেন, এরিকসন আজ সকালে নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেছেন। এ সময় পরিবারের সদস্যরা তাঁর পাশে উপস্থিত ছিলেন।
চার দশকে ১৭টি দলকে কোচিং করানো এরিকসন সব মিলিয়ে জিতেছেন ১৮টি ট্রফি। ১৯৭৭ সালে সুইডিশ ক্লাব ডেগেরফোর্স আইএফকে দিয়ে কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করেন এরিকসন। তাঁর সর্বশেষ দল ছিল ফিলিপাইন জাতীয় দল। ২০১৯ সালে কোচিংকে বিদায় জানান সুইডিশ এই কোচ। ২০০১-০৬ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের দায়িত্ব পালন করেছিলেন এরিকসন। তাঁর অধীন ৫ বছরের মধ্যে ৩টি বড় টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছিল ইংল্যান্ড।
এ সময়ের মধ্যে ২০০২ ও ২০০৬ সালের বিশ্বকাপ এবং ২০০৪ সালের ইউরোর শেষ আটে খেলেছিল ‘থ্রি লায়নস’রা। এ ছাড়া ইউরোপের শীর্ষ ক্লাবগুলোর মধ্যে ম্যানচেস্টার সিটি, লেস্টার সিটি, এএস রোমা এবং লাৎসিওর দায়িত্ব পালন করেন এরিকসন। এর মধ্যে ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমের লাৎসিওর হয়ে সিরি ‘আ’র শিরোপা জেতেন তিনি।
গত জানুয়ারিতে সুইডিশ রেডিও পিওয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এরিকসন বলেছেন, ‘যত দিন পারি, আমি লড়াই চালিয়ে যাব। আমার গুরুতর অসুস্থতা আছে। বড়জোর এক বছর বাঁচব। অবস্থা খারাপ হলে আরও কম। নির্দিষ্ট করে বলাটা অসম্ভব। তাই এ ব্যাপারে না ভাবাই ভালো।’ এরিকসনের পরের আশঙ্কাটাই সত্যি হলো। এক বছরের আগেই চলে গেলেন একসময়ের বিখ্যাত এই কোচ।