টাইব্রেকারে জিতে এফএ কাপের ফাইনালে ওঠার পর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড খেলোয়াড়দের উদ্‌যাপন
টাইব্রেকারে জিতে এফএ কাপের ফাইনালে ওঠার পর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড খেলোয়াড়দের উদ্‌যাপন

রূপকথা লেখা হলো না কভেন্ট্রির, টাইব্রেকারে জিতে ফাইনালে ইউনাইটেড

কভেন্ট্রি ৩ (২): ৩(৪) ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড

ফুটবল ইতিহাসে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প কম নেই। অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনের সেই সব গল্পের ভান্ডারে যোগ হলো আরেকটি গল্প। আজ যে গল্প লিখল কভেন্ট্রি সিটি। ইংলিশ ফুটবলের দ্বিতীয় স্তর চ্যাম্পিয়নশিপের দলটি আজ এফএ কাপের সেমিফাইনালে কী অবিশ্বাস্যভাবে না ঘুরে দাঁড়াল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে। ওয়েম্বলিতে ৭০ মিনিট পর্যন্ত ৩-০ গোলে পিছিয়ে পড়া দলটি ৩ গোল শোধ করে ম্যাচটিতে নিয়ে যায় অতিরিক্ত সময়ে।

কিন্তু শেষ হাসি হাসা হয়নি ‘পুঁচকে’ দলটির, লেখা হয়নি রূপকথা। শেষ পর্যন্ত যে টাইব্রেকারের লটারিতে হেরে গেছে দলটি। টাইব্রেকারে রাসমুস হইলুন্দের নেওয়া ইউনাইটেডের পঞ্চম শটটি জালে জড়াতেই নিশ্চিত গতবারের মতো এবারও  এফএ কাপের ফাইনালটা ম্যানচেস্টার ডার্বিই হচ্ছে। টাইব্রেকারটা ইউনাইটেড জিতেছে ৪-২ গোলে।

অথচ কাসেমিরোর শট ফিরিয়ে দিয়েও টাইব্রেকার শুরু করেছিলেন কভেন্ট্রির গোলরক্ষক। এরপর প্রথম দুই শটেই গোল করে এগিয়েও গিয়েছিল দলটি। কিন্তু তৃতীয় ক্যালাম ও’হেয়ারের নেওয়া তৃতীয় দুর্বল তৃতীয় শটটি ফিরিয়ে দেন আন্দ্রে ওনানা। কভেন্ট্রি গোল করতে পারেনি চতুর্থ শটেও। বেন শিফ বার উঁচিয়ে মারেন সেই শট। আর ওদিকে দিয়োগো দালোত, ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন, ব্রুনো ফার্নান্দেজের পর হইলুন্দও গোল করে ফাইনালে তুলে দেন দলকে।

টাইব্রেকারে  আগে অতিরিক্ত সময়ের শেষ দিকে কী নাটকটাই না হলো। তবে সেটি বিয়োগান্ত নাটকই ছিল কভেন্ট্রির জন্য। ১১৭ মিনিটে এলিস সিমসের শট ক্রসবারের নিচের অংশে  লেগে ভেতরে না ঢুকে বেরিয়ে যায়। আর  অতিরিক্ত সময়ের যোগ করা সময়েও গোল দিয়েও উৎসবে মাতোয়ারা হতে পারল না কভেন্ট্রি। হাজি রাইটের পাস থেকে ভিক্টর টর্প গোল করে ইউনাইটেডকে স্তব্ধ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু রাইট সুতোর ব্যবধানে অফসাইড থাকায় ভিএআর বাতিল করে দেয় সেই গোল।

এত কাছে তবু এত দূর! প্রত্যাবর্তনের অবিশ্বাস্য গল্প লিখেও শেষ পর্যন্ত মন খারাপ করে ফিরতে হলো কভেন্ট্রিকে

স্কট ম্যাকটমিনে ও হ্যারি ম্যাগুয়ারের গোলে প্রথমার্ধটা ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে শেষ করে ইউনাইটেড। এরিক টেন হাগের দল ব্যবধানটা ৩-০ করে ৫৮ মিনিটে। সেই গোলটা ব্রুনো ফার্নান্দেজের।

ইউনাইটেডের জয় ধরে নিয়ে যারা টেলিভিশনের চ্যানেল পাল্টেছিলেন তাঁরা এরপর মিস করেছেন ম্যাচের মূল সময়ের অবিশ্বাস্য শেষ অংশটা। ৭১ মিনিটে এলিস সিমসের গোলে ব্যবধান কমানোর পর কী একচেটিয়াই না খেলল কভেন্ট্রি।

শেষ ২০ মিনিট ও যোগ করা সময়ে বল ঘোরাফেরা করেছে ইউনাইটেডের সীমানাতেই। আর কভেন্ট্রি যতবারই আক্রমণে গেছে মনে হয়েছে কিছু একটা হতে যাচ্ছে। ৭৯ মিনিটে ক্যালাম ও’হেয়ারের কামানের গোলার মতো শট ওয়ান-বিসাকার শরীর লেগে ওনানাকে দর্শক বানিয়ে ঢুকে যায় জালে।

যোগ করা সময়ে পেনাল্টি থেকে গোল করে সমতা ফিরিয়ে ম্যাচটিকে অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে গিয়েছিলেন হাজি রাইট (ডানে)

এরপর যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে সেই বিসাকা হ্যান্ডবল করে পেনাল্টি উপহার দিলেন। হাজি রাইট ভুল করেননি গোল করে স্কোর লাইনটা ৩-৩ করতে।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভাগ্য মুখ তুলে তাকাল ইউনাইটেডের দিকেই।