ওমর শিভোরি, ওরেস্তে করবাত্তা, অসভালদো ক্রুজ, হামবের্তো মাসচিওদের নিয়ে গড়া ১৯৫৭ কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনার সেই দলকে অনেকেই বলেন তাদের ইতিহাসে সেরা। একই অধিষ্ঠানে রাখা হয় ১৯৭৮ বিশ্বকাপজয়ী মারিও কেম্পেসদের সেই দলকেও।
ডিয়েগো ম্যারাডোনা–হোর্হে বুরুচাগাদের ’৮৬ বিশ্বকাপজয়ী দলটাও একই সম্মান পেয়ে থাকে আর্জেন্টাইনদের কাছে। গত ডিসেম্বরের পর এবার এই তালিকায় আরেকটি দল যোগ হয়েছে। কাতারে আর্জেন্টিনাকে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জেতানো লিওনেল স্কালোনির দল—রদ্রিগো দি পলের মতে, এই দলটাই আর্জেন্টিনার ইতিহাসে সেরা।
স্প্যানিশ ক্লাব আতলেতিকো মাদ্রিদের এই মিডফিল্ডার কাতার বিশ্বকাপে চোট লুকিয়ে খেলেছেন। পাশে পেয়েছিলেন লিওনেল মেসি ও আর্জেন্টিনা দলের ফিজিওকে। মাঠের লড়াইয়ে মেসিকে সব সময় আগলে রাখায় রদ্রিগো দি পল ‘মেসির দেহরক্ষী’ তকমাও পেয়েছেন। ফাইনালে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হন দি পল–মেসিরা। ৩৬ বছর পর তাঁদের হাত ধরে বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকেই প্রশ্নটা উঠছে, আর্জেন্টিনার ফুটবল ইতিহাসে সেরা জাতীয় দল কোনটি?
মাদ্রিদ থেকে আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস–এর সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছেন আতলেতিকো তারকা। কোচ লিওনেল স্কালোনির বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে মন্তব্যটি করেছেন রদ্রিগো দি পল, ‘তিনি (স্কালোনি) সম্ভাব্য সবকিছুই করেছেন। দলের মধ্যে বেশ কিছু বিষয় একীভূত করেছিলেন। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো দলের মধ্যে সম্প্রীতির সঞ্চার করেছিলেন—দলে বেশ কিছু তারকা থাকায় যা বেশ কঠিন কাজ। কিন্তু পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, জাতীয় দল সবকিছুর ঊর্ধ্বে। আমাকে ক্ষমা করবেন, আমাদের দেশের ফুটবল ইতিহাসে এটাই সেরা জাতীয় দল।’
স্কালোনির দলকে আর্জেন্টিনার ইতিহাসে সেরা বলার পক্ষে যুক্তিও দিয়েছেন রদ্রিগো দি পল, ‘আমি এটা অহংকার থেকে বলছি না। জাতীয় দল আমাদের চেয়েও ভালো খেলোয়াড় পেয়েছে। কিন্তু দল হিসেবে আমরা সব চ্যাম্পিয়নকেই হারিয়েছি। সর্বশেষ কোপা আমেরিকাজয়ী ব্রাজিল, ইউরোজয়ী ইতালি এবং সর্বশেষ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে হারিয়েছি।’
দি পল বলে যান, ‘কাজটা কিন্তু মোটেও সহজ ছিল না। হার ছাড়াই আমরা (বিশ্বকাপ) বাছাইপর্ব পার হয়েছি। ১৫ বছর পর জিতেছি বলিভিয়ায়। আর পেরুতে কত বছর পর জিতেছি, তা বলতে পারব না। অপরাজিত থাকার রেকর্ড ভেঙেছি। দল হিসেবে এই জাতীয় দল সমর্থকদের নিয়েই খুব গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য পেয়েছে।’
২৮ বছর বয়সী রদ্রিগো দি পল পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি কোনো বিতর্ক তৈরি করতে এই মন্তব্য করেননি, ‘আমি কাউকে রাগাতে চাই না। কারণ, আর্জেন্টিনার (ফুটবল) ইতিহাস খুবই সমৃদ্ধ।’
কাতারে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের তাৎপর্য নিয়েও কথা বলেছেন দি পল, ‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়াই অমরত্বের চাবিকাঠি। আমরা অমর হয়ে রইব। আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনে (এএফএ) গিয়ে ’৭৮ ও ’৮৬ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নদের ছবি দেখেছি। এখন আমাদের ছবিও থাকবে সেখানে। অবিশ্বাস্য!’