‘বোমা’টা ফাটিয়েছে ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যম ‘লেকিপ’। কিলিয়ান এমবাপ্পে নাকি পিএসজির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ আর বাড়াতে চান না। এমবাপ্পে তা না করলে তাঁকেও ধরে রাখতে চায় না পিএসজি। ভালো প্রস্তাব পেলে এমবাপ্পের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে এই গ্রীষ্মকালীন দলবদলেই তাঁকে বেচে দিতে চায় ফরাসি ক্লাবটি
পিএসজিতে তাঁর চুক্তির মেয়াদ ফুরাতে আরও এক বছর বাকি। ২৪ বছর বয়সী ফরাসি তারকাকে পিএসজি যেহেতু বিক্রি করতে চায় তাই দলবদলের বাজার গরম হয়ে ওঠাই স্বাভাবিক। তবে চাইলেই তো আর যেকোনো ক্লাব তাঁকে কিনতে পারবে না। এমবাপ্পের যে বাজারদর, সব ক্লাব তাঁর প্রতি হাত বাড়াতে পারবে না।
গত সোমবার এমবাপ্পে চিঠি দিয়ে পিএসজিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেন ২০২৪ সালের ৩০ জুনের পর তিনি ক্লাবটিতে আর চুক্তির মেয়াদ বাড়াবেন না। এমবাপ্পের এই চিঠি দেওয়া ক্লাব ভালোভাবে নেয়নি। সে জন্যই এমবাপ্পেকে এবারের গ্রীষ্মকালীন দলবদলে ছেড়ে দিতে পারে পিএসজি। কিন্তু ছাড়বে কত টাকায়? সে সিদ্ধান্ত পিএসজির, তবে ‘ট্রান্সফার মার্কেট’ ও ‘সিআইএস’ দেখে এমবাপ্পের বর্তমান বাজারদরটা আন্দাজ করে নেওয়া যায়। ফুটবলের জনপ্রিয় ডেটাবেজ ট্রান্সফারমার্কেটের মতে এমবাপ্পের বর্তমান বাজারমূল্য ১৮ কোটি ইউরো।
তবে সিআইএস ফুটবল অবজারভেটরির হিসাবে তাঁর দামটা আরেকটু কম। বয়স, সম্ভাবনা, প্রতিভা ও ভবিষ্যতে ক্যারিয়ার কতটা বড় হতে পারে—এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে খেলোয়াড়ের বর্তমান দাম কেমন হতে পারে, সে বিষয়ে ধারণা দিয়ে থাকে সিআইএস। প্রতিষ্ঠানটির হিসাবে, এমবাপ্পের বর্তমান বাজারমূল্য ১৬ কোটি ৩২ লাখ ইউরো। কিছুদিন আগে সিআইএস বিশ্বে এ মুহূর্তে সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়দের তালিকা প্রকাশ করেছিল। সে তালিকায় ১০ম স্থানে ছিলেন এমবাপ্পে।
ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যম ‘আরএমসি স্পোর্ট’ মনে করছে, ট্রান্সফারমার্কেট কিংবা সিআইএসের হিসাবে এমবাপ্পের যে দাম ধরা হয়েছে, তা খেলোয়াড়টির প্রতিভা ও সম্ভাবনার তুলনায় কম। পিএসজিতে এমবাপ্পের চুক্তির মাত্র এক বছর বাকি থাকাকে এর কারণ বলে মনে করছে আরএমসি। পিএসজির সঙ্গে এমবাপ্পের চুক্তি তিন বছরের হলে তাঁর বর্তমান দাম ২৬ কোটি ১৮ লাখ ইউরো হতো বলে হিসাব করে জানিয়েছে সিআইএস।
পিএসজি গত বছর মে মাসে এমবাপ্পের সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি করেছিল।
এমবাপ্পেকে ২০১৭ সালে মোনাকো থেকে ধারে এনেছিল পিএসজি। পরের বছর ১৮ কোটি ইউরোয় তাঁকে কিনেও নেয়। আরএমসি স্পোর্টের মতে, পিএসজি যদি এবারের গ্রীষ্মকালীন দলবদলে তাঁকে বিক্রি করতে চায় তাহলে ১৮ থেকে ২০ কোটি ইউরোর মধ্যে বেচতে পারবে। এখন প্রশ্ন হলো, এত দামে তাঁকে কেনার সামর্থ্য আছে কতগুলো ক্লাবের?
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ম্যানচেস্টার সিটি, লিভারপুল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও নিউক্যাসল ইউনাইটেডের তাঁকে কেনার মতো টাকা আছে। এবার ‘ট্রেবল’জয়ী সিটির আক্রমণভাগে আর্লিং হলান্ড থাকায় এমবাপ্পের পিছু তাদের না ছোটার সম্ভাবনাই বেশি। বাকি তিনটি ক্লাব এমবাপ্পের পিছু ছোটার আলোচনায় এখনো উঠে আসেনি।
লা লিগার দল রিয়াল মাদ্রিদ একসময় এমবাপ্পের পিছু ছুটেছে। গত বছর রিয়ালকে নাকচ করে পিএসজির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়ান এমবাপ্পে। ফরাসি ফরোয়ার্ড পিএসজি ছাড়তে চান, এই খবর চাউর হওয়ার পর স্পেনের সংবাদমাধ্যম ‘এএস’ তাদের ফ্রন্টপেজে জানতে চেয়েছে, ২০২২ সালে রিয়ালে না আসায় ক্লাবটির ভক্তরা এমবাপ্পেকে ক্ষমা করে দিতে রাজি আছেন কি না?
তবে স্পেনের আরেক সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, রিয়াল মাদ্রিদ মনে করে, এমবাপ্পের সমস্যাটা শুধুই তাঁর, মাদ্রিদের ক্লাবটির নয়। তাই রিয়ালে আসতে চাইলে পিএসজি কিংবা এমবাপ্পের পক্ষ থেকে পদক্ষেপটা আগে নিতে হবে।