জাতীয় দলের কোচিং করানো একজন ফুটবল কোচের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন বিশ্বকাপ জয়। সেটিই আবার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জও বটে। অসংখ্য হাইপ্রোফাইল কোচের ক্যারিয়ার শেষ হয়েছে বিশ্বকাপ না জিতেই। কঠিন সেই চ্যালেঞ্জটি নিজের প্রথম বিশ্বকাপেই পেরিয়ে গেছেন আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনি। ৪৫ বছর বয়সী এই কোচ গত ডিসেম্বরে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জিতিয়ে নাম লিখিয়েছেন ফুটবল ইতিহাসে।
তবে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জটি নিয়েও থামছেন না স্কালোনি, এবার সাইকেল চালিয়ে কঠিন এক পর্বত জয় করে উতরে গেছেন আরেকটি চ্যালেঞ্জ। স্কালোনির সাইকেল প্রীতি অবশ্য নতুন কিছু নয়। এর আগে ২০১৫ সালে ফুটবলার হিসেবে অবসরের পর নিজের দুশ্চিন্তা কমাতে এবং মানসিক সুস্থতার জন্য সাইক্লিংকে বেছে নিয়েছিলেন স্কালোনি। পাশাপাশি নিজেকে শারীরিকভাবে ফিট রাখতেও সাইকেল চালানোকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিতে শুরু করেন এই কোচ। সাইকেল চালাতে চালাতে একপর্যায়ে বনে যান সাইক্লিংয়ের দারুণ ভক্তও।
অবসরে যাওয়া এলিট অ্যাথলেটদের মধ্যে সাইক্লিংয়ের দিকে ঝোঁকার প্রবণতা সাম্প্রতিক সময়ে বেশ বেড়েছে। এর আগে স্প্যানিশ কোচ লুইস এনরিকেকে ডাকারে সাইক্লিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেখা গেছে। যেটি ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার দুরূহ সাইক্লিং প্রতিযোগিতাগুলোর অন্যতম। আর্জেন্টিনার সাবেক বাস্কেটবল তারকা মানু জিনবিলি রীতিমতো সাইক্লিংয়ে আসক্ত। বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাইক্লিংয়ের ছবিও পোস্ট করেন মানু।
এনরিকে-মানুর মতো বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন কোচ স্কালোনিও সময় পেলে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। সাধারণত নিজের আনন্দের জন্য সাইকেল চালানোকে বেছে নিলেও সাম্প্রতিক সময়ে এনরিকের মতো কঠিন এক চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে আলোচনায় এসেছেন স্কালোনি। তাঁকে এই চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন সাবেক স্প্যানিশ সাইক্লিস্ট এবং ফ্রেঞ্চ ও স্প্যানিশ ট্যুরজয়ী পেদ্রো দেলগাদো।
স্কালোনিকে দেলগাদো চ্যালেঞ্জ দেন সাইকেল নিয়ে স্পেনের ঐতিহ্যবাহী পর্বত এল আংলিরু আরোহণ করতে। ক্যান্টাব্রিয়াতে অবস্থিত পর্বতটি মূলত ‘নরকের পথ’ নামে পরিচিত। অনেকের কাছে এটি সাইক্লিংয়ের জন্য সবচেয়ে কঠিন পর্বতগুলোর অন্যতম। স্কালোনি সাইকেল নিয়ে পাড়ি দিয়েছেন এই পুরো পথটাই।
স্কালোনিকে চ্যালেঞ্জ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেলগাদো নিজেই। কারণ, তাঁর ছেলে নাকি স্কালোনিকে মায়োর্কা ৩১২ সাইক্লিং ট্যুর সম্পন্ন করতে দেখেছে। যে প্রতিযোগিতাটিতে পাড়ি দিতে হয় কণ্টকাকীর্ণ ১৬৭ কিলোমিটারের পথ। স্কালোনিকে নিয়ে দেলগাদো বলেছেন, ‘স্কালোনির প্রস্তুতি এবং শক্তি দেখে আমি বিস্মিত হয়েছি। আমি জানতাম সে ভালো করবে। তবে এ ধরনের পারফরম্যান্স তার কাছ থেকে আশা করিনি।’ স্কালোনি বলেছেন, ‘রহস্যে ভরপুর এই পর্বতকে জানতে পারাটা দারুণ অভিজ্ঞতা ছিল।’