দুটি আত্মঘাতী গোল হজম করেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
দুটি আত্মঘাতী গোল হজম করেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড

জোড়া আত্মঘাতী গোল হজম করে সেভিয়ার সঙ্গে ড্র করল ইউনাইটেড

ইউরোপা লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে সেভিয়ার বিপক্ষে দুই গোলে এগিয়ে গিয়েও জিততে পারল না ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। জোড়া আত্মঘাতী গোল হজম করে নিজেদের মাঠে ইউনাইটেড ড্র করল ২-২ গোলে। একই রাতের আরেক ম্যাচে ঘরের মাঠে কষ্টে জিতেছে জুভেন্টাস। সিরি ‘আ’র সবচেয়ে সফলতম দলটি হারিয়েছে পর্তুগিজ ক্লাব স্পোর্টিং লিসবনকে। অন্য ম্যাচে ফেইনুর্ডের কাছে ১-০ গোলে হেরে গেছে এএস রোমা। ম্যাটস ‍ওইফেরেরে ৫৩ মিনিটের মাথায় করা গোলটিই গড়ে দিয়েছে পার্থক্য।

ওল্ড ট্রাফোর্ডে সেভিয়ার দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন

(ইউনাইটেড ২: ২ সেভিয়া)

শক্তি-সামর্থ্যে সেভিয়ার চেয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এগিয়ে থাকা দল। কিন্তু ইউরোপা লিগ মানেই তো সেভিয়া। প্রতিযোগিতার সবচেয়ে সফলতম দল বলে কথা। এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৬ বার ইউরোপা লিগের শিরোপা জিতেছে আন্দালুসিয়ান ক্লাবটি। তাই ইউনাইটেড-সেভিয়া ম্যাচে নিরঙ্কুশ ফেবারিট বলা যাচ্ছিল না কাউকেই।

তবে এরিক টেন হাগের বদলে যাওয়া ইউনাইটেডের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে সময় লাগল মাত্র ২১ মিনিট। ততক্ষণে ওল্ড ট্রাফোর্ডের ক্লাবটির লিড যে ২-০ গোলের। শীতকালীন দলবদলে ধারে খেলতে আসা অস্ট্রিয়ান ফরোয়ার্ড মার্সেল সাবিতজারের জোড়া গোলে প্রথমার্ধে দাপট ইউনাইটেডরই।

প্রথমার্ধে তৈরি হওয়া সেই সুর অবশ্য কাটল দ্বিতীয়ার্ধে। ইউরোপার চেনা পরিবেশই যেন ম্যাচের শেষ ভাগে জাগিয়ে তুলল সেভিয়াকে। টাইরেল মালাসিয়ার আত্মঘাতী গোলে ৮৪ মিনিটে ব্যবধান কমায় সেভিয়া। যোগ করা সময়ে পাওয়া পরের গোলটিও ছিল আত্মঘাতী। এবার গোল আসল ডিফেন্ডার হ্যারি ম্যাগুয়ের কাছ থেকে। শেষ পর্যন্ত জিততে না পারলেও দুর্দান্ত এ ড্রয়ে ঘরের মাঠে ইউনাইটেডের বিপক্ষে সুবিধাজনক অবস্থানে থেকেই খেলতে নামবে সেভিয়া।

জোড়া গোল করেও দলকে জেতাতে পারেননি সাবিতজার

এদিন প্রথমার্ধের খেলায় দুই দলের পার্থক্য বোঝা যাবে একটা পরিসংখ্যানে। শুরুর ৪৫ মিনিটে দুই দলই ৭টি করে শট নেয়। ইউনাইটেডের ৫টি শটই যেখানে লক্ষ্যে ছিল, সেখানে সেভিয়ার লক্ষ্যে শট ছিল মাত্র ১টি।

শটের হিসাব বাদ দিলেও প্রথমার্ধে দারুণ আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে ইউনাইটেড। মূলত ইউনাইটেডের গতিময় ফুটবলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছিল সেভিয়া। শুরুতে পিছিয়ে গিয়ে মনোযোগও হারায় তারা। তবে প্রথমার্ধের শেষ দিকে দাভিদ দি হেয়া দারুণ নৈপুণ্যে সেভিয়ার গোলের প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে না দিলে ম্যাচের পরিস্থিতি তখনই বদলে যেতে পারত।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও দাপট ছিল ইউনাইটেডের। ব্রাজিলিয়ান তারকা আন্তনির শট পোস্টে না লাগলে ব্যবধান ৩-০ করতে পারত ‘রেড ডেভিল’রা। ইউনাইটেড না পারলেও সেভিয়া অবশ্য পেরেছে। ম্যাচের শেষ ভাগে দারুণভাবে ফিরে আসে তারা। ফিরিয়ে দেয় দুটি গোলই। যদিও গোল দুটিই ছিল একরকম উপহার হিসেবে পাওয়া। গোল দুটিতেই যে শেষ স্পর্শ ছিল ইউনাইটেডের খেলোয়াড়দের। প্রথমে ৮৪ মিনিটে মালাসিয়া এরপর ম্যাচ শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে নিজেদের জালে বল জড়ান ম্যাগুয়ের। এই দুই গোলে শেষ পর্যন্ত হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে টেন হাগ ও তাঁর দলকে।

জুভেন্টাসের গোল উদ্‌যাপন

কষ্টে জিতল ‍জুভেন্টাস

(জুভেন্টাস ১: ০ লিসবন)

ঘরের মাঠে ফেদেরিকো গাত্তির একমাত্র গোলে কষ্টসাধ্য জয় পেয়েছে জুভেন্টাস। স্পোর্টিং লিসবনের বিপক্ষে এদিন জয়ের জন্য বেশ সংগ্রাম করতে হয়েছে জুভদের। নিজেদের মাঠে দাপট দেখানো দূরে থাক, জয়ের জন্য রীতিমতো সংগ্রাম করতে হয়েছে ‘তুরিনের বুড়ি’দের।

এমনকি পোলিশ গোলরক্ষক ভয়চেক সেজনি দুটি দুর্দান্ত সেইভ না করলে বিপদে পড়তে হতে পারত জুভদের। সেজনি প্রথমে ঠেকান সেবাস্তিয়ান কোটেসের দুর্দান্ত এক ভলি, এরপর কাছাকাছি জায়গা থেকে ফিরিয়ে দেন পেদ্রো গঞ্জালেসকে।

ম্যাচে এদিন বলদখল এবং আক্রমণ দুই জায়গাতেই এগিয়ে ছিল লিসবন। তাদের ৫৯ শতাংশ বলের দখলের বিপরীতে জুভেন্টাসের দখলে বল ছিল ৪১ শতাংশ। আর জুভরা যেখানে ৯ শট নিয়ে ৩টিই লক্ষ্যে রেখেছে, সেখানে লিসবন রেখেছে ১৫টির মধ্য ৬টি। কিন্তু নিজেদের অভিজ্ঞতা ও ফিনিশিংয়ের ঘাটতি আর সেজনির দারুণ পারফরম্যান্সের কারণে শেষ পর্যন্ত গোল পায়নি তারা। মাঠ ছাড়তে হয়েছে হার নিয়েই।

রোমাকে হারিয়ে ফেইনুর্ডের উৎসব

হারল মরিনিওর রোমা

(ফেইনুর্ড ১: ০ রোমা)

ডাচ প্রতিপক্ষ ফেইনুর্ডের মাঠে ভুলে যাওয়ার মতো এক রাত পার করেছে এএস রোমা। প্রতিপক্ষের মাঠে খেলতে গিয়ে রোমা হেরেছে ১-০ গোলে। এদিন বলের দখলে ফেইনুর্ডের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও, সুযোগ তৈরি ও আক্রমণে এগিয়েই ছিল রোমা। কিন্তু সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারেনি ইতালিয়ান ক্লাবটি। এমনকি পেনাল্টি থেকেও গোল করতে ব্যর্থ হয়েছে রোমা। গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন রোমা অধিনায়ক লরেনৎসো পেলেগ্রিনি।

হারের পাশাপাশি মরিনিওর জন্য বড় দুঃসংবাদ চোটের কারণে একাধিক খেলোয়াড়কে হারানো। ম্যাচের ২৬ মিনিটে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন আর্জেন্টাইন তারকা পাওলো দিবালা। ৫৮ মিনিটে মাঠ ছাড়েন ট্যামি আব্রাহাম।

এই ম্যাচ জিতে ফেইনুর্ড অবশ্য প্রতিশোধ মিশনও সম্পন্ন করেছে। এর আগে ২০২২ সালের উয়েফা ইউরোপা কনফারেনস লিগের ফাইনালে রোমার কাছে ১-০ গোলে হেরে শিরোপা হাতছাড়া করেছিল ফেইনুর্ড।