২৭ জানুয়ারি: মৌসুম শেষে ক্লাব ছাড়ার ঘোষণা। ২৫ এপ্রিল: ক্লাবে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত। ২৪ মে: বরখাস্ত।
জাভি হার্নান্দেজ যেমন ‘ইউটার্ন’ নিয়ে নাটকের শুরুটা করেছিলেন, তেমনি জাভিকে নিয়েও বার্সেলোনা নাটকের ইতি টেনেছে। শেষ পর্যন্ত জাভিকে বরখাস্তই করেছে বার্সা।
২০২১ সালের নভেম্বরে কোচ হয়ে বার্সায় ফেরা জাভির সঙ্গে চুক্তি ছিল ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার বছরখানেক আগেই ছাঁটাই হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই বার্সাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে। ক্ষতিপূরণের অর্থটা নেহাত কম নয়—১ কোটি ৫০ লাখ ইউরো, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৯০ কোটি টাকারও বেশি।
বার্সেলোনাভিত্তিক স্প্যানিশ দৈনিক ‘লা ভ্যানগার্দিয়া’ জানিয়েছে, এই আর্থিক ক্ষতিপূরণ দুই ভাগে বিভক্ত হবে। প্রধান কোচ হিসেবে জাভি পাবেন অর্ধেকটা। অর্থাৎ, ৭৫ লাখ ইউরো (৯৫ কোটি টাকার মতো)। বাকি অর্ধেক পাবেন তাঁর কোচিং স্টাফের সদস্যরা।
স্পেনের ক্রীড়া দৈনিক ‘এএস’ অবশ্য জানিয়েছে, লা লিগায় কোচদের ক্ষেত্রেও যেহেতু বেতনসীমা-সংক্রান্ত নীতি আছে, তাই পাওনা টাকা থেকে কিছুটা ছাড় দেবেন জাভি। ৭৫ লাখ ইউরোর পরিবর্তে তিনি ৭০ লাখ ইউরো (৮৯ কোটি টাকা) নেবেন। এতে করে নিজের লভ্যাংশ কিছুটা কম হলেও বার্সাকে আর্থিক সংগতি নীতি ভাঙার ঝামেলায় পড়তে হবে না।
যে বার্সা জাভিকে ছাঁটাই করল, বিদায়বেলাতেও সেই বার্সার প্রতি এমন ভালোবাসা দেখে ক্লাবটির বোর্ড ও ক্রীড়া কমিশন তাঁকে ‘ক্লাবের প্রিয়পাত্র’ বলেছে।
এএস আরও জানিয়েছে, স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার দুপুরে বার্সার ট্রেনিং গ্রাউন্ড সিউতাত এস্পোর্তিভায় খেলোয়াড়দের অনুশীলন করাচ্ছিলেন জাভি। বার্সার কোচ হিসেবে সেটাই যে তাঁর শেষ অনুশীলন সেশন হতে চলেছে, হয়তো তখনো বুঝতে পারেননি।
এমন সময় সেখানে যান বার্সা সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা। প্রথমে লাপোর্তা ক্রীড়া পরিচালক ডেকো, এরপর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সহসভাপতি রাফায়েল ইউস্তের সঙ্গে দেখা করেন। অনুশীলন শেষে তাঁরা জাভি ও তাঁর সহকারীদের ডেকে নেন এবং জানিয়ে দেন, আগামী মৌসুম থেকে তাঁরা আর বার্সায় থাকছেন না।
আগামীকাল রাতে সেভিয়ার বিপক্ষে মৌসুমের শেষ ম্যাচটাই জাভি ও তাঁর সহকারীদের বার্সায় কোচিং স্টাফের সদস্য হিসেবে শেষ ম্যাচ হয়ে থাকবে।
বিদায়ের প্রাক্কালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেগঘন বার্তায় জাভি লিখেছেন, ‘প্রিয় বন্ধুরা, রোববার বার্সার সঙ্গে আমার যাত্রা শেষ হতে চলেছে। প্রাণের ক্লাবকে ছেড়ে যাওয়া কখনোই সহজ ব্যাপার নয়। তবে আমি খুবই গর্বিত। যে ড্রেসিংরুমকে আমি দ্বিতীয় পরিবার মনে করি, সেই ড্রেসিংরুমের প্রধান হিসেবে আড়াই বছর কাটাতে পেরেছি।’
বার্সা ছাড়লেও আজীবন ক্লাবটির ভক্ত হয়ে থাকবেন বলেও জানিয়েছেন জাভি, ‘রোববারের পর থেকে আরেকজন বার্সা-ভক্ত হিসেবে তালিকায় যুক্ত হব। খেলা অলিম্পিক স্টেডিয়ামে হোক কিংবা কয়েক মাস পর নতুন ক্যাম্প ন্যুতে হোক, আমাকে গ্যালারিতে দেখতে পাবেন।’
যেকোনো সময়, যেকোনো পরিস্থিতিতে বার্সার আবারও তাঁকে প্রয়োজন পড়লে পাশে থাকবেন, সেটিও নিশ্চিত করেছেন জাভি, ‘খেলোয়াড় বা কোচের আগে আমি একজন বার্সেলোনা-ভক্ত এবং ক্লাবের জন্য যেটা সবচেয়ে ভালো, আমি সেটাই চাই। যেকোনো পরিস্থিতিতে তারা আমাকে পাশে পাবে।’