গত রোববার হংকং একাদশের বিপক্ষে আগের ম্যাচে ইন্টার মায়ামির হয়ে লিওনেল মেসির না খেলা নিয়ে হয়েছে তোলপাড়। শেষ পর্যন্ত সংবাদ সম্মেলনে মেসিকে মেসিকে ব্যাখ্যা করতে হয়েছে, কেন তিনি সেদিন খেলেননি। আজ জাপানি ক্লাব ভিসেল কোবের বিপক্ষেও মেসি খেলবেন কি না, এ নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল।
সেই অনিশ্চয়তা দূর করে টোকিওতে স্বাগতিক দর্শকদের আনন্দে ভাসিয়ে ম্যাচের ৬০ মিনিটে মাঠে নামেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। ম্যাচের বাকি সময়ে নিজের ঝলকও দেখান। আক্রমণ তৈরির পাশাপাশি গিয়েছিলেন গোলের কাছাকাছিও। তবে শেষ পর্যন্ত মেসির কাছ থেকে গোল দেখার সৌভাগ্য হয়নি জাপান ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকদের। নির্ধারিত সময়ে গোলশূন্য থাকার পর ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে ৪-৩ গোলে জিতেছে ভিসেল কোবে। মেসি অবশ্য টাইব্রেকারে নিজে কোনো শট নেননি।
মেসিকে বেঞ্চে রেখে শুরুটা ভালোভাবেই করেছিল ইন্টার মায়ামি। প্রথম দিকে বলের দখল রেখে আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করে ফ্লোরিডার ক্লাবটি। প্রথম ১০ মিনিট বল ভিসেল কোবের অর্ধেই ছিল। এরপর ধীরে ধীরে ম্যাচে নিজেদের ছাপ রাখতে শুরু করে স্বাগতিকেরাও। ১৫ মিনিটে কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানে দুবার বল পোস্টে মারেন ইয়ুয়া ওসাকা। এর মধ্যে চোট পেয়ে ১৭ মিনিটে সের্হিও বুসকেতস মাঠ ছেড়ে গেলে মায়ামির ওপর চাপ আরও বাড়ে।
এ সময় ভিসেল কোবে চেষ্টা করে লং বলে মায়ামিকে চাপে ফেলার। গোল না পেলেও দারুণ সব আক্রমণে মায়ামিকে এলোমেলো করে দেয় জাপানি ক্লাবটি। মেসিবিহীন মায়ামির আক্রমণগুলোও এ সময় গোছানো ছিল না। ২৯ মিনিটে ডান প্রান্ত দিয়ে গোটোকু সাকাই এবং দিজু সাসাকি ওয়ান টু ওয়ান খেলে পরীক্ষা নেয় মায়ামি ডিফেন্সের।
৩৩ মিনিটে গিয়ে গোলের জন্য প্রথম শটটি নেওয়ার সুযোগ পায় মায়ামি। যদিও টেলরের সেই শট চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে। ৩৮ মিনিটে মায়ামি দারুণ এক আক্রমণ গড়লেও গোল পায়নি সেটা থেকে।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ভিসেল কোবেকে এগিয়ে দেওয়ার সুবর্ণ এক সুযোগ হাতছাড়া করেন ওসাকা। মায়ামির ভুলেই মূলত বক্সের ভেতর বল পান জেন প্যাটট্রিক। তিনি পাস দেন ফাঁকায় থাকা ওসাকাকে। কিন্তু বারের ওপর দিয়ে বল বাইরে পাঠান এ জাপানি স্ট্রাইকার। সহজ সুযোগ মিস করলেও ভিসেল কোবে প্রথমার্ধে অতিথিদের চেয়ে বেশ ভালো ফুটবল খেলেছে।
বিরতির পরও ভিসেল কোবে বলের দখল নিজেদের কাছে রাখে। আঁটসাঁট রক্ষণ দুর্গ তৈরি করে মায়ামি অবশ্য ভালোভাবেই আটকে রাখে স্বাগতিকদের। ম্যাচের ৬০ মিনিটে ফ্যাবিয়ান রুইজের পরিবর্তে মাঠে নামেন মেসি। আর্জেন্টাইন অধিনায়ক নামতেই গা ঝাড়া দিয়ে জেগে ওঠে ইন্টার মায়ামি।
শুরুতেই মেসি-সুয়ারেজ জুটি দারুণ এক আক্রমণও তৈরি করে, যদিও তা মায়ামিকে গোল এনে দিতে পারেনি। এরপর মেসিকে ঘিরে আরও কয়েকবার ভিসেল কোবের রক্ষণে হানা দেয় মায়ামি। কিন্তু গোল মিলছিল না কোনোভাবে। মেসি নামার পর স্বাগতিক ক্লাবটি প্রতি-আক্রমণ নির্ভর হয়ে পড়ে। এর মধ্যে ৭৫ মিনিটে তুলে নেওয়া হয় সুয়ারেজকে।
৭৯ মিনিটে গোলরক্ষক একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন মেসি। এরপর আর্জেন্টাইন তারকার ফিরতি শট গোললাইনের কাছাকাছি জায়গা থেকে ফিরিয়ে দেন ভিসেল কোবে ডিফেন্ডার ইউকি হোন্ডা। ম্যাচের বাকি সময়ে চেষ্টা করেও দুই দল কোনো গোল আদায় করতে পারেনি। গোলশূন্য ড্রয়েই শেষ হয় নির্ধারিত সময়ের খেলা। পরে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে শেষ পর্যন্ত ৪-৩ গোলে হেরে যায় মেসির মায়ামি।