গ্যালারির অনেক দর্শক তখনো ঠিকমতো আসনে গুছিয়ে বসতে পারেননি। ম্যাচে শুরুর বাঁশি বাজার পরপরই ঘটে গেল ঘটনাটি। জিন ক্লেয়ার–তোদিবোকে লাল কার্ড দেখালেন রেফারি। ম্যাচের বয়স তখন মাত্র ৯ সেকেন্ড।
রেফারির বাঁশির সংকেতে বল মাঠে গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নিসের রক্ষণভাগে ঢুকে পড়ে অঁজা। সতীর্থের পাস থেকে বল পেয়ে নিসের ডি–বক্সের কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন অঁজা স্ট্রাইকার আবদাল্লাহ সিমা। তাঁকে ঠেকাতে ম্যাচের ৬ সেকেন্ডে পা বাড়িয়ে ট্যাকল করেন নিসের সেন্টার–ব্যাক তোদিবো।
দূরে থাকা রেফারি দৌড়ে আসার পথেই পকেট থেকে লাল কার্ড বের করে ফেলেন। সেটি দেখাতে ফাউলের পর ৩ সেকেন্ড সময় নেন রেফারি। যার মানে ম্যাচের ৯ সেকেন্ডে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় তোদিবোকে। ২০২০–২১–এ বার্সেলোনার হয়ে ৪টি ম্যাচ খেলা তোদিবো চলতি মৌসুমে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার লাল কার্ড দেখলেন।
বার্সেলোনার সাবেক ডিফেন্ডার তোদিবোর এই লাল কার্ড দেখার পর ফুটবল বিশ্বে একটি আলোচনা শুরু হয়ে গেছে—ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগ মিলিয়ে এটাই দ্রুততম লাল কার্ড কি না! বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী ২০১০ সালের পর ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে ম্যাচের প্রথম মিনিটের মধ্যে লাল কার্ডে এটি চতুর্থ ঘটনা।
ফরাসি পত্রিকা লেকিপ একটু বাড়তি তথ্য দিতে পেরেছে। তোদিবোর লাল কার্ড দেখার প্রতিবেদনটিতে তারা ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগ ছাপিয়ে আরও বড় প্রশ্ন তুলেছে—এটাই ফুটবল ইতিহাসের দ্রুততম লাল কার্ড কি না?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে এই প্রতিবেদনে তারা আর্জেন্টিনার ফুটবলের ২০১৭ সালের একটি ঘটনার উল্লেখ করেছে।
রোজারিও সেন্ট্রালের এক ডিফেন্ডার ৯ সেকেন্ডে লাল কার্ড দেখেছিলেন। সেই সময় কেউ তথ্য দিয়েছিল—এটাই দ্রুততম লাল কার্ড দেখার রেকর্ড। এ তথ্য যাচাই করার কোনো উপায় নেই বলেও উল্লেখ করেছে লেকিপ।
২০০৬–০৭ মৌসুম থেকে লিগ আঁর পরিসংখ্যান রাখতে শুরু করে অপ্টা। এ প্রতিষ্ঠানটির হিসাব অনুযায়ী ২০০৬–০৭ মৌসুম থেকে তোদিবোর এ লাল কার্ড ফ্রেঞ্চ লিগ ‘আঁ’তে দ্রুততম। এর আগে ২০১৪ সালে লিলের বিপক্ষে তুলুজের ম্যাক্সিম স্পানো লাল কার্ড দেখেছিলেন ৩৯ সেকেন্ডের সময়।
যাঁর লাল কর্ড নিয়ে এত আলোচনা, রেকর্ড বইয়ে ঘাটাঘাটি, সেই তোদিবো অবশ্য রেফারির ওপর ক্ষুব্ধ। ম্যাচ শেষে টুইট করে রেফারিকে ধুয়ে দিয়েছেন বার্সেলোনার সাবেক ডিফেন্ডার, ‘একটি ইচ্ছেমতো সিদ্ধান্ত আমাকে হতবাক করে দিয়েছে, ম্যাচের শুরুতেই আমার দলকে অসুবিধায় ফেলেছে। মৌসুমের শুরুতেই রেফারির এমন সিদ্ধান্ত খুবই প্রশ্নবিদ্ধ, এমনকি কলঙ্কজনকও। আমি আশা করি লিগ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টির সমাধানে কিছু একটা করবে।’
অঁজার কাছে ম্যাচটি ১–০ গোলে হেরেছে তোদিবোর নিস।