জামিন পেলেও কারামুক্তিতে বিলম্ব দানি আলভেজের
জামিন পেলেও কারামুক্তিতে বিলম্ব দানি আলভেজের

আলভেজ কেন জামিনের টাকা দিতে পারছেন না

বার্সেলোনার আদালত দানি আলভেজকে জামিন দিয়েছেন গত বুধবার। কিন্তু পরের চার দিনেও কারাগার থেকে মুক্তি পাননি ব্রাজিলের এই ফুটবলার। কারণ, জামিনের শর্ত হিসেবে আদালত যে ১০ লাখ ইউরো জমা দিতে বলেছেন, সেটি আলভেজ দিতে পারছেন না।

২০০১ সাল থেকে পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু আলভেজের। খেলেছেন বার্সেলোনা, পিএসজি, জুভেন্টাসের মতো ইউরোপের বড় দলগুলোতে। ব্রাজিল জাতীয় দলেও ছিলেন ১৬ বছর। ক্লাব ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দলগত ও ব্যক্তিগত পুরস্কারে ঠাসা তাঁর ক্যারিয়ার। তবু কারামুক্ত হতে ১০ লাখ ইউরো জোগাড় করতে পারছেন না আলভেজ, বিষয়টি অনেকের কাছেই বিস্ময়কর। সাফল্যে মোড়ানো দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রচুর আয় করলেও কেন এখন এমন অবস্থা, এ নিয়ে প্রশ্ন অনেকেরই।

ধর্ষণ মামলায় সাড়ে চার বছরের দণ্ডিত আলভেজ ক্লাব ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছেন বার্সেলোনায়। স্পেনের এই শহরে তাঁর সম্পদ আছে, আছে স্প্যানিশ পাসপোর্টও। তারপরও ৪০ বছর বয়সী এই ফুটবলার অর্থসংকটে আছেন একাধিক কারণে।

আলভেজের আইনজীবী ইনেস গার্দিওলার বরাতে মুন্দো দেপোর্তিভো জানিয়েছে, স্পেনে দুটি অ্যাকাউন্ট আছে তাঁর। একটিতে কোনো টাকা নেই, আরেকটিতে আছে ৫১ হাজার ইউরো। এর মধ্যে ৫০ হাজার ইউরো সমপরিমাণ অর্থ আদালতের নির্দেশে জব্দ করা হয়েছে। যদি এই অর্থ খরচের সুযোগও দেওয়া হয়, জামিনের জন্য তা খুবই কম, বিশ ভাগের এক ভাগ মাত্র।

একই অবস্থা ব্রাজিলেও। সাবেক স্ত্রী দিনোরা সান্তানার ঘরে দুটি সন্তান আছে আলভেজের। তাঁদের যথাযথ প্রাপ্য না দেওয়ায় সেখানে আলভেজের অ্যাকাউন্ট জব্দ করে রাখা হয়েছে। সান্তানা এখন আলভেজের সঙ্গে পুরোপুরি দূরত্ব বজায় রেখেছেন। গত অক্টোবরে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, আলভেজ তাঁর জীবনে মৃত, কোনো সহযোগিতা করার প্রশ্নই আসে না।

বার্সেলোনার আদালতে দানি আলভেজ

স্পেনের আরেক সংবাদমাধ্যম এএস জানিয়েছে, আলভেজের ব্যাংক অব ব্রাজিলের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত ২০ হাজার ইউরোর দায় আছে। এ ছাড়া কর কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁর ৬ লাখ ৪৫ হাজার দেনাও আছে। সব মিলিয়ে আলভেজের কাছে জামিনের অর্থ জোগাড়ের মতো অবস্থা নেই।

এর আগে বিচারকার্যের সময় আলভেজকে আদালতের নির্দেশে অভিযোগকারীকে দেড় লাখ ইউরো দিতে হয়েছিল। সেই অর্থ ধার দিয়েছিলেন নেইমারের বাবা। অনেকে ধারণা করেছিলেন, জামিনের ক্ষেত্রেও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে নেইমারের পরিবার। তবে নেইমার সিনিয়র স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আলভেজ ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় এ বিষয়ে তিনি বা তাঁর পরিবার আর জড়াবেন না

সব মিলিয়েই বুধবার জামিন পেলেও বৃহস্পতি এবং শুক্রবারের মধ্যে জেল থেকে বের হতে পারেননি আলভেজ। শনি ও রোববার টাকা জমা দেওয়ার সুযোগ ছিল না। মুন্দো দেপোর্তিভো জানিয়েছে, আলভেজের মা ও ভাই জামিনের অর্থ জোগাড়ে ধার করছেন। সোমবার বা মঙ্গলবারের মধ্যে টাকা জমা হলে কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন আলভেজ।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে বার্সেলোনার নৈশ ক্লাবে এক নারীকে ধর্ষণের দায়ে গত মাসে সাড়ে চার বছরের জন্য দণ্ডিত হন আলভেজ। রায়ের পর আলভেজের আইনজীবী সাজা মওকুফ চেয়ে আর প্রসিকিউটর নয় বছরের সাজা চেয়ে আপিল করেছেন। আপিল নিষ্পত্তি পর্যন্ত জামিন পেয়েছেন আলভেজ। এ সময়ে তাঁকে ব্রাজিল ও স্পেনের পাসপোর্ট জমা দিয়ে বার্সেলোনাতেই অবস্থান করতে হবে। বিচার প্রভাবিত করতে পারে, এমন কিছু এবং ভূক্তভোগীর এক হাজার মিটারের মধ্যে যাওয়া নিষেধ করা হয়েছে।