প্রায় পঁচিশ মিনিট ধরে হয়েছে পেনাল্টি শুটআউট
প্রায় পঁচিশ মিনিট ধরে হয়েছে পেনাল্টি শুটআউট

৩৪ শটের টাইব্রেকারে শেষ হাসি আয়াক্সের

প্রতিবার দুই দলের একজন করে খেলোয়াড় পেনাল্টি শট নিতে যাচ্ছেন। একজন গোল করলে অপরজনও গোল করেন। একজন মিস করলে আরেকজনেরও তাই হয়।

এই করে করে চলল পেনাল্টি শটের ‘ম্যারাথন’। টানা ৩৪ শটের এই দীর্ঘ টাইব্রেকারে শেষ পর্যন্ত হেসেছে নেদারল্যান্ডসের ক্লাব আয়াক্স। লম্বা সময় লড়াইয়ের দম রেখেও হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে গ্রিসের ক্লাব পানাথিনাইকোসকে। এর মধ্যেই অবশ্য ইউরোপীয় ফুটবলে দীর্ঘ পেনাল্টি শুটের তালিকায় নাম লিখিয়ে নিয়েছে দুই দল।

আয়াক্স–পানাথিনাইকোসের ম্যাচটি ছিল ইউরোপা লিগের তৃতীয় কোয়ালিফাইং রাউন্ডের। এখানকার জয়ী দলের জায়গা হয় প্লে–অফে, সেখান থেকে টুর্নামেন্টের মূল পর্বে। গত সপ্তাহে এথেন্সে অনুষ্ঠিত প্রথম লেগের খেলায় আয়াক্স জিতেছিল ১–০ ব্যবধানে। তবে কাল রাতে আমস্টারডামে নিজেদের মাঠে একই ব্যবধানে তারা হেরে যায়। দুই লেগ মিলিয়ে ১–১ সমতা থাকায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।

আয়াক্স–পানাথিনাইকোসের ম্যাচটি ছিল ইউরোপা লিগের প্লে–অফে জায়গা করার

নিয়মানুযায়ী প্রথমে দুই দলের জন্যই বরাদ্দ ছিল পাঁচটি করে শট। এখানে পানাথিনাইকোস প্রথম শট এবং আয়াক্স পঞ্চম শট মিস করলে সমতা দাঁড়ায় ৪–৪। এরপর শুরু হয় সাডেন ডেথ। একটি করে শট, যে দল এগিয়ে থাকবে তারাই জয়ী।

কিন্তু ইয়োহান ক্রুইফ অ্যারেনায় খেলা জমে ওঠে এখানেই। পানাথিনাইকোসের খেলোয়াড় বল জালে পাঠালে আয়াক্সের খেলোয়াড়ও জালে পাঠান। পানাথিনাইকোস মিস করলে আয়াক্সও মিস করে। এভাবে ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম করে টাইব্রেকার গড়ায় ১৭তম রাউন্ড পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত পানাথিনাইকোসের টনি ভিলহেনা শট মিস করলেও আয়াক্সের হয়ে বল জালে জড়ান অ্যান্টন গায়েই। প্রায় ২৫ মিনিট স্থায়ী টাইব্রেকার বা পেনাল্টি শুটআউটে আয়াক্স ম্যাচ জেতে ১৩–১২ গোলে।

ফুটবলের তথ্য–উপাত্ত নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান অপটা বলছে, ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার ইতিহাসে এটি পেনাল্টি শুটআউটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর। এর আগে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে ইউরোপা লিগের প্রথম কোয়ালিফাইং রাউন্ডে মাল্টার ক্লাব জিরা ইউনাইনেড নর্দান আয়ারল্যান্ডের গ্লেনটোরানকে হারিয়েছিল ১৪–১৩ গোলে।

চারবারের চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী আয়াক্স গত বছর প্লে–অফ পর্বে জিতে ইউরোপা লিগের গ্রুপ পর্বে জায়গা করে, যদিও এরপর আর এগোতে পারেনি। এবার প্লে–অফে জায়গা করতে গিয়েই কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়তে হয়েছে পানাথিনাইকোসের সামনে। ৩৪ পেনাল্টি শটের ম্যাচে আয়াক্সের জয়ের নায়ক গোলকিপার রেমকো পাসভির। ৪০ বছর বয়সী এই গোলকিপার ৫টি সেভের পাশাপাশি ১টি শটে গোল আদায় করেন।

আয়াক্সের ৪০ বছর বয়সী গোলকিপার খেলেছেন দুর্দান্ত

এমন ম্যাচে জয়কে ‘অবিশ্বাস্য’ উল্লেখ করে আয়াক্স কোচ ফ্রান্সিসকো ফারিওলি বলেন, ‘এ দলটির স্পিরিট ও নিবেদন ছিল দুর্দান্ত। মূল ম্যাচই ছিল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। এরপর দীর্ঘ সময়ের পেনাল্টি শটে জেতাও খুব গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।’

ইউরোপা লিগের মূল পর্বে জায়গা করতে আয়াক্সকে এখন প্লে–অফে পোলিশ ক্লাব জাগেইলোনিয়া বায়ালিস্টোকের মুখোমুখি হতে হবে। দুই লেগের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে যথাক্রমে ২২ ও ২৯ আগস্ট।